টানা আট দিন দেশের পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকার পর গতকাল সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কিছুটা হোঁচট খেয়েছে। দিনের শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩৭ পয়েন্টের বেশি কমেছে। টানা কয়েকদিন উত্থানের পর সূচকের এমন পতনকে ধরা হয় বাজার ‘কারেকশন’ হিসেবে। টানা উত্থানের পর কিছুটা মুনাফা তুলে নেওয়া হয় সাধারণ নিয়মেই।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত আট কর্মদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ৩৩১ পয়েন্ট। বাজারে তখন প্রবল বিনিয়োগ আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে, যা একটি স্থিতিশীল ধারা গড়ে তোলার ইঙ্গিত দেয়। সেই ধারার মধ্যেই গতকাল দিনের শুরুতে সূচক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন শুরু হয়। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলতে শুরু করলে সূচক এক পর্যায়ে ৪৫ পয়েন্ট পর্যন্ত কমে যায়। শেষ পর্যন্ত তা কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩৭ পয়েন্টের বেশি কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
গতকাল লেনদেনের দিক থেকে কিছুটা মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় ৮৬৫ কোটি ৪ লাখ টাকার, যা আগের কর্মদিবসের তুলনায় কিছুটা কম। আগের দিন বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৯৫১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা এবং তার আগের দিন বুধবার ৯৮৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। তবে লেনদেনের এই হ্রাসও বিশ্লেষকদের কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়নি, বরং তারা এটিকে পরিস্থিতি অনুযায়ী স্বাভাবিক বলেই দেখছেন। গতকাল ডিএসইতে ১১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, ২৩২টি প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে এবং ৫০টি অপরিবর্তিত ছিল।
অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই প্রবণতা দেখা গেছে। সিএসইর পাঁচটি সূচকই এদিন সংশোধন হয়েছে। এই বাজারে গতকাল ৮৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধির বিপরীতে ১৪০টির দাম কমেছে এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত ছিল।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ, ভালো কোম্পানির আর্থিক ফল এবং কিছু কাঙ্ক্ষিত নীতিমালা বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এমন অবস্থায় সূচকের এই একদিনের পতন বড় কোনো ধাক্কা নয়।
তারা আরও মনে করেন, বাজারে লাভের সুযোগ তৈরি হলে কিছু বিনিয়োগকারী স্বাভাবিকভাবেই তা তুলে নিতে চান। একে দুর্বলতা হিসেবে না দেখে বরং সুস্থ বাজারচক্রের অংশ হিসেবে দেখা উচিত। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত না হয়ে বিনিয়োগকারীদের উচিত পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া। সূচক পতন সত্ত্বেও বাজারে সামগ্রিকভাবে একটি ইতিবাচক ধারা বিরাজ করছে। আগামী ২-৩ দিন এমনই মিশ্র প্রবণতায় বাজার থাকতে পারে। তারপর আবারও ইতিবাচক ধারায় বাজার সামনে এগোবে— এমন আশাবাদ বাজার সংশ্লিষ্টদের।
মন্তব্য করুন