কিডনি হলো মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা শিমের মতো দেখতে এবং শরীরের বর্জ্য পদার্থ অপসারণে প্রধান ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া কিডনি শরীরের তরল ও খনিজ পদার্থের ভারসাম্য রক্ষা করে, লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সহায়তা করে এবং ভিটামিন ডি বিপাক করে থাকে। উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনির সমস্যা একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। উচ্চ রক্তচাপ কিডনির কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে এবং কিডনির রোগের কারণেও রক্তচাপ বাড়তে পারে। তাই, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করা উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনির সমস্যা: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষুদ্র রক্তনালিগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যা রক্ত পরিশোধনে বাধা দেয়। কিডনি রোগের কারণেও রক্তচাপ বাড়তে পারে, কারণ ক্ষতিগ্রস্ত কিডনি সঠিকভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনি রোগ উভয়ই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
কিডনি রোগের কারণ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। ডায়াবেটিসও কিডনির
কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে। এ ছাড়া কিছু ওষুধপত্র কিডনির ক্ষতি করতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, কিডনি রোগ বংশগত হতে পারে।
করণীয়: নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করতে হবে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা পালন করতে হবে; নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে; পরিমিত পরিমাণে লবণ গ্রহণ করতে হবে; পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে; ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
বিশেষ সচেতনতা: কিডনি রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো উপসর্গ থাকে না। তাই অনেকেই বুঝতেই পারেন না, কারণ কিডনি নীরবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করলে কিডনি ক্ষয় ধীর হয়। কিডনি রোগীদের রক্তচাপ ১৩০/৮০-এর নিচে রাখা উচিত। এসিই ইনহিবিটার ও এআরবি জাতীয় ওষুধ কিডনি রক্ষা করে। এই ওষুধগুলো প্রস্রাবের প্রোটিন কমায় এবং কিডনি ফাংশন ভালো রাখে। লবণ কম খেলে রক্তচাপ কমে। দিনে ৫ গ্রাম বা তার কম লবণ গ্রহণ করলে কিডনি ও হার্ট দুটোই উপকৃত হয়। ধূমপান কিডনি ও রক্তচাপ উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। ধূমপান রক্তনালি সরু করে এবং কিডনি নষ্টের গতি বাড়ায়।
উপসংহার: উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি রোগ একে অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সময়মতো চিকিৎসা, নিয়মিত পরীক্ষা এবং সচেতন জীবনাচার আপনাকে রাখতে পারে সুস্থ ও নিরাপদ।
মন্তব্য করুন