অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠার পর গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। পরে তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, মানি লন্ডারিং, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে পৃথক চারটি মামলা হয়। এর মধ্যে মানি লন্ডারিং মামলাটি ছাড়া অন্য তিন মামলায় সম্রাটকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযুক্ত হলেও এসব মামলার কোনোটির আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়নি।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে নিয়ে কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, পিস্তল ও বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর চামড়া উদ্ধার করা হয়। বন্যপ্রাণীর চামড়া রাখার দায়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরদিন ৭ অক্টোবর র্যাব-১-এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে রমনা থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অস্ত্র মামলার চার্জশিট জমা দেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১-এর উপপরিদর্শক (এসআই) শেখর চন্দ্র মল্লিক। বর্তমানে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এ মামলাটি বিচারাধীন। গত ১৮ আগস্ট এ মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। ওইদিন আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করলে, আদালত তা মঞ্জুর করে আগামী ২৭ নভেম্বর নতুন দিন ধার্য করেছেন। এ ছাড়া ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর মাদক মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১-এর এসআই আব্দুল হালিম। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর আদালতে
বিচারাধীন। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন দিন ধার্য রয়েছে।
২০২০ সালের ১২ অক্টোব রমনা থানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করে। গত ১৮ আগস্ট এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে ওইদিন প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় আগামী ১ অক্টোবর নতুন দিন ধার্য রয়েছে। এ ছাড়া সম্রাটের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২২ সালের ২২ মার্চ চার্জশিট আমলে নেন আদালত। মামলাটি বিচারের জন্য ২০২২ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এ পাঠানো হয়। এরপর থেকে ২০ বার ধার্য তারিখ পেছানো হলেও এ মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি হয়নি। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে। এর আগে ২০ বার এসব মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।
ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ আলী ও ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বেঞ্চ সহকারী শাহাদাত বলেন, অস্ত্র ও মাদকের মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়নি। তিনি জামিনে রয়েছেন। গত ধার্য তারিখে তার পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয়। পরে আদালত তার আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
আদালতের রমনা মডেল থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা এসআই সাইফুর বলেন, সম্রাটের মানি লন্ডারিং মামলায় কোনো প্রতিবেদন জমা হয়নি। তিনি এ মামলায় জামিনে রয়েছেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।