বরিশালের বাকেরগঞ্জে উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়নের গুরিয়া গ্রামের আটবাড়িয়া খালের ওপর ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজ জনগণের কাজে আসছে না। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রয়োজনীয় জায়গায় ব্যক্তিস্বার্থে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে। আটবাড়িয়া খালের ওপরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়।
জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে নির্মিত ব্রিজের ঠিকাদার ছিলেন একজন বিএনপি নেতা। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ বাড়ির পার্শ্ববর্তী আটবাড়িয়া খালে ব্যক্তিস্বার্থে ব্রিজ নির্মাণ করেন। ব্রিজটি দীর্ঘ ১৭ বছরে জনগণের কোনো কাজে আসেনি। ব্রিজটি নির্মাণে সরকারি অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয় স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্রিজের একপাশে কোনো রাস্তাঘাট কিংবা জনবসতি নেই। যতদূর চোখ যায় শুধু বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে পটুয়াখালী কৃষি কলেজের ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মো. রফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে ধান এবং গরু-বাছুর আনা-নেওয়ার জন্যই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান মো. রফিকুল ইসলাম কলসকাঠী ইউনিয়নের গুরিয়া গ্রামের ইসমাইল সিকদারের ছেলে ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর এপিএস ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বর্তমানে ভূমি সংস্কার বোর্ডে সহকারী ভূমি সংস্কার কমিশনার-২ পদে কর্মরত রয়েছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিস সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠী ইউনিয়নের গুরিয়া গ্রামের ওই শিবির নেতার বাড়ির পার্শ্ববর্তী আটবাড়িয়া খালের ওপরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছে।
গুরিয়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, সাবেক শিবির নেতার বাড়ির সামনের খালে এই ব্রিজের কোনো প্রয়োজন ছিল না। ব্রিজের ওপারে শুধু ধানক্ষেত। তা ছাড়া খালেও বছরের অধিকাংশ সময় কোনো পানি থাকে না। এক কথায় সরকারি অর্থের অপচয় করা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, এই অঞ্চলে অনেক গ্রাম আছে, যেখানে যাতায়াতের জন্য ব্রিজ খুবই দরকার। জনস্বার্থে সরকারি অর্থায়নে ব্রিজটি সেখানেই করার দরকার ছিল, যেখানে প্রতিদিন কয়েক শতাধিক মানুষের যাতায়াত। কিন্তু ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রয়োজনীয় জায়গায় ব্যক্তিস্বার্থে জন্য ব্রিজটি করিয়েছেন। তবে ব্রিজটির এখানে কোনো প্রয়োজন ছিল না।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. কামরুজ্জামান জানান, গ্রামীণ সড়ক এবং কাবিখা প্রকল্পের রাস্তার সংযোগ স্থানে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নে মনিটরিংয়ে ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তেমনটি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ব্রিজটি নির্মাণকালে আমি এ উপজেলার দায়িত্বে ছিলাম না। এজন্য এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলেও তিনি জানান।