একটি অডিও রেকর্ডকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থানে অভিনেতা ডি এ তায়েব ও চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন। কালবেলার কাছে আসা অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, ইমনকে শাসাচ্ছেন তায়েব। একটি সিনেমা কেন্দ্র করেই দুজনের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। তায়েব বলছিলেন, ‘ইমন তোমাকে আমি কাস্টিং করি নাই। তোমার চুক্তিপত্র থাকলে শো অফ কর। আদার ওয়াইজ কিন্তু বিপদে পড়বা। এইটা ওই মুরাদের অডিও না (সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান) বি কেয়ার ফুল। তোমার কারণে মাহি কাজ করে নাই। আমি কখনোই চাইনি তোমাকে নিয়ে এই মুভিতে কাজ করব বা ওয়েব সিরিজে। তুমি যে ইন্টারভিউ দিয়েছ তা অত্যন্ত খারাপ। আমি ধরলে কিন্তু পইচা যাইবা। তোমার পেছনে যত বড় ব্যাকিং থাকুক কোনো লাভ নাই। একবার একটা কাজ কইরা তুমি সর্বনাশ করছ মাহির (নায়িকা মাহিয়া মাহি)। একজন মন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব চইলা গেছে তোমার ইনটেনশনালি মোবাইল ফোন ধরিয়ে দেওয়ার কারণে। এটা আমরা সবাই জানি। তুমি ভদ্র তাই চুপচাপ ছিলাম। তোমার মা হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছ সেটা ফেরত দিবা। তোমার কী চুক্তি আছে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নাও। নেভার-এভার আমার প্রডিউসার বা প্রতিষ্ঠান তোমাকে নেয়নি। মাইন্ড ইট’।
অডিও রেকর্ডের সূত্র ধরে কালবেলার অনুসন্ধানে খোঁজ মেলে, গত ১৯ জানুয়ারি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কাগজের বউ’ সিনেমা নিয়ে তায়েব-ইমনের দ্বন্দ্ব। আর্থিক লেনদেন নিয়েও সমস্যা ছিল দুজনের। চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত সিনেমাতে তায়েব-ইমনের সঙ্গে অভিনয় করেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। মাত্র আটটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি আলোচনায় আসতে পারেনি।
এদিকে ডি এ তায়েবের অডিও রেকর্ড নিয়ে প্রশ্ন করতেই শুরুতে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চান। অবশেষে কালবেলা বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দেন এই নায়ক। ইমন বলেন, এখানে মাহির কথা কেন আসছে বুঝলাম না। মাহিকে নিয়ে এই সিনেমায় কাজের কোনো কথাই হয়নি। তায়েব ভাইকে আমি সম্মান করি। তার সঙ্গে যতবার দেখা হয়েছে আমরা সুন্দরভাবেই কথা বলেছি।
তিনি আরও বলেন, ‘কাগজের বউ’ সিনেমা নিয়ে আমি কাউকেই কিছু বলিনি। কারণ এটি প্রথমে ওয়েব ফিল্ম ছিল। আমি সেভাবেই কাজটি করি। কিন্তু তারা সেন্সর করিয়ে সিনেমা হলে মুক্তি দেন। না হলে এমন চরিত্রে তো আমার অভিনয় করার কথা না। আমি একক নায়ক হিসেবেই কাজ করছি। আমাকে ওয়েব ফিল্মেরই পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছিল। সিনেমার জন্য আমি যে পারিশ্রমিক নিই তার চেয়ে অনেক কম টাকায় কাজটি করেছি। ওয়েব ফিল্ম আর সিনেমা তো এক জিনিস না।
আক্ষেপ করে ইমন বলেন, দেখুন আমি এই সিনেমা নিয়ে কোথাও সাক্ষাৎকার দিইনি। একটা পত্রিকায় কথা বলেছিলাম। এটি নিয়ে তায়েব ভাই রেগে গেছেন। তার (তায়েব) সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক। তার ফ্যান ক্লাবের অনুষ্ঠানেও আমি গেছি। এরকম অনুষ্ঠানে আমি কখনোই যাই না। ৫০ হাজার টাকা পান বলে তিনি দাবি করেছেন। আমি তার কাছে ধার নিতে যাব কেন। আমি তো এমনিতেই তার কাছে টাকা পাই। আমি জানতাম উনিই ওয়েব ফিল্মটির প্রযোজক। তাকেই শুরু থেকে সব কিছু করতে দেখেছি। আমাকে তার এক সহকারী ৫০ হাজার টাকা দিয়ে কাগজে সই নিতে এসেছিল। যেখানে ‘ধার’ শব্দ লিখা ছিল। যেটি আমি নিজেই কেটে দিয়েছিলাম। আমি তার কাছে ধার নিতে যাব কেন। ভেতরে অনেক ঘটনা ছিল, আমি কাউকেই বলিনি। কোনো সাংবাদিককেও না। আজকে আপনার প্রশ্নের কারণে আর অডিও রেকর্ড সামনে আসার জন্য কথাগুলো বললাম।