রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ৯ ভাদ্র ১৪৩২
শিতাংশু ভৌমিক অংকুর
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:৫৪ এএম
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:১৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রাণের মেলা

দ্বিতীয় ছুটির দিনে চেনা আঙিনা

দ্বিতীয় ছুটির দিনে চেনা আঙিনা

অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় শুক্রবার ছিল গতকাল। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় পাঠক-দর্শনার্থীতে মেলা ছিল জমজমাট। দ্বিতীয় ছুটির দিনেই মূলত চেনা রূপ পেল বই মেলা। এদিন বিক্রিয়কর্মী, প্রকাশক, লেখক ও দর্শনার্থীর পদচারণায় মেলা প্রাঙ্গণ ছিল প্রাণবন্ত। ঘোরাঘুরির পাশাপাশি পছন্দের বই কিনেছেন অনেকে। দর্শনার্থীর এমন ভিড়ে আনন্দিত লেখক, প্রকাশ ও বিক্রয়কর্মীরা।

গতকাল সরেজমিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, স্টলগুলোর চারপাশ ঘিরে রেখেছেন বইপ্রেমীরা। নতুন বইয়ের গন্ধ পেতে মরিয়া তারা। মেলার প্রতিটি চত্বরে দেখা গেছে, দর্শনার্থীর হৈ-হুল্লোড় আর আনন্দ-উল্লাস। কেউ আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ আবার বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে মেলার দৃষ্টিনন্দন স্টল ও প্যাভিলিয়ন দেখছেন। সকাল ১১টা থেকেই মেলা প্রাঙ্গণে বাড়তে থাকে লোকসমাগম। সবার পদচারণায় এক অন্যরূপ নেয় বইমেলা। তবে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ধুলো বিড়ম্বনার শিকার হন সাধারণ পাঠক ও দর্শনার্থীরা। মেলায় প্রবেশের ক্ষেত্রেও ছিল বিশৃঙ্খলা। দর্শনার্থী-পাঠকদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকে।

সরেজমিন দেখা যায়, প্যাভিলিয়ন-স্টলগুলোর সামনে দলে দলে তরুণ-তরুণীরা রং-বেরঙের শাড়ি আর পাঞ্জাবি পরে হাঁটছেন, বই দেখছেন। তা ছাড়া মেলায় অনেক তরুণীই আসেন মাথায় ফুলের মুকুট, হাতভর্তি ফুলের মালা নিয়ে। গতকাল আগতদের অনেকেই বই কিনেছেন। শিশুপ্রহরে অভিভাবকদের সঙ্গে এসেছিল শিশুরা। কথা হয় লক্ষ্মীবাজার থেকে আসা তরুণী শিক্ষার্থী তাবাসসুম মিমের সঙ্গে। সে জানায়, ছুটির দিনে সবসময় আসার সুযোগ পাই না। সুযোগ করে আজ (গতকাল) আনন্দের সাজে এসেছি। ছোটবোনসহ এসেছি। মেলায় বই কিনব আর দুজনে ছবি তুলব।

কথা প্রকাশের প্রকাশক ইউনুস বলেন, ছুটির দিনে অনেক মানুষ এসেছে; কিন্তু সেভাবে বিক্রি হয়নি। দর্শনার্থীর বিশাল একটা অংশ কেবল ঘুরে, ছবি তোলে, আড্ডা দিয়ে সময় কাটায়। হাতে বই কেনার প্যাকেট দেখা যায় না। গতকাল তাদের প্রকাশনা থেকে বেশকিছু নতুন বই এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মিলটন কুমার দেবের ইতিহাসধর্মী বই।

অন্যদিকে জলধি প্রকাশনার প্রকাশক নাহিদা আরশাফী বলছেন ভিন্নকথা। তিনি বলেন, আমাদের বিক্রি ভালো হচ্ছে। ধীরে ধীরে মানুষ আসছেন, বই দেখছেন, ক্যাটালগ সংগ্রহ করছেন এবং নির্বাচিত বই নিচ্ছেন। এবারের মেলা নিয়ে আমরা আশাবাদী। বারোমাসি প্রকাশনার প্রকাশক খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, এবার বইমেলায় বিক্রি হচ্ছে আশানুরূপ। আমাদের প্রকাশনায় বাংলা একাডেমি পরিচালক কবি নূরুল হুদার কবিতার বই ‘পূণ্য বাংলা’, তপন বাকচীর ‘সংবাদপত্রের ভাষা ও সাময়িক পত্র পর্যালোচনা’ ও সেলিনা হোসেনের ‘অপেক্ষা’ বইগুলো মেলায় বেশি চলছে। গতকাল মেলায় ৮০টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে বলে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

