আগামী বৃহস্পতিবার মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহা। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে এরই মধ্যে শহর ছেড়েছেন অনেকে। তবে ছুটি শুরু হয়নি বলে পরিবারের অন্য সদস্যদের বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন কর্মজীবীরা। বিশেষ করে নারী ও শিশু-কিশোররা যাচ্ছে এখন। আর এভাবেই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে বলে জানান বাস কাউন্টারের ম্যানেজাররা। গতকাল শনিবার বেশ কয়েকটি কাউন্টার ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।
একমাত্র সন্তান আরহামকে নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর মাইজদী যাচ্ছেন গৃহবধূ ফাতেমা খানম লিসা। কালবেলাকে তিনি বলেন, রোববার থেকেই ছেলের স্কুল বন্ধ। তাই যানজটের ভোগান্তি ও বাড়তি ভাড়া থেকে বাঁচতে আগেভাগেই বাড়ি যাচ্ছি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বামীর ছুটি শুরু বুধবার থেকে। এ কারণে তিনি এখন যেতে পারছেন না।
রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় পরিবার নিয়ে থাকেন বরিশালের রিয়াজ উদ্দিন। ঈদের যানজট শুরুর আগেই পরিবারের সদস্যদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ঝামেলা শুরুর আগেই স্ত্রী-সন্তানকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। ঈদের আগের দিন আমি বাড়ি যাব।
এদিকে এ বছর ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি শুরু আগামী মঙ্গলবার থেকে। ফলে টানা ৫ দিন ছুটি ভোগ করবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। অবশ্য এর মধ্যে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ২ জুলাই রোববার থেকে ফের সরকারি অফিস-আদালত খুলবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ছুটি বুধবার থেকে শুরু। মঙ্গলবার সবশেষ অফিস করে ঈদ উদযাপনে স্বজনের কাছে যাবেন তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদুল ফিতরের তুলনায় ঈদুল আজহায় সড়কপথের যাত্রা কঠিন হয়। এবার বৃষ্টি, পশুবাহী ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি, সড়কের পাশে ফলের বাজার এবং অস্থায়ী পশুর হাট যানবাহন চলাচলে বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এতে যানজটও দীর্ঘ হতে পারে। গত ১৬ জুন রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্যালয়ে ঈদুল আজহায় সড়কপথের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে এক বৈঠকে এমন আশঙ্কার কথা জানান তারা। ওই বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারের ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জ হবে। কারণ বৃষ্টি হলেই গাড়ির গতি কমে যায়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঈদের দিনসহ আগে ও পরের মোট সাত দিন সিএনজি স্টেশন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। পোশাক কারখানাগুলোতে সমন্বয় করে ছুটি দিতে নির্দেশ দিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ঢাকার ২১টি স্পষ্ট এবং দেশের অধিকতর যানজট ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্থান যানজটমুক্ত রাখতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং বিআরটিএর সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন