দুই বছর আগে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চিত্রনায়িকা পরীমণি সাভার থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয় পুলিশ। তবে ধর্ষণচেষ্টার সত্যতা না পাওয়ায় মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়। পরের বছর ১৮ মে মামলাটির আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। পরে সাক্ষ্য গ্রহণের পাঁচটি তারিখ ধার্য করেন আদালত। এর মধ্যে মাত্র এক দিন আদালতে উপস্থিত হয়ে আংশিক জবানবন্দি দেন পরীমণি। অন্য চারটি তারিখে আদালতে উপস্থিত না হয়ে সময়ের আবেদন করেন। আসামিরা আদালতে হাজিরা দিলেও বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ না হওয়ায় বিচারকাজ আগাচ্ছে না।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মামলাটি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এ বিচারাধীন। বিচার শুরুর পর আদালত সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য এ পর্যন্ত ছয়টি তারিখ ধার্য করেন। এর মধ্যে পাঁচটি ধার্য তারিখ পার হলেও কোনো সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়নি। গত বছরের ১ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম তারিখে আদালতে উপস্থিত না হয়ে সময়ের আবেদন করেন পরীমণি। পরে গত ২৯ নভেম্বর পরীমণি আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেন। ওইদিন জবানবন্দি গ্রহণ শেষ না হওয়ায় ১১ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত। এরপর মোট তিনবার ধার্য তারিখে উপস্থিত না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সময়ের আবেদন করেন পরীমণি। সর্বশেষ গত ২৩ মে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। তবে অসুস্থ থাকায় আদালতে উপস্থিত হননি তিনি। এ জন্য আগামী ২৪ জুলাই নতুন দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমণি। যদিও মামলার তদন্তে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ও ভয় দেখানোর অপরাধের পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর শহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, শুধু পরীমণির মামলা না, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলাগুলোর ক্ষেত্রে বাদীপক্ষ সাক্ষী হাজির না করে বিচারে বিলম্ব করায়। পরীমণির মামলায় শেষবারের মতো সময় দেওয়া হয়েছে। আসামি নাসিরের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম কালবেলাকে বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণের দিন সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হচ্ছে না। তবে আসামিদের ঠিকই নিয়মিত হাজিরা দিতে হচ্ছে। ব্যবসায়ী নাসির, অমিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলার আড়াই মাস পর ২০২১ সালের ৪ আগস্ট পরীমণির বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। পরে তাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তারের ২৭ দিন পর ওই বছরের পহেলা সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পান এ চিত্রনায়িকা।
মন্তব্য করুন