Fri, 10 May, 2024
সোশ্যাল মিডিয়া
মোবাইল অ্যাপস
আর্কাইভ
কনভার্টার
EN
আজকের পত্রিকা
ই-পেপার
ম্যাগাজিন
ঈদ সংখ্যা ২০২৪
ঈদ সংখ্যা ২০২৩
সারাবেলা ম্যাগাজিন
টি ২০ ম্যাগাজিন
আর্কাইভ
সোশ্যাল মিডিয়া
ফেসবুক পেজ
Kalbela
Kalbela Online
Kalbela News
kalbela.com
Kalbela World
Kalbela Sports
Kalbela Entertainment
ইউটিউব চ্যানেল
Kalbela News
image/svg+xml
Kalbela World
image/svg+xml
Kalbela Entertainment
Kalbela Sports
টিকটক
Kalbela
টুইটার
Kalbela
ইনস্টাগ্রাম
Kalbela
লিঙ্কডইন
Kalbela
টেলিগ্রাম
Kalbela
লাইকি
Kalbela News
সাউন্ডক্লাউড পডকাস্ট
Kalbela News
গুগল নিউজ
Kalbela
ইমু
Kalbala
হোয়াটসঅ্যাপ
Kalbala
বাংলা কনভার্টার
পরকীয়ায় জড়িয়ে ডিভোর্স বাড়ছে পাখিদেরও
২০ মিনিট আগে
শপথ নিয়েই নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেন পুতিন
২ ঘণ্টা আগে
ছাত্রলীগ নেতাকে বেধড়ক পেটালেন চেয়ারম্যান
৩ ঘণ্টা আগে
নানা আয়োজনে গজারিয়া গণহত্যা দিবস পালিত
১২ ঘণ্টা আগে
১১ ঘণ্টা পর বিধ্বস্ত বিমান উদ্ধার
১২ ঘণ্টা আগে
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
ভিডিও
অডিও
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
মতামত
ধর্ম
আইন-আদালত
অপরাধ
রাজধানী
প্রবাস
লাইফস্টাইল
প্রযুক্তি
শিল্প-সাহিত্য
চাকরি
চট্টগ্রাম সারাবেলা
নারী-শিশু
আইন ও পরামর্শ
সোশ্যাল মিডিয়া
বিচিত্র
কর্পোরেট
নবযাত্রার ১ বছর
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক
পরিবেশ ও জলবায়ু
পিএসআই
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
রম্যবেলা
ভিডিও স্টোরি
ফটো স্টোরি
ফটোগ্যালারি
ভিডিও গ্যালারি
অডিও
| ১০ মে ২০২৪
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
মতামত
ভিডিও
অডিও
শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
সারাদেশ
বিশ্ব
খেলা
বিনোদন
শিক্ষা
বাণিজ্য
স্বাস্থ্য
মতামত
ধর্ম
আইন-আদালত
অপরাধ
রাজধানী
প্রবাস
লাইফস্টাইল
প্রযুক্তি
শিল্প-সাহিত্য
চাকরি
চট্টগ্রাম সারাবেলা
নারী-শিশু
আইন ও পরামর্শ
সোশ্যাল মিডিয়া
বিচিত্র
কর্পোরেট
নবযাত্রার ১ বছর
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক
পরিবেশ ও জলবায়ু
পিএসআই
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
রম্যবেলা
ভিডিও স্টোরি
ফটো স্টোরি
ফটোগ্যালারি
ভিডিও গ্যালারি
অডিও
অনুসন্ধান
ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে উপাচার্যকে অব্যাহতি
সনদ জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত চট্টগ্রামের বেসরকারি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের (বিওটি) বিরুদ্ধে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ, বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টারের খরচ নির্বাহ করাসহ বেশকিছু অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে সনদ জালিয়াতির ঘটনায় পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাম্মেল হক যখন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই তার বিরুদ্ধে অনিয়মের পাল্টা অভিযোগ তোলে বিওটি। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপতির ‘ভূমিকায় অবতীর্ণ’ হয়ে উপাচার্যকে সাময়িক অব্যাহতিও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে এখতিয়ারের বাইরে, এমন কাজ করায় শিগগির বিওটিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। ২০২১ সালের ১৬ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ চার বছরের জন্য অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাম্মেল হককে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। ওই বছরের ১ এপ্রিল তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সে হিসাবে উপাচার্য হিসেবে তার মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ৩১ মার্চ। গত ২৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়টির বিওটি সদস্য সচিব সরওয়ার জাহান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাম্মেল হককে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ‘গত ২০ এপ্রিলে এই সিদ্ধান্ত সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির নীতি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী ৭৭তম বোর্ড অব ট্রাস্টির সভায় সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়, যা ২১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে।’ এতে আরও বলা হয়, ‘অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বিভিন্ন অবৈধ কার্যকলাপের মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, আর্থিক অনিয়ম, অসদাচারণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়বিরোধী কোনো এক কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছিলেন। বারবার অনুরোধ করার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করার হীন উদ্দেশ্যে অবৈধ নিয়োগকৃত রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ক্রমাগত বিরতিহীনভাবে মিথ্যা অভিযোগ প্রদান, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ ও দুদকে অভিযোগ ইত্যাদির ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এজন্য একটি কারণ দর্শানোর চিঠি ইস্যু করা হয়েছে এবং জবাব প্রাপ্তির সাপেক্ষে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।’ এদিকে অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগ এনে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্যকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনায় আইন মানা হয়নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০-এর ৩১ (৯) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সুষ্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য কোনো কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সুপারিশক্রমে উপাচার্যকে অপসারণ করতে পারবেন আচার্য। তবে শর্ত থাকে যে, অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট উপাচার্যকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।’ সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা অনেকগুলো জাল সনদ বিক্রি করেছে। অধ্যাপক মোজাম্মেল হক উপাচার্য হয়ে আসার পর বিষয়টি জানতে পেরে অনলাইন পদ্ধতি বাদ দিয়ে সরাসরি প্রক্রিয়ায় আবেদন যাচাইয়ের ব্যবস্থা করেন। তখন ১০৫টি জাল সনদ ধরা পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে পদাধিকারবলে তিনি মামলার প্রস্ততি নিচ্ছিলেন। কিন্তু এ বিষয়ে মামলা হলে অনেক রাঘববোয়ালও ফেঁসে যাবেন। সে কারণে অনিয়মের মিথ্যা অভিযোগ এনে উপাচার্যকে সাময়িক অব্যাহতির ঘোষণা দেওয়া হয়। সূত্র আরও জানায়, সাউদার্নের বিওটি নিয়ম ভেঙে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ৫ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় ‘চিটাগং ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব’ নামে একটি কোচিং সেন্টার চালানো হচ্ছে। সেখানে এরই মধ্যে ৫০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিষয়গুলো ইউজিসির মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করা হয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাম্মেল হকের দাবি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম ও অর্থ কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় নিয়ম ভেঙে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী বিওটি আমাকে অব্যাহতি দিতে পারে না। আচার্যের (রাষ্ট্রপতি) কাছে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকার বিষয়টি আইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। সে সুযোগও আমি পাইনি। এ বিষয়ে জানতে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সচিব সরওয়ার জাহানের মোবাইল ফোনে দুদিন ধরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি কোনো সাড়া দেননি। ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ওমর ফারুখ কালবেলাকে বলেন, আইন অনুযায়ী বোর্ড অব ট্রাস্টিজ রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত কোনো উপাচার্যকে অব্যাহতি দিতে পারে না। আমরা বিষয়টি নিয়ে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির বিওটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেব।
০৪ মে, ২০২৪
খাল পুনর্খনন কাজে অনিয়মের অভিযোগ
নওগাঁর নিয়ামতপুরে গাহইল খাল পুনর্খননের কাজ শুরু হয়েছে। এ খাল খননের কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, খাল পুনর্খননের নামে নালা বানানো হচ্ছে। ভেকু মেশিন দিয়ে যেভাবে খাল খনন করা হচ্ছে, তা কোনো উপকারে আসবে না। একটু বৃষ্টি হলেই খাল পাড়ের মাটি এসে ভরাট হয়ে যাবে। তবে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বলছে, নিয়ম মেনেই খননের কাজ হচ্ছে। কাজে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গাহইল খাল খননের ব্যয় ধরা হয় ৮২ লাখ ৬৪ হাজার ১৯১ টাকা। খালের ৫ দশমিক ৪ কিলোমিটার পুনঃখনন করার কাজ পায় নিয়ামতপুর গাহইল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি। যেখানে চারটি আরসিসি রেফারেন্স লাইন সেকশন নির্মাণ, দুটি উপপ্রকল্পের চিহ্নিতকরণ সাইনবোর্ড ও দুটি উপপ্রকল্প এলাকা নির্দেশনা থাকবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শিডিউল অনুযায়ী খালটি খনন করা হচ্ছে না। ফলে খালটি পুনর্খননের নামে নালা বানানো হচ্ছে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে গাহইল খাল পুনর্খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা কোনো কাজে আসবে না। ভেকু মেশিন দিয়ে খালের তলা থেকে মাটি তুলে খালের পাড়েই রাখা হচ্ছে। এ মাটি বৃষ্টি হলেই ধসে পুনরায় ভরাট হয়ে যাবে নালাটি। এ খাল খননে বরাদ্দকৃত টাকা কোনো কাজে আসবে না। নালার মতো করে খনন করায় খালের পানি দিয়ে অর্ধেক জমিতেও সেচ দেওয়া যাবে না। খালের প্রস্থ হওয়ার কথা ছিল ১০ ফুট। সেখানে করা হচ্ছে মাত্র ৭/৮ ফুট। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিয়ামতপুর গাহইল পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি শাহজাহান আলী বলেন, সব কিছু তদারকি করছে নিয়ামতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ও জেলা প্রকৌশলী। তাদের কথামতো আমরা কাজ করছি। ভেকু মেশিন ব্যবহারের বিষয়ে আমার জানা নেই। গভীরতার বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ সত্য নয়। ভেকু মেশিনের মালিক রাজু বলেন, আরে ভাই এই বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাইয়েন না। কাজ আনতে অনেক টাকা লাগে। প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে সমিতির সভাপতির এ কাজ আনতে। অফিসের লোকদের তেল খরচসহ বিভিন্ন খরচ দিতে হয়। এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন বলেন, কাজের ৭৫ শতাংশ মেশিন দিয়ে এবং ২৫ শতাংশ শ্রমিক দিয়ে বাস্তবায়িত হবে। আর খননের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু নাই। কোথাও দুই ফুট, কোথাও তিন ফুট আবার কোথাও ছয় ফুট খনন করা লাগতে পারে। নিয়ামতপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এ মুহূর্তে যতটুকু জানি, কাজ চলমান রয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনেই খাল খননের কাজ হচ্ছে। খাল খনন কাজে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।
