পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ আয়োজন করছে শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপের আগে লঙ্কান ক্রিকেটে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। লঙ্কান কাঠামো পুনর্গঠনকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে সব ধরনের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বন্ধ করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)।
শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লিখেছে, ‘বোর্ড পরিচালিত সব ধরনের ঘরোয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট সাময়িকভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলমান মেজর ক্লাব তিন দিনের টুর্নামেন্ট এবং ‘বি’ স্তরের আমন্ত্রণমূলক ক্লাব তিন দিনের টুর্নামেন্টও এর আওতাধীন থাকবে।’ ২০২১ সালের পর আবারও লঙ্কান ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামো পুনর্গঠন নিয়ে বোর্ডে অভ্যন্তরীণ ঝামেলার সম্মুক্ষীণ হলো শ্রীলঙ্কা।
লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের সদ্য বিলুপ্ত কারিগরি উপদেষ্টা কমিটি দুই স্তরের কাঠামো বাতিল করে দুটি গ্রুপে ১৩টি করে দল নিয়ে তিন দিনের টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুপারিশ করেছিল। এই কমিটির প্রধান ছিলেন লঙ্কান কিংবদন্তি অরবিন্দ ডি সিলভা। তার কমিটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, দুই গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার তলানির দুটি করে মোট চার দল প্রথম দুই বছরের জন্য অবনমিত হবে। আর তৃতীয় বছর থেকে অবনমিত হবে তিনটি করে দল। সেটা হলে শ্রীলঙ্কার শীর্ষ ঘরোয়া টুর্নামেন্টে দলের সংখ্যা ১৫-তে নেমে আসত। এমনকি ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও বাড়ত বলেও মত দিয়েছিল অরবিন্দ ডি সিলভার কমিটি।
ডি সিলভার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে অবনমিত দলগুলো আর তিন দিনের টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারত না। তখন তাদের গভর্নরস ট্রফি নামে সীমিত ওভারের টুর্নামেন্ট খেলতে হতো। এই বিষয়টি বুঝতে পেরে এসএলসিতে অভিযোগ দিয়েছিল ক্লাবগুলো। অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১৭ জুন লঙ্কান বোর্ড জরুরি সভা ডাকে। সেখানে দুই স্তরের টুর্নামেন্টের পক্ষে-বিপক্ষে ভোট চাওয়া হয়। বোর্ড সদস্যদের অনুমোদন সাপেক্ষে ওই মাসেই মেজর ক্লাব তিন দিনের টুর্নামেন্ট এবং ‘বি’ স্তরের আমন্ত্রণমূলক ক্লাব তিন দিনের টুর্নামেন্ট শুরু হয়।
নতুন গঠিত ‘বি’ স্তরের টুর্নামেন্টে কোন কোন দল অংশ নেবে, সেটাও ঠিক করে দেয় এসএলসি। জানায়, গত বছরে অবনমিত হওয়া চার দলের সঙ্গে গভর্নরস ট্রফির শীর্ষ ছয় দল নিয়ে হবে প্রতিযোগিতা।
কিন্তু গভর্নরস ট্রফির পয়েন্ট তালিকার নিচের দিকে থাকা গেস্টো ক্রিকেট ক্লাব (জিসিসি) বোর্ডের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়। এমনকি বিষয়টি নিয়ে আদালতে যায় জিসিসি। তবে আদালতের রায় গেস্টো ক্লাবের বিপক্ষে যাওয়ায় টুর্নামেন্ট চালু থাকে।
এবার দেশটির শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি জানায় গেস্টো ক্লাব। তবে এবার তারা সফল হয়। দাবি মেনে নিয়ে ক্রীড়া মন্ত্রী রোশান রানাসিংহে মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালককে সমস্যা সমাধানের জন্য নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর নির্দেশে মহাপরিচালক গত ২৫ আগস্ট লঙ্কান বোর্ডকে একটি চিঠি পাঠায়। চিঠিতে লেখা ছিল, শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া আইন অনুযায়ী, এসএলসি তাদের সংবিধানে কোনো পরিবর্তন আনতে চাইলে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে।
মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমতি চায় লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড (এলএসসি)। কিন্তু মন্ত্রণালয় কোনো ধরনের সাড়া না দেওয়ায় বন্ধই করে দেওয়া হলো বোর্ড পরিচালিত সব ধরনের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট।
মন্তব্য করুন