বাংলা চলচ্চিত্রের নন্দিত অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার পপি। যিনি ববিতা নামেই সর্বাধিক পরিচিত। সত্তর ও আশির দশকে অদম্য নায়িকা হয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের সাদাকালো পর্দায় আলো ছড়ানো এ অভিনেত্রী এখনো দর্শক-হৃদয়ে অমলিন। আজ ৩০ জুলাই তার জন্মদিন।
১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই তৎকালীন যশোরে (বর্তমান বাগেরহাট) জন্মগ্রহণ করেন ববিতা। তার প্রকৃত নাম ফরিদা আক্তার পপি। কিন্তু চলচ্চিত্রে আসার পর পরিচিতি পেয়েছেন ববিতা নামে। পৈতৃক বাড়ি যশোরে হলেও বাবার চাকরির সুবাদে বাগেরহাটে থাকতেন তারা। বলা যায়, পারিবারিকভাবেই তারা অভিনয়শিল্পী গোষ্ঠী। কারণ তার বড় বোন সুচন্দা এবং ছোট বোন চম্পা বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। এ ছাড়া জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানী তার ভাগ্নে এবং সেই সূত্রে মৌসুমী তার ভাগ্নের বউ। আবার চিত্রনায়ক রিয়াজ তার চাচাতো ভাই এবং নির্মাতা জহির রায়হান তার ভগ্নিপতি।
এদিকে জন্মদিনটি এবার তাকে দেশেই কাটাতে হচ্ছে। গত ২৩ জুলাই কানাডা চলে যাওয়ার কথা ছিল ববিতার। কিন্তু দ্বিতীয়বারের মতো করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে তিনি এবার নির্ধারিত সময়ে কানাডা যেতে পারেননি। হাসপাতালে দুদিন থাকতে হয়েছিল তাকে। তাই এবার ছেলে অনিকের সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন করা হচ্ছে না। তবে ববিতা জানান, শরীরটা একটু ভালো অনুভব করলেই তিনি কানাডার উদ্দেশে রওনা হবেন।
ববিতা বলেন, ‘জন্মদিন তো আসলে সেভাবে উদযাপন করা হয় না। এবার অনিক বলেছিল জন্মদিনে আমাকে নানান ধরনের সারপ্রাইজ দেবে। কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না। তাই ঢাকায় নিজের বাসাতেই জন্মদিনের পুরোটা প্রহর কাটবে। আমার বড় বোন ও ছোট বোনসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তো আছেই। সবার কাছে দোয়া চাই যেন আল্লাহ সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন। আর গেল বছর ডালাসে ববিতা দিবসের যাত্রা শুরুর মধ্য দিয়ে আমাকে এবং আমার প্রিয় বাংলাদেশকে যে সম্মাননা জানানো হলো, তাতে সত্যিই আমি ভীষণ গর্বিত, ভীষণ আনন্দিত। এ সম্মান শুধু আমাকেই নয়, এ সম্মান বাংলাদেশকেও প্রদর্শন করা হয়েছে। সত্যি আমি কোনোদিন কখনো কল্পনা করিনি জীবনে এমন মুহূর্ত আসবে। জীবনে এমনই কিছু মুহূর্ত আসে, যা জীবনের জন্য আশীর্বাদ হয়েই আসে। এটা সত্যি, এমন প্রাপ্তিও যে জীবনে অপেক্ষা করছে, তাও জানার বা বোঝার মধ্যে ছিল না। এই সম্মান আমার জীবনে পরিপূর্ণতা এনে দিয়েছে। জীবন যেন আরও অর্থবহ হয়ে উঠেছে।’
ববিতা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নায়িকা। বহুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ নায়িকা পেয়েছেন আজীবন সম্মাননাও। তিনি প্রায় দেড়শ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য— ‘সুন্দরী’, ‘এক মুঠো ভাত’, ‘অনন্ত প্রেম’, ‘বসুন্ধরা’, ‘সোহাগ’, ‘ফকির মজনুশাহ’, ‘ওয়াদা’, ‘লাঠিয়াল’, ‘কথা দিলাম’, ‘নিশান’, ‘এতিম’, ‘লাইলী মজনু’, ‘দূরদেশ’, ‘মিস লংকা’, ‘ফুলশয্যা’, ‘বীরাঙ্গনা সখিনা’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘বেহুলা লখিন্দর’, ‘ফুলশয্যা’ ইত্যাদি।