ক্যান্ডিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। কিন্তু হারের ক্ষতের সঙ্গে দলের ভেতরকার মেলবন্ধনেও ঘাটতির দেখা মিলেছে মাঠের ক্রিকেটে। বাংলাদেশ যখন ফিল্ডিংয়ে। তখন ৮তম ওভারটি করেছিলেন শামীম হোসেন। ওই ওভারের শেষ বল করার আগে মিড উইকেট থেকে ফিল্ডারকে সরিয়ে নিয়েছিলেন অধিনায়ক লিটন দাস। সেখানেই সিঙ্গেল নিয়ে ওভার শেষ করলেন কুশল মেন্ডিস। বাংলাদেশ অধিনায়কের এমন সিদ্ধান্তে কিছুটা হতাশ মনে হয়েছে বোলার শামীমকেই। রাগান্বিত হয়ে কিছু একটা বলতেও দেখা যায় তাকে! কিন্তু কী বলেছেন—সেটা আর অনুমান করা যায়নি। ১১ রানের ওই ওভারের পর আর বোলিংয়েও দেখা যায়নি এই স্পিন অলরাউন্ডারকে। এই তো গেল একটি ঘটনা। শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট, ওয়ানডে থেকে টি-টোয়েন্টি—মাঠে এমন বহু ঘটনার দেখা মিলছে বারবার। তাই তো হারের সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেটারদের নিবেদন ঘিরেও প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। ক্রিকেট নাকি টিম গেমের খেলা। অথচ এখানেও ঢের পিছিয়ে বাংলাদেশ!
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডের একটি ছবি এখনো তরতাজা। থিতু ব্যাটার তাওহীদ হৃদয় জোড়া রানের জন্য ডেকেছিলেন অন্য প্রান্তে থাকা তানজিম হাসান সাকিবকে। কিন্তু প্রান্তে পৌঁছানোর পর সাকিবের মনে হয়েছিল, দুই রান সম্ভব নয়। ঝুঁকি নিলে একজন ফিরতে হতেই হবে এমন। হৃদয় দ্বিতীয় রানের জন্য ছোটা শুরু করলেও অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাকিব। বারবার নিষেধ করছিলেন তিনি। এরপর হৃদয় আর ফের নিজের প্রান্তে ফেরত যেতে পারেননি। রানআউট হয়েই মাঠে মেজাজ হারিয়ে বসেন। ব্যাট ছুড়ে মারেন উইকেটে। এ তো ক্রিকেটারদের মধ্যকার সমস্যা। মাঠের নিবেদনেও ঘাটতি ফুটে উঠেছে বেশ কয়েকবার।
বিশেষ করে ওয়ানডে সিরিজজুড়ে নিবেদনের ঘাটতির দেখা মিলেছিল পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের খেলায়। ফিল্ডিংয়ে যতটা সম্ভব গা বাঁচিয়ে ম্যাচ খেলে গেছেন তিনি। প্রতিটি ম্যাচেই তার নিবেদনের ঘাটতির কারণে বাড়তি বেশ কয়েকটি বাউন্ডারিও হজম করতে হয়েছিল দলকে। যদিও মুস্তাফিজের বিষয়ে প্রশ্নে তখন সাবধানি উত্তর দিয়েছিলেন ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ, ‘দেখেন ও (মুস্তাফিজ) ইনজুরি থেকে মাত্র এসেছে। আর একটা খেলোয়াড় যখন ইনজুরি থেকে আসে, তখন একটু কঠিন তার জন্য পারফেক্ট ফিল্ডিং করা। আমার কাছে মনে হয়, আমরা জানি মুস্তাফিজ ভালো ফিল্ডার এবং ওর ফিটনেস অনেক ভালো। আমার মনে হয়, যেহেতু অনেক দিন পর ইনজুরি থেকে এসেছে। তাই একটু সতর্ক থাকে। ওকে আরেকটু সময় দিতে হবে, তাহলে ওর জায়গায় ফিরতে পারবে।’ প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেনকেও একই প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘মুস্তাফিজসহ আরও কয়েকজনের যার যেখানে উন্নতি দরকার, আমার মনে হয় টিম ম্যানেজমেন্ট খুব নিবিড়ভাবে কাজ করছে।’ আরেকটি কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন একসঙ্গে অনুশীলনের সুযোগ না মেলায়। ব্যস্ত ক্রিকেট সূচিতে যেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে মাঠের ক্রিকেটে ধীরে ধীরে সেখানেও বদল আসবে বলে মত দেন গাজী আশরাফ। যদিও পুরো সিরিজেই বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের নিবেদনে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। সেটা কাটিয়ে ওঠাই এখন যেন দলের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
মন্তব্য করুন