দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এদিন ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬১ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে উঠেছে ৫ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে। গত তিন মাসের এ সূচকের এটিই সর্বোচ্চ অবস্থান। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল ডিএসইএক্স সূচক ৫ হাজার ১৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। এরপর থেকে গত তিন মাসে এ সূচক আর সেই অবস্থানে যেতে পারেনি। তিন মাসের বেশি সময় পর গতকালই সূচকটি সেই সীমা পেরিয়ে ৫ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে উঠে যায়।
গতকাল দিনের লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মধ্য দিয়ে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে, যা অব্যাহত থাকে লেনদেন শেষ পর্যন্ত। বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় সূচকও বেড়ে যায়। অবশ্য এ ক্ষেত্রে বড় মূলধনের টেলিকমিউনিকেশন ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর অবদান ছিল বেশি। এসব কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধান সূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
ডিএসইতে গতকাল সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় ১৮০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমে ১৪৬টির। আর ৭২টির দাম অপরিবর্তিত থাকে। তালিকাভুক্ত ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯টির শেয়ার দাম বাড়ে। বাকি চারটির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত থাকে। এ ছাড়া টেলিকমিউনিকেশন খাতের তালিকাভুক্ত তিনটি কোম্পানিই দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। আর বস্ত্র খাতের ৩৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমে ১৩টির এবং আটটির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বাদে অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে ওঠে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ওঠে ১ হাজার ৯৭৮ পয়েন্টে।
শাহিন আহমেদ নামে একজন বিনিয়োগকারী কালবেলাকে বলেন, বর্তমানে বাজারে ভালো লেনদেন হচ্ছে। বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মনে আশার সঞ্চার হচ্ছে। মূলত বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ায় বাজারে প্রাণ ফিরছে। সম্প্রতি বিএসইসি চেয়ারম্যানের কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কারণেই বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরতে শুরু করে বাজারের প্রতি।
এদিকে, মূল্যসূচকে বড় উত্থান হলেও ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। বাজারটিতে এদিন লেনদেন হয় ৭৭৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবসে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭৮৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। তবে গতকাল লেনদেন কমলেও টানা তিন কার্যদিবসে ৭০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
গতকালের লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রাখে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। কোম্পানিটির ৩০ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার লেনদেন হয় ২২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার। তৃতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের ২০ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় আরও ছিল রেনেটা পিএলসি, খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, একমি পেস্টিসাইড ও লাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) গতকাল সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই ১৪৬ পয়েন্ট বাড়ে। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৩টির দাম বাড়ে। বিপরীতে দাম কমে ৭৮টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত থাকে। লেনদেন হয় ১০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
মন্তব্য করুন