ব্র্যাড পিট—সিনেমার ভুবনের এক অশ্বারোহী। যিনি ছুটেই চলেছেন অবিরাম, নিরন্তর। তরুণ বয়স থেকেই নেশা ছিল অভিনয় করার। স্নাতক শেষ না করেই ক্যালিফোর্নিয়া চলে আসেন সিনেপর্দায় ক্যারিয়ার গড়তে। সেখানে ছোটখাটো ভূমিকায় অভিনয় করতে করতেই ১৯৯১ সালে সুযোগ মেলে ‘থেলমা অ্যান্ড লুইস’-এ। সেই মুভিতে এক ড্যাশিং কিন্তু মনোমুগ্ধকর বখাটে চরিত্র দিয়ে বিশ্বকে মাত করে দেন। তখন থেকেই শুরু পথচলা। ধীর হলেও থামেনি কখনো। এবার ২৭ জুন বিশ্বব্যাপী পর্দায় ব্র্যাড পিটের ‘এফ ওয়ান’ মুক্তি পেয়েছে। বিভিন্ন কারণে সিনেমাটি নিয়ে দর্শক আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। পরিপূর্ণ অ্যাকশন-প্যাকড এ সিনেমা, যা ফর্মুলা ওয়ান রেসিংয়ের উত্তেজনাপূর্ণ জগৎ দর্শকদের সামনে তুলে ধরবে। আর এ অ্যাডভেঞ্চার জগতে ব্র্যাড হাজির হয়েছেন এক হার-না-মানা রেসারের ভূমিকা নিয়ে।
রেসিং জগতের সেরা ফর্মুলা ওয়ানের প্রেক্ষাপটে নির্মিত হয়েছে ‘এফ ওয়ান’; এতে ব্র্যাড পিট একজন প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন রেসারের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এর গল্পে দেখা যাবে, সনি হেইস (ব্র্যাড পিট) একজন পঞ্চাশোর্ধ্ব ক্লান্ত রেসিং ড্রাইভার, সেরা দিনগুলো তার অতীত। সুপার ফর্মে থাকার সময় একটি দুর্ঘটনা তার ক্যারিয়ারই শেষ করে দেয়। ছোটখাটো কাজ করেই চলে যায় জীবন। ঘটনাক্রমে আবার ফিরে আসেন রেসিং ট্র্যাকে। মুখোমুখি হন সময়ের সেরা সব রেসারের সঙ্গে। এভাবেই টান টান উত্তেজনা আর রোমাঞ্চকর ঘটনার ভেতর দিয়েই এগিয়ে যায় ‘এফ ওয়ান’।
ট্রেলারে সিনেমাটির রেসিং দৃশ্যগুলো বেশ বাস্তবসম্মত এবং দর্শকদের জন্য একটি ইন্টারেকটিভ অভিজ্ঞতা তৈরি করে। এর ভিজ্যুয়াল এফেক্ট, ক্ষুরধার চিত্রধারণ আর চিত্রায়ণ বেশ সাড়া জাগাবে বলেই ধারণা করছেন চলচ্চিত্রপ্রেমীরা। সিনেমাটিতে শুধু ‘মিস্টার স্মিথ’ ব্র্যাড পিটই নন, আছেন আরেক জনপ্রিয় ব্রিটিশ অভিনেতা ড্যামসন ইদ্রিস।
সিনেমাটিতে তাদের দুজনের এ দ্বৈরথ ‘টার্বো-চার্জড’ ও ‘অ্যাড্রেনালাইন-ফুয়েলড’ অভিজ্ঞতা এনে দেবে দর্শকের হৃদয়ে। সিনেবোদ্ধাদের রিভিউতে ‘এফ ওয়ান’ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হলেও অনেকেই এর গল্পকে কিছুটা অনুমাননির্ভর হিসেবেই দেখেছেন।
ব্র্যাড পিট বরাবরই চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসেন। তার প্রতিটি সিনেমায় থাকে ধুন্ধুমার অ্যাকশন আর স্ট্যান্ট। সিনেমার পর্দায় কখনো তিনি থ্রিলিং হিরো, কখনো গোয়েন্দা-পুলিশ, কখনো এক বিকৃত-মস্তিষ্কের অসন্তুষ্ট মানুষ, কখনোবা রোমান্টিক সুপুরুষ—আসলে কাহিনি আর চরিত্রের সঙ্গে মিলিয়ে নিজেকে সবসময় গড়েছেন, ভেঙেছেন। এই অনন্য গুণাবলি আর চরিত্রের প্রতি আবেগ ব্র্যাড পিটকে নিয়ে গেছে কিংবদন্তির কাতারে। তার ‘ভ্যাম্পায়ার’, ‘ফাইট ক্লাব’, ‘ফ্যান্টাসি’ কিংবা ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ’ এখনো দর্শকহৃদয়ে রোমাঞ্চ জাগায়। ওশানস ট্রিলজিতে অনবদ্য অভিনয় হলিউড অঙ্গনে ব্র্যাড পিটকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী করে তোলে। তিনি ১৯৯৫ সালে গোল্ডেন গ্লোব জিতেছিলেন। বেশ কয়েকবার অস্কারে মনোনীত হলেও সেই পুরস্কার তার ভাগ্যে জোটেনি। এবার ‘এফ ওয়ান’ সিনেমা দিয়ে তাকে নতুনভাবে দেখতে পাবেন ভক্তরা।
এ সিনেমায় গান গেয়েছেন ব্ল্যাকপিঙ্ক তারকা রোজে। এ ছাড়া এড শিরানও কণ্ঠ দিয়েছেন। জোসেফ কোসিনস্কির পরিচালনায় এ স্পোর্টস ড্রামায় মধ্যবয়সী রেসারের সঙ্গে অন্য তরুণ রেসারদের ময়দানি লড়াই কেমন হবে, কে জিতবে—সব উত্তর পাওয়া যাবে পর্দায় দেখার পরই।
মন্তব্য করুন