০১ মে, ২০২৪
মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গরু ও জাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
বরগুনার বামনা উপজেলায় নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য গরুর বকনা বাছুর ও মাছ ধরার জাল বিতরণে উপজেলা মৎস কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন সুফলভোগী জেলেরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই কর্মকর্তা। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বরগুনার বামনা উপজেলায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় ধাপে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে ১৬ জন দরিদ্র জেলেদের মাঝে বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে প্রতিটি ৩০ হাজার টাকা দামের মোট ১৬টি বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়। দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৮টি প্রুপে (প্রতি গ্রুপে ৫ জন করে) মোট ৪০ জন দরিদ্র জেলেদের প্রতি গ্রুপকে ৬০ হাজার টাকার ছন্দি জাল বিতরণ করা হয়। যাতে করে জেলেরা অবৈধ কারেন্টজাল ব্যবহার না করে তাই সরকারিভাবে এই সুতার জাল বিতরণের মাধ্যমে জেলেদের বৈধ পন্থায় মাছ শিকারে উৎসাহিত করা হয়। আমারে দেলহে গ্যাদা একটা বাছুর, হ্যার ঠ্যাং ভাঙ্গা। হ্যাঁ বাছান যাইবে না, আমি হ্যাঁ আনি নায়। যেয়ারে বলছে আমনেরে পরে একটা কিন্না দিমু আনে, আমনে এ্যাতো বারাবারি করলেন ক্যা? মৎস্য অফিসের এ্যাক স্টাফ কয়, দিমু না তোমারে গরু, য্যা হরতে পারো হইরো যাইয়া! গরুর বকনা বাছুর না পেয়ে কালবেলাকে কথাগুলো বলছিলেন দরিদ্র জেলে তালিকায় নাম থাকা বামনা সদর ইউনিয়নের পূর্ব সফিপুর গ্রামের ছয়জদ্দিন ফকিরের ছেলে আবদুল ছত্তার ওরফে শাহজাহান। যদিও পরে সুস্থ সবল বকনা বাছুর দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা। আবদুল সত্তার কালবেলাকে আরও বলেন, গরুর এ বকনা বাছুর পেতে প্রত্যেক সুফলভোগীদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প ক্রয় বাবদ পাঁচশত টাকা করে নিয়েছেন উপজেলা মৎস কর্মকর্তার কার্যালয়ের এক কর্মচারী। তবে তারা নাম বলতে পারেননি ওই কর্মচারীর। তাছাড়া মরাধরা (শুকনো ও ছোট) গরু দিয়েছেন সুফলভোগীদের। এই গুলাই কি সরকার আমাদের সাহায্য দিয়েছেন? গরুর দাম ও আকার সম্পর্কে জানতে চাইলে শাহজাহান বলেন, প্রতিটি গরুর দাম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে হবে। নামমাত্র গরু দেওয়া হয়েছে। ওই একই ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের জিতেন দাসের ছেলে জেলে সুভাস দাস কালবেলাকে বলেন, স্ট্যাম্প ক্রয়বাবদ আমাদের কাছ থেকে পাঁচশ টাকা করে নিয়েছে। সেই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে আমাদের গরু নিয়ে আসতে হয়েছে। লোকমুখে শুনেছি সরকার থেকে আমাদের ২৬ হাজার টাকা বাজেট ছিল। আমার এই গরুর দাম ২৬ হাজার টাকা নেই। আমাকে যে গরু দেওয়া হয়েছে তার দাম সর্বোচ্চ ১২-১৩ টাকা আছে। বিতরণকৃত ১৬টি গরুর মধ্যে দুগ্ধপোষ্য ছোট গরুও ৫ থেকে ৭টি ছিল। সেগুলোও সুফলভোগীরা নিয়ে গেছে। একই গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাড়ির রাখাল কালবেলাকে বলেন- ফ্লইড, পইন ও টাকাসহ যে মালামাল পেয়েছি তার দাম ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা হবে। সদর ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামের হাকিম ফরাজীর ছেলে জেলে আব্দুল রহিম ফরাজী কালবেলাকে বলেন, আমার গরুটির দাম বিশ হাজার টাকা হবে। এর চেয়ে ছোট গরু দেওয়া হয়েছে। আমার কাছ থেকেও স্ট্যাম্প ক্রয়বাবদ পাঁচশত টাকা নেওয়া হয়েছে। গরুর দাম জানতে চাইলে বামনা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা কালবেলাকে বলেন, ত্রিশ হাজার টাকা থাকবে না তো। এখানে ভ্যাট, আইটি যাবে, ওডিটের কিছু খরচ থাকে জানেন তো আপনারা যারা করেন। তাছাড়া বাজারে ১টি গরু কিনতে গেলে শতকরা ৩-৫ টাকা ট্যাক্স দিতে হয়। প্রতিটি সাতাশ হাজার টাকায় গরু কেনা হয়েছে। ওখানে তো কিছু ড্যামারেজ দিতেই হবে। গরু তো সব একই মায়ের পেটে হয় নাই। দেখা যায় বিভিন্ন জায়গা থেকে কিনতে হয়। মোটামুটি একটা গড়ে কিনতে হয়। তবে গরুর দাম কমের অভিযোগটি অস্বীকার করে তিনি বলেন, বর্তমানে গরুর দাম অনেক বেশি। এটি তারা সঠিক অভিযোগ করেনি। প্রথমে তিনি ১৬ জন সুফলভোগীকে গরু বিতরণের কথা বললেও পরবর্তীতে অসুস্থ গরুর কথা স্বীকার করে ১৫ জন সুফল ভোগীকে গরু দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে ওই একজনকে গরু দেওয়ার কথা বলেন। তবে স্ট্যাম্প ক্রয়বাবদ পাঁচশত টাকা করে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি। জালের মূল্যের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভ্যাট ট্যাক্স বাবদ সাড়ে ১০% বাদ দিয়ে বাকিটা তারা পাবেন। তাতে সর্বসাকুল্যে ৫০ হাজার টাকার মতো জাল পাবে প্রতিটি গ্রুপ। জালের মূল্যের অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ওরা ব্যবহার করে কারেন্ট জাল, ওরা কারেন্ট জাল পাইলে খুশি। একটা সুতার জালের প্রায় ৬০ কেজি ওজন, সেটার দাম ১৫ হাজার টাকা হলে সেটা অবাস্তব। এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিম্বজিৎ কুমার দেবের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে বিতরণ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিতরণ কমিটির সভাপতি আল ইমরান কালবেলাকে বলেন, গরু ক্রয়ের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছিল। বর্তমানে গরুর দাম একটু বেশি। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গরুগুলো ক্রয় করেছেন। তবে অভিযোগের বিষয় সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০৩ এপ্রিল, ২০২৪