মেলার মাঠে কথা হয় লেখক জাকিয়া সুলতানা শিল্পীর সঙ্গে। তিনি জানান, গতবারের তুলনায় বইমেলার জায়গা ছোট মনে হচ্ছে। স্টলগুলোর বিন্যাস আগত দর্শনার্থীর জন্য সহায়ক না। এবার আরও নান্দনিকভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে মেলা আঙিনা করা যেত। ধুলাবালি যেভাবে আছে, তাতে মেলার আনন্দকে ক্লান্তিকর করে তুলবে। এ ছাড়া মেলায় প্রবেশের ক্ষেত্রে দেখা যায় নানা রকম বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন পাঠক-লেখক ও দর্শনার্থীরা।

গতকাল ছিল শিশুপ্রহর। সকাল থেকে শিশুদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পরিবারের বড়দের হাত ধরে ছুটির দিন বইমেলায় ঘুরতে এসেছে আবিদা। শিশুচত্বরে ঘাস ফড়িং প্রকাশনীর স্টল থেকে গল্প ও কমিক্সের বইয়ের পাতা উল্টে-পাল্টে দেখছে। জানতে চাইলে সে বলে, ‘আমি বাবার সঙ্গে আসছি। আজ বাবার অফিস বন্ধ। তাই বাবা আমাকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছেন। গল্পের বই কিনেছি দুটি। এখন বাবাকে বলছি আরেকটি কমিক্স বই কিনব।’

মেলার শিশুচত্বরে ঘাস ফড়িং প্রকাশনার প্রকাশক শ্যামল কুমার দাস বলেন, প্রথম শুক্রবারের চেয়ে দ্বিতীয় শুক্রবার অনেক লোকসমাগম হয়েছে। বই বিক্রি ও গত দিনের তুলনায় ভালো হয়েছে। জনপ্রিয় শিশুদের টিভি অনুষ্ঠান সিসিমপুরের চরিত্রগুলো সকাল ১১টা থেকে ছিল শিশুচত্বরে।

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন শিশুসাহিত্যিক রিফাত নিগার শাপলা, গবেষক অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান, কবি মাশরুরা লাকী ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ার হোসেন বাদল।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি হারিসুল হক, বায়তুল্লাহ কাদেরী ও আফরোজা সোমা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আজহারুল হক আজাদ, সৈয়দ শহিদুল ইসলাম, সুকান্ত গুপ্ত ও তামান্না সারোয়ার নীপা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুথি পাঠ করেন আবুল বাশার তালুকদার। এ ছাড়া ছিল মো. বশির উদ্দিন মাহমুদের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিশ্বভরা প্রাণ’, সিলেটের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শ্রুতি সিলেট’ ও ড. লীনা তাপসী খানের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

আজ শনিবার অমর একুশে বইমেলার দশম দিন। মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায়। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকবে শিশুপ্রহর।

শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতা

অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে আগামীকাল সকাল ১০টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সাংবাদিকের বাড়িতে চুরি, স্বর্ণালংকারসহ ৫ লাখ টাকার ক্ষতি

৪৫ বছর ভাত না খেয়েও সুস্থ ও সবল বিপ্লব

চেতনানাশক খাইয়ে দুধর্ষ ডাকাতি

রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী ঘোষণা

প্রার্থিতা প্রত্যাহার নিয়ে ছাত্রদলের নির্দেশনা, না মানলে ব্যবস্থা

নারী শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে চাকরি খোয়ালেন বেরোবি সমন্বয়ক

হাওর ও চরাঞ্চলের শিক্ষক বদলির তদবির আসে ওপর থেকে : গণশিক্ষা উপদেষ্টা

জয় স্যুটকেস ভরে টাকা নিয়ে গেছে : হাবিব-উন-নবী সোহেল

২৫ বছর ধরে বাঁশির মায়ায় আটকে আছে শফিকুলের জীবন

একাত্তরেও আ.লীগ পালিয়েছে, এবারও পালিয়ে গেছে : টুকু

১০

একাদশে ভর্তির দ্বিতীয় ধাপের আবেদন শুরু, শেষ হচ্ছে কবে

১১

তিন দিনের মধ্যে সাদাপাথর ফেরত না দিলে ব্যবস্থা

১২

উগান্ডার সঙ্গে ট্রাম্পের চুক্তি, জানা গেল নেপথ্য কারণ

১৩

ইসহাক দারের সঙ্গে কী আলোচনা হলো বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির

১৪

মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু রোববার : রাকসু ট্রেজারার

১৫

পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক অনুষ্ঠিত

১৬

পাথরের জন্য মাইকিং, ডেডলাইন ২৬ আগস্ট

১৭

‘চোখের সামনেই আমার ছেলেটার মৃত্যু হয়েছে’

১৮

তুরাগের চার ওয়ার্ড বিচ্ছিন্নের ষড়যন্ত্র জনগণ মেনে নেবে না : মোস্তফা জামান

১৯

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে আমেরিকান প্রবাসী মিঠুর খাদ্যসামগ্রী বিতরণ

২০
X