

দেশের ছোট ও বড় পর্দার ব্যস্ততম অভিনেত্রী সুষমা সরকার যেন প্রতিটি চরিত্রেই নতুন করে জন্ম নেন। কখনো আবেগঘন নাটকের সংবেদনশীল নারী, কখনো আবার রুপালি পর্দায় সাহসী উপস্থিতি—সব জায়গায়ই তিনি দর্শককে তাক লাগিয়ে দেন তার অভিনয়ের দক্ষতায়। সাম্প্রতিক ব্যস্ততা ও নতুন কাজ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন কালবেলার সঙ্গে। লিখেছেন তামজিদ হোসেন
বর্তমানে ব্যস্ততা কী নিয়ে?
বর্তমানে ধারাবাহিক নিয়ে আমার ব্যস্ততা বেশি, পাশাপাশি মঞ্চ নাটক এবং একক নাটকের কাজ চলছে।
মঞ্চ দিয়েই তো আপনার অভিনয়ের যাত্রা শুরু, গল্পটা জানতে চাই…
মঞ্চ এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে আমার অভিনয়ের যাত্রা শুরু হয়। শুরুর গল্পটা আমি তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রামা অ্যান্ড ড্রামাটিক্সে (নাটক ও নাট্যতত্ত্ব) পড়ি। তখন ‘সাদা মেঘের বৃষ্টি’ নামে একটা ধারাবাহিক প্রকাশ পায় যেখানে আমার বিপরীতে ছিলেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। ওটা ছিল আমার প্রথম ধারাবাহিক। এ ছাড়া এর আগে ওই সময় মোর্শেদুল ইসলামের একটা ডকু ড্রামাতে আমি একক অভিনয় করেছিলাম আর ওটাই বলতে গেলে আমার ক্যামেরার সামনের শুরু।
মিডিয়ায় কাজের ইচ্ছা হলো যেভাবে…
আসলে আমি কখনো কল্পনাই করিনি যে, আমি মিডিয়ায় কাজ করব বা অভিনেত্রী হব। এটা আমার স্বপ্নেও ছিল না। আমার ইচ্ছা ছিল বিমানবালা হওয়ার। কিন্তু যখন আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ড্রামা অ্যান্ড ড্রামাটিক্সে ভর্তি হই, তখন আমার নাটকের প্রতি ভালোবাসা জন্মে। তখন থেকে আমি মঞ্চে কাজ করছি; কিন্তু যখন জয়া আপা এবং এটিএম শামসুজ্জামানের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েছি, তখন আমার ভরসা ছিল নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম ভাইয়ের ওপর। কারণ তিনি অভিনয়টা ভেতর থেকে ফুটিয়ে তুলতে পারেন ক্যামেরার সামনে। তবে আমি যেহেতু মঞ্চ থেকে উঠে এসেছি, তখন একটু কষ্ট হতো। কারণ মঞ্চ এবং টেলিভিশন নাটকে ডায়ালগ দেওয়ার বিষয়টা একটু ভিন্ন ছিল। প্রথম দিকে এটা নিয়েই একটু ভয় ছিল।
একটা কথা প্রচলন রয়েছে—যে শিল্পী মঞ্চে ভালো অভিনয় করে, সে পর্দাতেও ভালো অভিনয় করে। একজন শিল্পীর জন্য মঞ্চ কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
মঞ্চে ভালো অভিনয় করলেই ভালো অভিনয় শিল্পী হতে পারে কি না, সেটা আমি বলতে পারব না, কারণ মঞ্চ এবং টেলিভিশন অভিনয় পুরোপুরি আলাদা বিষয়। দেখেন আমাদের দেশে এমন অনেক গুণী অভিনেতা-অভিনেত্রী আছেন, যারা মঞ্চে দারুণ অভিনয় করেন; কিন্তু টেলিভিশনে তারা ভালো অভিনয় করতে পারেননি। তবে হ্যাঁ, মঞ্চ একজন অভিনয় শিল্পীকে ডিসিপ্লিন শেখায়।
এখন পর্যন্ত অনেক কাজ করেছেন আপনি। এর মধ্যে নিজের কোন কাজগুলো আপনার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে মনে হয়?
আসলে সব কাজ ভালো লাগে বলেই তো করে থাকি। তবে এ ক্ষেত্রে আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট ছিল ‘বর্ণে গন্ধে ছন্দে’ গানে নারী নির্যাতনের ওপর একটা টিভিসি হয়েছিল সেটা। ওটা যখন অন এয়ারে যায়, তখন এটি অনেক সাড়া ফেলে এবং আমার ক্যারিয়ারে একটা টার্নিং পয়েন্ট আসে।
আপনার অভিনয় জীবনের জার্নি নিয়ে জানতে চাই…
অভিনয় জীবনে সংগ্রাম তো সবারই থাকে। তবে আমার অভিনয় জীবনের জার্নিটা একইরকম ছিল। খুব বেশি আলোচনায় ছিলাম, আবার আলোচনার বাইরেও যাইনি। আমার জার্নিটা ছিল মাঝামাঝি পর্যায়ে। তবে বর্তমানে কাজের পরিমাণটা বেড়েছে।
আপনি এখনো সিনেমায় কাজ করেননি, সুযোগ হলে যে চরিত্রে কাজ করতে চান…
আমি তো এখনো কোনো সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করিনি। যে কোনো কেন্দ্রীয় চরিত্রে আমি অভিনয় করতে প্রস্তুত। তবে বলিউড অভিনেত্রী রানি মুখার্জির একটা সিনেমা আছে ‘ব্ল্যাক’ সেই সিনেমার প্রধান চরিত্রটি আমার খুব পছন্দের। ওটা দেখে মনে হয়েছিল, যদি এমন একটা সিনেমায় অভিনয় করতে পারতাম। এরকম অসংখ্য সিনেমা আছে যেগুলো দেখে মনে হয় যে, ওই চরিত্রে অভিনয় করতে পারলে ইচ্ছাপূরণ হতো।
মন্তব্য করুন