২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ জিম্মি করার ৯ দিনের মাথায় মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। গতকাল বুধবার দুপুরে তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে জলদস্যুরা যোগাযোগ করেছে বলে জানিয়েছেন জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। কালবেলাকে তিনি বলেন, ‘জলদস্যুরা যোগাযোগ (ফোন) শুরু করেছে। তবে এখনো মুক্তিপণের বিষয়ে কোনো আলাপ হয়নি। তবে আলোচনার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।’
নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, যোগাযোগ শুরুর দিকটি ইতিবাচক। মালিকপক্ষ ও বীমাকারী প্রতিষ্ঠান জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমঝোতায় পৌঁছবে বলে তিনি আশা করছেন।
গত ১২ মার্চ সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ছিনতাই করে জলদস্যুরা। তিন দিনের মাথায় নাবিকসহ জিম্মি জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই দফা স্থান পরিবর্তন করে জাহাজটি গত শুক্রবার সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলের কাছে নোঙর করে রাখেন জলদস্যুরা। ৫৮ হাজার টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আব্দুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।
জানা যায়, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পাঠাতে কেনিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সাহায্য চেয়েছিল জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপ। বীমা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল তারা। বীমা প্রতিষ্ঠান আবার মাধ্যম হিসেবে খুঁজছে মধ্যস্থতাকারী কোনো পক্ষকে, যাদের সঙ্গে জলদস্যুদের যোগাযোগ আছে। তবে জলদস্যুদের কেউ এ ব্যাপারে কথা বলেনি। জাহাজে রান্না, গোসল ও পান করার জন্য বিশুদ্ধ পানি মজুত রাখা হয়। জাহাজভেদে প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ টন পানি লাগে।
এদিকে মঙ্গলবারও তথ্য ছিল, নাবিকদের সঙ্গে ভাগ বসানোর কারণে দ্রুত ফুরিয়ে আসছে জাহাজে মজুত থাকা পানি। তাই পানি ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছে দস্যুরা। পুরো দিনে মাত্র দু-এক ঘণ্টা মজুত থাকা পানি ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে নাবিকদের। বাকি সময়ে পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে সাগর থেকে। এখন যে খাবার ও পানি মজুত আছে, তা ৮ থেকে ৯ দিন চলতে পারে। এগুলো ফুরিয়ে গেলে কী হবে, তা নিয়ে স্বজনের কাছে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন জিম্মি নাবিকরা।