ইন্টার মিয়ামির গোল মেশিন হয়ে উঠেছেন লিওনেল মেসি। টানা পাঁচটি ম্যাচে গোল পেয়েছেন তিনি। প্রতিটি ম্যাচেই জিতেছে তার দল। লিগস কাপে শার্লট এফসিকে গতকাল ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে মিয়ামি। বড় জয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ফ্লোরিডার ক্লাবটি। দলের পক্ষে গোল করেন জোসেফ মার্তিনেজ, রবার্ট টেলর ও লিওনেল মেসি। আরেকটি গোল আত্মঘাতী।
ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামে লিগস কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে শার্লট এফসির বিপক্ষে বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৬টায় মাঠে নামে মিয়ামি। ম্যাচের প্রথমার্ধেই সেমির পথে অনেকটাই এগিয়ে যায় মেসির দল। ১২ মিনিটেই লিড পায় মিয়ামি। স্পটকিক থেকে দলকে এগিয়ে দেন জোসেফ মার্তিনেজ। মিয়ামিতে যোগ দেওয়ার পর এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার পেনাল্টি নেওয়ার সুযোগ পেয়েও সেটি কাজে লাগাননি মেসি। প্রথমার্ধের ৩২ মিনিটে মিয়ামির হয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রবার্ট টেলর। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে টাটা মার্তিনোর দল। ঘরের মাঠে অপ্রতিরোধ্য ফুটবল খেলা মিয়ামি বল দখল থেকে শুরু করে আক্রমণ সবকিছুতেই এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে। দ্বিতীয়ার্ধে শার্লটও আক্রমণে পিছিয়ে ছিল না। মেজর লিগের দলটি প্রতি আক্রমণের সুযোগ ভালোভাবে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হওয়ায় গোলের দেখা পায়নি। মেসি একাধিকবার প্রতিপক্ষ রক্ষণে হুমকি তৈরি করেন। ৬৯ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়ে গোল প্রায় করেই ফেলেছিলেন আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপজয়ী মহাতারকা। কিন্তু তার নেওয়া শট শার্লট খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বাইরে চলে যায়। তবে মেসি গোল না পেলেও তার তৈরি করা আক্রমণ থেকেই তৃতীয় গোলটি আদায় করে নেয় ইন্টার মিয়ামি। পাল্টা আক্রমণ থেকে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালেই জড়ায় শার্লট। ইন্টার মিয়ামির দর্শকদের গোল উপহার দেন মেসি ম্যাচের ৮৭ মিনিটে। ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়ে সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন ইন্টার মিয়ামি অধিনায়ক। তার এই গোলেই নিশ্চিত হয় মিয়ামির ৪-০ গোলের বড় জয়। আর এই জয়ে ইন্টার মিয়ামি পৌঁছে গেছে লিগস কাপের সেমিফাইনালে। ইন্টার মিয়ামির জার্সিতে মেসির বর্তমান গোলসংখ্যা এখন ৮। মিয়ামির কোচ জেরার্দো মার্তিনো বলেছেন, ‘মেসির থেকে লোকে গোলের প্রত্যাশা করে। মেসি সেটিই করছে। এতেই বোঝা যায়, মেসি একটা লক্ষ্য নিয়ে এখানে খেলতে এসেছে।’ বিপক্ষের কোচ ক্রিশ্চিয়ান লাতাজ্জিয়ো বলেছেন, ‘মেসির মতো ফুটবলারের কাছে গোল করার জন্য এক সেকেন্ড, একটি সুযোগই যথেষ্ট।’ মার্তিনো আরও বলেন, ‘বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে যে মেসিকে নেতৃত্ব দিতে দেখেছিলাম, এখানেও একই মেসিকে দেখছি। গত কয়েক বছরে মাঠে এবং মাঠের বাইরে মেসির নেতৃত্ব খুবই ভালো। বিশ্বকাপে ও কী করেছে সবাই দেখেছে। তাই মেসি কেমন নেতা, এটি আলাদা করে আর বলার দরকার নেই।’ মেসির অধিনায়কত্বে মুগ্ধ মার্তিনো আরও বলেছেন, ‘ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে মেসি শুধু ফুটবলের ক্ষেত্রে দলকে নেতৃত্ব দিত। এখন শুধু মাঠেই নয়, অনুশীলনের সময়ও ওর প্রভাব অনেকটাই থাকে। দলের তরুণ খেলোয়াড়দের সঙ্গে সব সময় কথা বলে। কীভাবে কোন পরিকল্পনা কাজে লাগানো যাবে, সেই নিয়ে আলোচনা করে। মেসি এই ক্লাবে আসার আগে বলেছিল সে জিততে এসেছে। ডালাসের বিরুদ্ধে চতুর্থ গোলটা আমার মতে সেই কথার একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত। গোলের পর উচ্ছ্বাস করছিল ঠিকই। তার ফাঁকেই বলছিল, দ্রুত বলটা নিয়ে চলে এসো। দেখা যাক আমরা পঞ্চম গোলটা করতে পারি কি না। এতেই ওর মানসিকতা বোঝা যায়। সেই মানসিকতা দলের বাকিদের মধ্যেও সংক্রমিত হয়েছে।’
মন্তব্য করুন