মাত্র ২৩ বছর বয়সেই জীবনের পরিসমাপ্তি। ক্রিকেটার, কৃতী ছাত্র এবং স্বপ্নবাজ এক তরুণ- দির্ধ প্যাটেল। গত সপ্তাহে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট দুর্ঘটনায় পড়েন। সেই ঘটনায় ২৭৪ জনের প্রাণহানি হয় যার মধ্যে ছিলেন এই উদীয়মান ক্রিকেটারও।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে আহমেদাবাদের সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে AI 171 ফ্লাইট, যেটি ছিল বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ সিরিজের। কিন্তু উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি উচ্চতা হারিয়ে বিধ্বস্ত হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ২৩ বছর বয়সী দির্ধ প্যাটেল, যিনি ইউনিভার্সিটি অব হাডার্সফিল্ড থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছিলেন।
২০২৪ সালে ইংল্যান্ডের লিডস মডার্নিয়ান্স ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন দির্ধ। ওই বছর ক্লাবটির প্রথম একাদশের হয়ে ২০ ম্যাচে ৩১২ রান ও ২৯টি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। একাধারে সফল অলরাউন্ডার হিসেবে মাঠ কাঁপিয়েছেন, অন্যদিকে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। ভবিষ্যতে ‘Overseas Born English Resident’ হিসেবে রেজিস্ট্রেশনের পরিকল্পনাও ছিল তার।
আয়ারডেল অ্যান্ড ওয়ার্ফডেল সিনিয়র ক্রিকেট লিগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “দির্ধ প্যাটেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তিনি ছিলেন আমাদের লিগের লিডস মডার্নিয়ান্স ক্রিকেট ক্লাবের খেলোয়াড় এবং পুল সিসির সাবেক খেলোয়াড় কৃতিক প্যাটেলের ভাই।”
এই সপ্তাহান্তে ক্লাবটির প্রথম ও দ্বিতীয় একাদশের ম্যাচের আগে এক মিনিট নীরবতা পালনের ঘোষণা দিয়েছে লিডস মডার্নিয়ান্স।
ইউনিভার্সিটি অব হাডার্সফিল্ডের কম্পিউটিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভাগের শিক্ষক ড. জর্জ বারগিয়ানিস বলেন, “দির্ধ ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী ব্যক্তি। ক্লাসে সবসময় বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্ন করতেন, তার শেখার গভীরতা ছিল অসাধারণ। তিনি সবসময় বড় ছবিটা দেখতে পারতেন- কীভাবে তার শেখা জ্ঞান দিয়ে পৃথিবীতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলা যায়, তা বোঝার ক্ষমতা ছিল তার।”
তিনি আরও বলেন, “স্নাতকোত্তর শেষ করেও দির্ধ আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তার মৃত্যু আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবন কতটা ভঙ্গুর। তার স্মৃতি আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।”
দির্ধ প্যাটেল ছিলেন এমন একজন তরুণ, যিনি একইসঙ্গে মাঠে এবং ক্লাসরুমে নিজের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। তার আকস্মিক মৃত্যুতে শুধু পরিবার বা সতীর্থরাই নয়, ক্রীড়াজগত ও শিক্ষাঙ্গন হারাল এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নাম।
মন্তব্য করুন