

ফেনীতে জলাতঙ্কের টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। বিনামূল্যের এ টিকা না থাকায় বাধ্য হয়েই ফার্মেসি থেকে কিনছেন রোগীরা। টিকার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগে চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও কবে নাগাদ এ সংকট কাটবে এ তথ্য জানা নেই সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, জেলাবাসীর একমাত্র ভরসাস্থল ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে গত প্রায় তিন মাস ধরে জলাতঙ্ক টিকার সরবরাহ নেই। উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও একই চিত্র বিরাজ করছে। জেলায় পোষা প্রাণী ও কুকুরের আক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় জলাতঙ্ক ভ্যাকসিনের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা অনুযায়ী ভ্যাকসিন না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রোগীরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, গত সেপ্টেম্বর মাসে সর্বশেষ ৫০০ টিকা পাওয়া যায়। এরপর টিকার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। শুধু নভেম্বর মাসে ৬৫৩ টিকা কিনে ২ হাজার ৬১২ ব্যক্তি শরীরে পুশ করা হয়েছে।
রোগীরা জানান, সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় ফার্মেসি থেকে ৫০০ টাকায় কিনে হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রে এসে পুশ করছেন তারা। প্রতিদিন শতাধিক রোগী এ সেবা নিতে এসে ভোগান্তি শিকার হচ্ছেন। জরুরি ও ব্যয়বহুল এ টিকাটি দ্রুত সরবরাহের দাবি জানান তারা।
জনস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের মতে, জলাতঙ্ক প্রতিরোধে দুই ধরনের টিকা দেওয়া হয়। কুকুর, বিড়াল, শেয়াল বা বেজি কিংবা পোষ্য প্রাণীর কামড়ে গভীর ক্ষত হলে ও রক্ত গড়িয়ে পড়লে এআরভি (অ্যান্টির্যাবিক্স ভ্যাকসিন) ও আরআইজি (র্যাবিক্স ইমুনো গুবুলিন) টিকা দিতে হয়। এছাড়া লেহন, আঁচড় বা ঘর্ষণের জন্য শুধু এআরভি দিলেই হয়।
দাগনভূঞা উপজেলা থেকে আসা নুর করিম আজিম কালবেলাকে বলেন, আমাকে বিড়াল কামড় দিয়েছে। ক্ষতস্থান দিয়ে রক্ত পড়ায় আমি জলাতঙ্কের টিকার নিতে এসেছি। এখানে এসে শুনি টিকা নাই। পরে বাধ্য হয়ে ফার্মেসি থেকে কিনে এনে পুশ করেছি।
ফেনী সদর হাসপাতালের টিকাদানকারী জাহিদ হোসেন কালবেলাকে বলেন, টিকার সরবরাহ না থাকায় জলাতঙ্ক রোগীদের দেওয়া যাচ্ছে না। তবে কেউ ফার্মেসি থেকে কিনে এনে দিলে তিনি তা পুশ করে দিচ্ছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহী উদ্দিন আহমেদ কালবেলাকে বলেন, জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। চাহিদাপত্র পাঠিয়েও ভ্যাকসিন মিলছে না। আশা করি শিগগির ভ্যাকসিন এসে পৌঁছাবে। আগে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা ভ্যাকসিন সরবরাহ করলেও বর্তমানে ওনারা সরবরাহ না করায় সংকট দেখা দিয়েছে।
ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. রুবাইয়াত বিন করিম কালবেলাকে বলেন, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা স্থগিত থাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে টিকাগুলো ক্রয় বিলম্বিত হচ্ছে। বর্তমানে আমরা স্থানীয়ভাবে টিকা ক্রয় করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
মন্তব্য করুন