দৌলতদিয়ায় ফেরি পারাপারে অনিয়মের অভিযোগ
রাজবাড়ীতে বিআইডব্লিউটিসির বিরুদ্ধে দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের নিকট থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) আসন্ন ঈদে যাত্রীসাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান এ অভিযোগ করেন। আব্দুর রহমান বলেন, দৌলতদিয়া ঘাট একসময় চাঁদাবাজিদের আখড়া ছিল। আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া পর সেটা কমে এসেছে। তবে বিআইডব্লিউটিসির ছত্রছায়ায় এখনো চাঁদাবাজি চলমান আছে। একটি গাড়ি পারাপারের ফেরির ভাড়া যদি হয় ১ হাজার ৫০০ টাকা, বিআইডব্লিউটিসি কমপক্ষে ১০০ টাকা বেশি নেয়। প্রতিদিন ১০০টি গাড়ি পার হলে ১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত হয়। আর যদি প্রতিদিন ১ হাজার গাড়ি পার হয় তাহলে ১ লাখ টাকা হয়। এভাবেই প্রতিদিন দৌলতদিয়া ঘাটে বিআইডব্লিউটিসি চাঁদাবাজি করে আসছে। তিনি আরও বলেন, ওখানে দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যের মাধ্যমে টাকাটা নেওয়া হয়। দিন শেষে হিসাব করে সব টাকা ক্যাশিয়ারের কাছে জমা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে আমি অনেকবার বলেছি। তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। তিনি এই চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদা খাতুনের সঞ্চলানায় আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো. ইফতেখারুজ্জামান, গোয়ালন্দ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, গোয়ালন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস, দৌলতদিয়া বিআইডব্লিউটিএর ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান, বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদুর রহমান। রাজবাড়ী বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেন, বর্তমানে ছোটবড় মোট ১৩টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদ উপলক্ষে আরও দুটি ফেরি বাড়ানো হবে। ঘাট এলাকায় চাঁদাবাজির সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএর কোনো কর্মচারী জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি চাঁদাবাজি বন্ধে সকলের সকলের সহযোগিতা চান। সভায় আসন্ন ঈদে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারেন এবং ঈদের ছুটি শেষে মানুষ যাতে নিরাপদে কর্মস্থলে ফিরতে পারেন সেজন্য প্রশাসন কিছু কর্মপরিকল্পনা করেছে। ইদের আগে ৫ দিন ও ইদের পরে ৫ দিন দৌলতদিয়া যাত্রীবাহী নৌযানে সকল প্রকার মালামাল বহন বন্ধ থাকবে।এ ছাড়া ইদের আগের তিন দিন ও পরের ৩ দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় ও পঁচনশীল পণ্য ব্যতীত সকল প্রকার মালবাহী ট্রাক ফেরি পারাপার বন্ধ থাকবে। ৬ এপ্রিল হতে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত নদীতে সকল ধরনের বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। সাধারণ মানুষের বাসের ভাড়া নিয়ে বিভ্রান্তি এড়াতে প্রতিটি বাসের টিকিট কাউন্টারের সামনে বাসের ভাড়ার তালিকা টানিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২৯ মার্চ, ২০২৪
সাতক্ষীরার মরিচ্চাপ নদী পুনঃখননে অনিয়মের অভিযোগ
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় ভৌগোলিকভাবে অবস্থান দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মরিচ্চাপ নদীর। এক সময়ের খরস্রোতা নদীটি কালের গর্বে হারিয়ে ফেলেছে তার যৌবন। পলি পড়ে ভরাট হতে হতে প্রাণহীন হয়ে গেছে। নদী ভরাটের কারণে এলাকাজুড়ে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে গত বছর থেকে সরকারি অর্থায়নে শুরু হয়েছে নদী পুনঃখননের কাজ। কিন্তু এ খননে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুনঃখননের ফলে নদীটি তার রূপ বদলে খালে রূপান্তরিত হচ্ছে। সে কারণেই স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি, এভাবে খনন করা হলে কোটি কোটি টাকার সরকারি অর্থ ব্যয় হবে। কিন্তু জনসাধারণ কোনো সুফল ভোগ করতে পারবে না। অপরদিকে গত বছর খননকাজ চলমান থাকায় উপজেলার অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছিল। সে কারণে ওই এলাকাগুলো ছিল অনাবাদি। চলতি বছর মে মাসে কাজ শেষ করে নদী উন্মুক্ত করা না হলে আবারও পূর্বের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে দাবি স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধির। স্থানীয় গোয়ালডাঙ্গা গ্রাম ও মরিচ্চাপ নদী পাড়ের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম, আজিজুল ইসলাম ও আব্দুল হান্নান গাজীসহ একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, মূল নদীর ৭৫ শতাংশ বাদ দিয়ে খনন করা হচ্ছে। তাছাড়া কোথাও কোথাও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ইচ্ছামতো খনন করছে এমন অভিযোগ করে তারা আরও বলেন, নদীর মাঝ বরাবর বাদ দিয়ে স্থানীয়দের বাড়িঘর ও কবরস্থান ভেঙে দিয়ে খনন করা হচ্ছে। সে কারণে তারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় আশাশুনি উপজেলা চেয়ারম্যান পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম মোস্তাকিম বলেন, পাড় বাদে নদীর মূল অংশ ২০০ ফিট হবে। কোথাও কম হলে তা মেনে নেওয়া হবে না। আমার কাছে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। কোনো ধরনের অভিযোগ পেলে অবশ্যই সরেজমিনে গিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের এক ইঞ্চি জমি যাতে অনাবাদি না থাকে সে কারণে নদী খননের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন। এ বরাদ্দকৃত টাকার কোনো কাজ নিয়ে নয়-ছয় করার কোনোপ্রকার অপচেষ্টা মেনে নেওয়া হবে না। আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসিম বরন চক্রবর্তী বলেন, মরিচ্চাপ নদী পুনঃখননে ডিজাইন করার সময় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সুশীল সমাজকে বাদ রাখা হয়। ফলে নদীটিতে এখন নানা অনিয়ম ও ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। সিএস রেকর্ড অনুযায়ী নদীটি যে প্রস্থ ছিল খনন কাজে তার অধিকাংশ বাদ দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এক সময়ের খরস্রোতা মরিচ্চাপ নদীতে বড় লঞ্চ ও স্টিমার চলত। তবে নদীটি পুনঃখননে অন্তত সিএস অনুযায়ী ৫০ শতাংশ প্রস্থ করে খনন করা হতো তাহলে অনেক উপকারে আসত। তিনি আরও বলেন, মে মাসে সাধারণত আমাদের দক্ষিণাঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয় সে কারণে সে সময়ের আগেই খনন কাজ শেষ করতে হবে। গত বছর নদী পুনঃখননের কাজ চলমান থাকায় বড়দল ও খাজরা ইউনিয়নে প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমিতে আবাদ করা সম্ভব হয়নি। সে কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই খনন কাজ শেষ করার তাগিদ দেন তিনি। নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতা অধ্যক্ষ আশেক ই-এলাহী বলেন, শুধু মরিচ্চাপ নদীই নয়, আদি যমুনা ও বেতনা নদীসহ জেলার সকল নদী ও খাল পুনঃখননে অনিয়ম করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে সাতক্ষীরার নদী ও খাল পুনঃখনন করছে তা পূরণ হবে না। কেবল কোটি কোটি টাকা নষ্ট হবে। কিন্তু জনগণের কোনো কাজে আসবে না। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলা সদর দিয়ে বয়ে যাওয়া মরিচ্চাপ নদীর মধ্যচাপড়ার খোলপেটুয়া নদীর সংযোগ থেকে শুরু হয়ে উপজেলার তেতুলিয়া বেতনা নদী সংযোগ পর্যন্ত ৫ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পুনঃখননের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ৬৪টি জেলার অভ্যন্তরীণ ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের অধীনে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এর কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। টেন্ডার অনুযায়ী প্রকল্পটির কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালী জেলার এমএ জেভি। যার কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর। ওই কার্যাদেশ অনুযায়ী চলতি বছরের ২০ জুনে শেষ করার কথা। পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে আরও জানা গেছে, সিএস রেকর্ড অনুযায়ী আশাশুনির মরিচ্চাপ নদী ৬০০ ফুট কোথাও ৫৫০ ফুট প্রস্থ ছিল। কিন্তু প্রকল্পটির ডিজাইন অনুযায়ী মরিচ্চাপ নদী পুনঃখনন করা হচ্ছে ৯০ থেকে ১৮০ ফুট। যা গড়ে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশই বাদ দিয়ে পুনঃখনন হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এ জেভি’র স্বত্বাধিকারী মো. অলিউল্লাহ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজাইন অনুযায়ী মরিচ্চাপ নদী পুনঃখনন করা হচ্ছে। এখানে ঠিকাদাদের কিছুই করার নেই। এলাকার লোকজন পক্ষে-বিপক্ষে অভিযোগ বা কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। তবে নদীটি খনন কাজে কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ শতাংশ খনন সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী জুনেই কাজ শেষ হবে। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুর রহমান বলেন, মরিচ্চাপ নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে যে পরিমাণ পুনঃখনন করা দরকার সে অনুযায়ী প্রকল্পের ডিজাইন করা হয়েছে। তবে সিএস রেকর্ড অনুযায়ী নদীটির প্রস্থ কোথাও ৬০০ ফুট বা কোথাও ৫৫০ ফুট ছিল। একটি নদী পুনঃখনন করে পূর্বের স্থানে ফিরে আনা যায় না। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে খনন কাজ সঠিক সময়ে সিডিউল অনুযায়ী বুঝে দিতে হবে বলে জানান তিনি। কোথাও কোথাও নদী খননের সিডিউল অনুসর করা হচ্ছে না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করছেন এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নুর জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিডিউল ও ডিজাইন অনুযায়ী মরিচ্চাপ নদী পুনঃখনন করতে হবে। কোথাও কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থ নেওয়া হবে। তবে এখনো পর্যন্ত তার কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি বলে জানান।
