রাজধানীতে ডেঙ্গুর বিস্তারে দুই সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়রের চরম ব্যর্থতাকে দায়ী করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে ডেঙ্গু রোগীদের পাশে থাকাসহ জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য চার দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। গতকাল শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনে গত নির্বাচনে ধানের শীষের দুই মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন ও তাবিথ আউয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে রাজধানীতে ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ সময় ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলামের বিদেশে সফর ও ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের চাকরির মেয়াদ আবারও বৃদ্ধি, রাজধানীতে বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি সংকটসহ নাগরিক সেবা না পাওয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরে ক্ষোভ জানানো হয়। এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ ও বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম ছিলেন। ডেঙ্গু রোগীদের পাশে থাকতে এদিন ‘ব্লাড ড্রাইভ কর্মসূচি’ ঘোষণা করে বিএনপি। এর মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীরা রক্ত দেবে, অন্যকেও উৎসাহিত করবে। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে রক্তের প্রয়োজন বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। অনলাইনে সেন্ট্রালাইজড ‘ব্লাড ইনফরমেশন ডিপোজিটরি’ ওয়েবসাইট চালু করা হবে। যতদিন ডেঙ্গু পরিস্থিতি থাকবে এই সেবা চালু থাকবে। এ ছাড়া এডিসের লার্ভা ধ্বংস ও জনসচেতনতা বাড়াতে ওয়ার্ড পর্যায়ে লিফলেট বিতরণ, প্রচার ও সমাবেশ করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে তাবিথ আউয়াল বলেন, ডেঙ্গু থেকে মুক্ত হতে শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এডিসের লার্ভা যেখানে জন্ম হয় সেই জায়গাগুলো নষ্ট করে দিতে হবে। আমি বলতে পারি ‘তামাশা’র অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। হাঁস ছাড়া হয়েছে বিভিন্ন লেকে, মাছ ছাড়া হয়েছে, ব্যাঙ ছাড়া হয়েছে এবং কিছু লেক বা খালের পাশে কিছু ঘাস কাটা হয়েছে। মশক নিধনে কার্যক্রম চলছে অবৈজ্ঞানিকভাবে। ব্যবহার করা হচ্ছে অকার্যকর, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। আর ইশরাক হোসেন বলেন, বর্তমানে মেয়র পদ দখল করে যারা আসীন রয়েছেন, তাদের ব্যর্থতায় আজকে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে। তাদের জবাবদিহির অভাবের কারণে জনগণের কাছে তাদের জবাব দিতে হয় না বলেই আজকে এ পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে। শুধু হাতে গোনা কিছু এলাকায় তারা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করেছেন, যেখানে উচ্চবিত্তরা থাকেন। এর বাইরে বাকি ঢাকা সিটিতে তাদের নজর নেই। দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ‘আয়তন ও জনসংখ্যা অনুপাতে পর্যাপ্ত কীটতত্ত্ববিদ’ নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ইশরাক।
মন্তব্য করুন