দুই দিনের চীন সফরের শেষ পর্যায়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। গতকাল সোমবার বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কয়ারে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে এ বৈঠক হয়। যদিও এই বৈঠক নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
বৈঠকে শি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতির জন্য ব্লিঙ্কেনকে আরও কিছু করার আহ্বান জানান। চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, দুই দেশের সম্পর্ককে স্থিতিশীল করতে ব্লিঙ্কেন আরও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবেন বলে তিনি আশা করেন। রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের মিথস্ক্রিয়া সব সময়ই পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতাভিত্তিক হওয়া উচিত। এই সফরের মাধ্যমে দুই পক্ষ অগ্রগতি ঘটিয়ে কিছু নির্দিষ্ট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছেছে—এট খুব ভালো। এ ছাড়া চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের সঙ্গে ব্লিঙ্কেনের বৈঠককে অকপট ও গভীর আলোচনা বলে বর্ণনা করেন। তবে শির এসব কথার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কী বলেছেন, তা জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত রোববার দুই দিনের সফরে চীনে যান অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কোনো কূটনীতিক বেইজিং সফরে যান। সফরের প্রথম দিন বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের সঙ্গে বৈঠক হয় ব্লিঙ্কেনের। কিন বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের জন্য তাইওয়ান হচ্ছে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। একই সঙ্গে তাইওয়ান ইস্যুটিকে চীনের প্রধান স্বার্থগুলোর একটি হিসেবেও তিনি উল্লেখ করেন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনকে বলেন, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরুর পর সাম্প্রতিক সময়ে কূটনৈতিক দিক থেকে খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে দুই দেশের মধ্যে। ফলে দুই দেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক স্বার্থ রক্ষা করা যাচ্ছে না, আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রত্যাশাও পূরণ হচ্ছে না। বৈঠকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তারা একমত হন। করোনা মহামারির পর দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট চলাচল খুবই সীমিত পর্যায়ে রয়েছে। দুজনের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে কিন ওয়াশিংটন সফরে যেতে সম্মত হন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাট মিলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে কবে এই সফর হবে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।
চীনের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হুয়া চুনইং টুইটারে লিখেছেন—আশা করছি, এই আলোচনার ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আবার পুরোনো জায়গায় ফিরবে। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে দুই দেশের প্রেসিডেন্ট এই আশাই করেছিলেন। তবে আলোচনার পর ব্লিঙ্কেন বা কিন গ্যাং কেউই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি।
মন্তব্য করুন