২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার নগরকান্দা-জয়বাংলা সড়কের নগরকান্দা পৌর এলাকার মধ্যজগদিয়া এলাকায় একটি নতুন আরসিসি ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ব্রিজ ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করছেন ভাই ভাই কনস্ট্রাকশনের ঠিকাদার আবুল বাশার। অভিযোগ পাওয়া গেছে ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণে বালুর পরিবর্তে ভেকু মেশিন দিয়ে ব্রিজের নিচের কাদামাটি দিয়ে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। সড়ক নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইটের খোয়া। স্থানীয়রা উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালে তারাও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানান, নগরকান্দা-জয়বাংলা সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ইজিবাইকসহ শতশত যানবাহন চলাচল করে। এই সড়কে নিম্নমানের ব্রিজ ও পাকা সড়ক নির্মাণ করা হলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই মানুষের জান মালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নির্মাণকাজের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করা উচিত। এ ছাড়া, যারা এই ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি নিয়মিত এই সড়কপথে চলাচল করার সময় দেখেছি ঠিকাদার ব্রিজের নিচ থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো সমাধান পাচ্ছি না। যা খুবই দুঃখজনক। নগরকান্দা উপজেলা প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন বলেন, ঠিকাদার কাদামাটি দিয়ে ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছে। এ ছাড়া নির্মাণকাজের জন্য সেখানে নিম্নমানের ইটের খোয়া আনা হয়েছে। আমি বিষয়টি জানার পর ঠিকাদারের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। ঠিকাদার জানিয়েছে, তিনি নিম্নমানের ইটের খোয়া এবং মাটি সরিয়ে নিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে ঠিকাদার আবুল বাশার বলেন, ব্রিজের সংযোগ সড়কের মাটি সরিয়ে বালু দেওয়া হবে এবং নিম্নমানের ইটের খোয়া সরিয়ে নেওয়া হবে।
২৮ নভেম্বর, ২০২৩
লালমনিরহাটে আলু সংরক্ষণ ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
লালমনিরহাটে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আলু সংরক্ষণের ঘর নির্মাণে অভিযোগ উঠেছে। ঘর পূর্ণাঙ্গ নির্মাণ না করেই উত্তোলন করা হয়েছে প্রকল্পের পুরো টাকা। এ ছাড়া ঘরগুলো নিম্নমানের হওয়ায় আলু রাখতে পারছেন না কৃষকরা। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ঘরের বেড়া ও বাঁশের খুঁটি। ভেঙে গেছে পাকা সিঁড়ি আর পিলার। জানা গেছে, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের অধীনে আলুর বহুমুখী ব্যবহার উন্নয়ন সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ৬টি ও আদিতমারী উপজেলায় ৭টি আলু সংরক্ষণের ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। একটি ঘরে ৩০ জন কৃষক আলু সংরক্ষণ করতে পারবে। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তুশী এন্টারপ্রাইজ কিছু স্থানে ঘর এখনো নির্মাণ না করায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। এমনকি কিছু ঘর পূর্ণাঙ্গ নির্মাণ না করেই উত্তোলন করা হয়েছে প্রকল্পের পুরো টাকা। কৃষকদের অভিযোগ, ঘরগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। ফলে আলু রাখার আগেই নষ্ট হয়ে গেছে ঘরের বেড়া ও বাঁশের খুঁটি। ভেঙে গেছে পাকা সিঁড়ি ও পিলার। কৃষক হায়দার আলী জানান, ঘর নির্মাণে কত টাকা বরাদ্দ। দেখভালের দায়িত্বে কে আছেন, আমরা কিছুই জানি না। এমনকি সরকারি কোনো কর্মকর্তারা এখানে ঘরের কাজগুলো দেখতে আসেননি। ঘর নিম্নমাণ হলেও কাউকে বলার বা অভিযোগের কোনো সুযোগ নেই। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তুশী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শফি উদ্দিন বলেন, ঘরগুলোর যেসব অংশ ত্রুটি বা ফাটল বলা হচ্ছে। সেটা আমরা কৃষকদের একটু মেরামত করে নিতে বলেছি। সিমেন্ট আর বালু দিলেই ঠিক হয়ে যাবে। মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাট জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, এ ঘরগুলো নির্মাণের সময় বৃষ্টি বাদলের দিন থাকায় কাজে কিছুটা ত্রুটি হয়েছে। আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণন উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আনোয়ারুল হক বলেন, ঘরগুলো নির্মাণের পর যেসব অংশ ভেঙে গেছে তা মেরামত করে দেবেন ঠিকাদার। এতে কোনো অসুবিধা নেই। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, ঘরগুলো পরিদর্শন করে নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
২১ নভেম্বর, ২০২৩
অনিয়মের অভিযোগ : দুটি আসনের উপনির্বাচনের ফল ও গেজেট স্থগিত
অনিয়মের অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনের গেজেট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। তদন্তসাপেক্ষে ফল প্রকাশ করা হবে। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, সোমবার (৬ নভেম্বর) রাতে লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারার যে ভিডিও প্রকাশের বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। উপনির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক। একই সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বর্তমান নির্বাচন কমিশন দিয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। আসনটিতে উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা কলার ছড়ি প্রতীকে পান ৩৭ হাজার ৫৫৭ ভোট। অন্যদিকে, লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনেও অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেন জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টির প্রার্থী। ভোটের দিন দুপুরে দুই প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এছাড়া আসনটিতে ভোটগ্রহণ চলাকালে একটি কেন্দ্রে ‘জাল ভোটের ভিডিও’ ছড়িয়ে পড়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেখানকার একটি ভোটকেন্দ্রে একজনকে একাধিক ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সিল মারতে দেখা যায়। গতকাল সোমবার সেই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর সুষ্ঠু ভোট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর একই দিনে মারা যান ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়া ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল। তাদের মৃত্যুতে গত ৪ অক্টোবর আসন দুটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
