বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে আজ রোববার সীমিত পরিসরে পাঠদান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে কর্তৃপক্ষ। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আগামীকাল সোমবার।
গতকাল বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল। তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ধাপে ধাপে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করব। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সোমবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি যেন দীর্ঘস্থায়ী না হয়, সেটিই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।
তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার পর আমরা প্রথমেই শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছি। কারণ, এমন এক ভয়াবহ ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মনে যে ভয়, আতঙ্ক ও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা সময় ও সহানুভূতির মাধ্যমে কাটিয়ে উঠতে হবে। আমরা অভিভাবক, শিক্ষক ও প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছি এবং ধাপে ধাপে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে ক্যাম্পাসে ফের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস শুরুর তারিখ নিয়ে আমরা হুট করে কিছু ঘোষণা দিতে চাই না। ক্লাস শুরুর বিষয়ে আগে একটি সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হলেও, বাস্তব প্রস্তুতির অপর্যাপ্ততা বিবেচনায় আপাতত তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, সোমবার পরিস্থিতি ও প্রস্তুতি মূল্যায়ন করে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো সম্ভব হবে।
গত সোমবার রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে যুদ্ধবিমান আছড়ে পড়ে। এতে বিস্ফোরণের ফলে স্কুলের একটি ভবনে আগুন লেগে যায়। আগুনে দগ্ধ ও আহত হন ১৬৪ জন। দগ্ধদের মধ্যে অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩৫ জন।
এদিকে গতকাল দুপুরে কলেজ ফটকের সামনে শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা না থাকলেও ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। অনেকেই এসেছিলেন একনজর ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি দেখতে। আরিফুজ্জামান নামে একজন ফটকের ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকা সিকিউরিটি গার্ডকে জিজ্ঞেস করছিলেন, বিমানটি স্কুলের কোথায় পড়েছিল? উত্তরে কলেজের সিকিউরিটি গার্ড আবু রায়হান হাতের ইশারায় দেখিয়ে জানান, ‘এই পথ দিয়ে সামনে গেলেই হায়দার আলী ভবন। এখন টিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।’ ওই ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেন, ‘ভেতরে ঢুকতে দেওয়া যাবে?’ উত্তরে রায়হান বলেন, ‘দেখতে আসা লোকজনের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি এখনো পাইনি। পেলে গেট খুলে দেব।’ কিছুক্ষণ পরেই গেট খুলে দেওয়া হয়। দর্শনার্থীরা ভেতরে প্রবেশ করেন।
মন্তব্য করুন