বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ফুটবল ক্লাবগুলোর একটি বসুন্ধরা কিংস। চারটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার গৌরব, তারকার ভরপুর স্কোয়াড—সব মিলিয়ে তাদের নামটাই যেন স্থিতিশীলতার প্রতীক। অথচ সেই ক্লাব নিয়েই এবার প্রকাশ্যে এল এক অস্বস্তিকর খবর। বকেয়া বেতন পরিশোধ না হওয়ায় আইনগতভাবে ক্লাবের সঙ্গে নিজের চুক্তি বাতিল করেছেন জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার তারিক কাজী।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যার পর নিজের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পোস্টে বিষয়টি জানান ফিনল্যান্ডে বেড়ে ওঠা এই ফুটবলার। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আজ আমি বকেয়া বেতন পরিশোধ না হওয়ার কারণে আইনগতভাবে আমার চুক্তি বাতিল করেছি বসুন্ধরা কিংসের সঙ্গে।’
২০১৯ সালে বসুন্ধরা কিংসে যোগ দেন তারিক। ক্লাবটির হয়ে টানা ছয় মৌসুম খেলে জিতেছেন চারটি প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা। কিন্তু এত বছর পর হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত—তা সমর্থকদের অবাক করতেই পারে।
তারিকের দীর্ঘ স্ট্যাটাসে ফুটে উঠেছে দীর্ঘদিনের মানসিক ক্লান্তি ও নীরব লড়াইয়ের গল্প। লিখেছেন, ‘এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি অনিয়মিত ও বিলম্বিত বেতন পরিশোধের মধ্য দিয়ে গিয়েছি। এটি শুধু আর্থিক কষ্ট ছিল না, এটি ছিল এক মানসিক চাপ, যা প্রকৃত পেশাদাররা নিঃশব্দে বহন করে।’
তবুও তিনি নিজেকে সংযত রেখেছিলেন—এ কথাও জানিয়েছেন সেই লেখায়: ‘এই পুরো সময় আমি বেছে নিয়েছি ধৈর্য, পেশাদারিত্ব ও শ্রদ্ধা; এমনকি যখন পরিস্থিতি আমার সহ্যের সীমা ছুঁয়ে গিয়েছিল। আমি বিশ্বস্ত থেকেছি ক্লাবের প্রতীকে, সতীর্থদের প্রতি এবং সমর্থকদের প্রতি।’
অস্কার ব্রুজন, টিটা ভ্যালেরিউ, মারিও গোমেজসহ টেকনিক্যাল স্টাফদের ধন্যবাদ জানিয়ে তারিক আরও লেখেন, ‘এই মানুষগুলো আমাকে অনিশ্চয়তার সময়েও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আর সেই সমর্থকরাই আমাকে শক্তি দিয়েছেন, যারা স্টেডিয়াম ভরিয়ে দিয়েছেন আশায় ও হৃদয়ে।’
এদিকে বসুন্ধরা কিংসের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ক্লাব সভাপতি ইমরুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বাংলাদেশ দলে ২০২১ সাল থেকে নিয়মিত মুখ তারিক কাজী। জাতীয় দলের রক্ষণভাগে তার উপস্থিতি প্রায় অপরিহার্য। এমন একজন নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়ের সঙ্গে দেশের সেরা ক্লাবের সম্পর্ক এমনভাবে ভাঙা—এটি শুধু বসুন্ধরা কিংসের জন্য নয়, পুরো দেশীয় ফুটবলের জন্যই বড় এক সতর্ক সংকেত।
মন্তব্য করুন