০৭ নভেম্বর, ২০২৩
টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ
ঢাকার ধামরাইয়ে টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বেতন না দেওয়া ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও প্রত্যায়নপত্রের জন্য নির্ধারিত ফিরও বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ১৬ শিক্ষক। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নিয়ম অনুযায়ী প্রভিডেন্ট ফান্ডের নামে শিক্ষকদের বেতন থেকে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে কেটে নেওয়া হতো। এভাবে ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত অর্থ কেটে রাখা হয়। এর মধ্যে চাকরি ছেড়ে যাওয়া কয়েকজনের আংশিক প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা পরিশোধ করা হলেও বেশিরভাগ শিক্ষকই এই টাকা পাননি। এ ছাড়া ২০২০ সালের মার্চ মাসের বেতনও পাননি তারা। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার বলা হলেও অর্থ পরিশোধ না করায় তারা ইউএনওর কাছে অভিযোগ দেন। প্রায় ১০ বছর ধরে টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গণিত বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন আয়নাল হক। তার দুই সন্তানকেও পড়িয়েছেন একই প্রতিষ্ঠানে। তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা নেওয়ার নিয়ম চালু হয়। এরপর টানা ২০২০ সাল পর্যন্ত টাকা কেটে রেখেছেন তারা। কয়েকজনকে সেই সময় একাংশ টাকা দেয়। পরে আমি ২০২৩ সালের জুনে নিয়ম মেনে চাকরি ছেড়ে দেই। এরপর তাদের কাছে বারবার টাকা চাইলেও টাকা দেননি তারা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সাবেক সহকারী শাখা প্রধান মমতাজ বেগম বলেন, আমি ৮ বছর সেখানে শিক্ষকতা করেছি। ওই সময় ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টাকা কেটে রেখেছে। কিন্তু আমার ২০২০ সালের মার্চ মাসের বেতন ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ পরিশোধ করেননি তারা। এদিকে টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা হয়। প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন তারা। তবে এটির বর্তমান প্রধানের দাবি, অভিযোগকারী কয়েক শিক্ষকের কাছে কয়েক লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। যদিও সাবেক শাখা প্রধান জানান, শিক্ষকের সন্তানদের কাছ থেকে অর্ধেক বেতন নেওয়া হতো। তারা পুরো টাকা পরিশোধ করেছেন। তবে বর্তমানে তিনি দায়িত্বে না থাকায় ফান্ডের অর্থ পরিশোধের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি। টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ধামরাই শাখা প্রধান মহিদুল ইসলাম জানান আট মাস ধরে এখানে দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তার দাবি, অভিযোগকারী শিক্ষকদের মধ্যে কয়েকজনের সন্তান এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়েছেন৷ তাদের একেকজনের কাছে অর্থ পাওনা রয়েছে। এর মধ্যে আয়নাল হকের দুই সন্তানের কাছে ২,৪৬,৭০০ টাকা, মমতাজ বেগমের দুই সন্তানের পড়াশোনা বাবদ ৩,২৩,৬০০ টাকাসহ কয়েকজনের কাছে কয়েক লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী টাকা কেটে রাখা হয়েছে। তবে তাদের কাছে সন্তান পড়ানো বাবদ টাকা পাওনা ছিল। তারা কখনো আমাদের কাছে আসেননি। যেহেতু তারা বাইরে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি আইনগতভাবেই মোকাবিলা করা হবে। আর পাওনা থাকলে সেটি দেওয়া হবে। মানসুরা আক্তার নামে এক শিক্ষক জানান, তার মেয়ে পড়ানো বাবদ বকেয়া টাকা তার আগের মাসের বেতন থেকে কেটে রাখা হয়। একইভাবে আয়নাল হক, মমতাজ বেগমসহ কয়েকজনও জানান প্রতিমাসে বেতন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নগদ অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এটির দায়িত্বে থাকা সোহরাওয়ার্দী হোসেন। তিনি বলেন, শিক্ষকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের সন্তানদের ফির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষকরা নগদ অর্থে সেই টাকা পরিশোধ করেছেন। তবে আমি চলে আসার পরে কারো টাকা বকেয়া আছে কি না সেটি জানা নেই। আর আমি দায়িত্বে নেই। ফলে বিস্তারিত বলতে পারছি না। টাঙ্গাইল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান মাসুদ রানা বলেন, অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। উপজেলা থেকে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে সরাসরি কথা বলে মোকাবিলা করা হবে। ধামরাই ইউএনও হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি বলেন, স্থানীয়ভাবে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে। সমাধান না হলে আইনত যে ব্যবস্থা তা নেওয়া হবে।
০২ অক্টোবর, ২০২৩
কুবি ভিসির গাড়ি ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈনের বিরুদ্ধে গাড়ি ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদিত অর্থের বেশি খরচ, নির্দেশনা ভঙ্গ করে প্রায় সাড়ে ৬ বছরের মাথায় নতুন গাড়ি ক্রয়, সরকারের অকেজো ঘোষণাকরণ নীতিমালা অমান্যসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে উপাচার্য এবং উপউপাচার্যের জন্য নতুন গাড়ি ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু উপউপাচার্যের জন্য গাড়ি ক্রয় করা হয়নি। এমনকি পুরাতন গাড়িটি অকেজো ঘোষণা কিংবা নতুন গাড়ির বরাদ্দ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মঞ্জুরি কমিশনের কোনো অনুমোদন নেননি উপাচার্য। জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্যের জন্য নিয়োগের পর কোনো গাড়ি ক্রয় করা হয়নি। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালকের একটি গাড়ি ব্যবহার করেন। যেটির মডেল মিতসুবিসি আউটলেন্ডার। গাড়ি ক্রয়ের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির বলেন, উপাচার্য এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি মন্তব্য করতে চাই না। জানা যায়, গত ৭ জুন মঞ্জুরি কমিশনের সচিব বরাবর দুটি মিতসুবিসি পাজেরো স্পোর্টস ছঢ/ সমমান জিপ নতুন ভার্সনের গাড়ি ক্রয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত পত্রে অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দ হতে কয়েকটি শর্তসাপেক্ষে উপাচার্য এবং উপউপাচার্যের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহারের জন্য দুটি জিপ গাড়ি ক্রয়ের অনুমোদন দেয়। তবে দুটি গাড়ির অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হলেও প্রকৃতপক্ষে শুধু উপাচার্যের জন্য বরাদ্দের চেয়ে বেশি অর্থ খরচ করে একটি গাড়ি ক্রয় করা হয়। যদিও চলতি বছরেই উপাচার্যের পুরাতন গাড়িটির মেরামতে প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। ফলে উপাচার্য একইসাথে নতুন এবং পুরাতন দুটি গাড়িই ব্যবহার করছেন। যদিও গাড়ি ক্রয়ে কমিশনের অনুমোদনের শর্তগুলো ছিল বরাদ্দকৃত অর্থের বেশি ব্যয় করা যাবে না, সরকারি ক্রয় নীতিমালা অনুসরণ করে গাড়ি ক্রয় করতে হবে, সরকারের অকেজো ঘোষণাকরণ নীতিমালা অনুসরণ করে পুরাতন গাড়িটি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) অকেজো ঘোষণা করতে হবে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ক্রয়কৃত গাড়ি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবে নতুন গাড়ি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ইউজিসির অনুমোদনপত্রে সরকারের অকেজো ঘোষণাকরণ নীতিমালা অনুসরণ করে পুরাতন গাড়িটি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) অকেজো ঘোষণা করার কথা বলা হলেও মানা হয়নি সেই নির্দেশনাও। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। এদিকে মঞ্জুরি কমিশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. রেজাউল করিম হাওলাদার জানান, উপাচার্য গাড়ি কিনেছেন এ বিষয়টি আমরা জানি না। আমাদের নথিতে নেই। আমার জানামতে গাড়ি ক্রয়ে বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গাড়ির সংকট রয়েছে। বিষয়টি আমার জানা নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে সেবা দেই। উপাচার্য আমাদের নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি যেভাবে বলবেন আমাদের সেভাবেই কাজ করতে হবে। গাড়ি ক্রয়ের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপাচার্য কৃচ্ছ্রসাধনের কথা বলে বৃহস্পতিবারে শিক্ষার্থীদের বাস বন্ধ করে দিয়েছেন। অথচ নিজে দুটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। গাড়ি ক্রয়ের নির্দেশনা হচ্ছে সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে পুরাতন গাড়ি অকেজো ঘোষণা করে নতুন গাড়ি ক্রয় করবেন। সেটিও অমান্য করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যই যদি তিনি নিয়মের ব্যত্যয় করেন, তাহলে অন্য যারা আছেন তাদের অবস্থাটা কী হবে! বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমি প্রত্যাশা করি উপাচার্য সব বিষয়ে সরকারি ও ইউজিসির নির্দেশনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মেনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবেন। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে মঞ্জুরি কমিশনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান জানান, পুরাতন গাড়ি অকেজো ঘোষণা করেই নতুন গাড়ি কিনতে হবে। একইভাবে ৯৪ লাখ টাকা বরাদ্দ হলে এর ভেতরেই গাড়ি ক্রয় করতে হবে। বেশি খরচ করা যাবে না। এক্ষেত্রে আমরা অনুমোদন পত্রে শর্তগুলো উল্লেখ করেছি। শর্ত না মানা হলে পরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা নেব। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর জানান, গাড়ি ব্যবহারের অনুপযোগী হলে সেক্ষেত্রে অকেজো ঘোষণা করে নতুন গাড়ি ক্রয় করতে হয়। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সেটি অনুসরণ করতে হয়। আর কেউ যদি বরাদ্দের বেশি অর্থ খরচ করেন তাহলে সেটি অডিট আপত্তিতে পড়ে যাবে। জানা যায়, দুটি গাড়ি ক্রয়ে বরাদ্দ ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী শুধু উপাচার্যের গাড়ি ক্রয়ে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। পুরাতন গাড়ির মেয়াদের প্রায় ৬ বছর ৮ মাসের মাথায় নতুন গাড়িটি কেনা হয়। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে ১০ বছরের অধিক পুরোনো মোটরযান প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে ব্যয় নির্বাহ করার কথা জানানো হয়। এক্ষেত্রেও প্রশাসন নির্দেশনা ভঙ্গ করেছেন। তবে এসব অনিয়মের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈনের বক্তব্যের জন্য তার কার্যালয়ে গেলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে দেখা করেননি। পরে মোবাইলে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
আরও
X