সাতক্ষীরার চিকিৎসা ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। প্রথমবারের মতো অত্যন্ত জটিল একটি স্পাইন সার্জারি বা মেরুদণ্ডের অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে এ অপারেশনটি সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে খুলনা বিভাগের কোনো সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এত বড় মেরুদণ্ডের অপারেশন হয়নি বলে জানিয়েছেন সামেক কর্তৃপক্ষ।
এই অপারেশনটির নেতৃত্ব দেন খুলনা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক (স্পাইন সার্জারি) ডা. মো. মাহমুদুল হাসান (পলাশ), তিনি বর্তমানে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে সংযুক্ত আছেন।
অপারেশন পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় রোগী আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনি সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে আনসার সদস্য হিসেবে কর্মরত। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে পড়ে গিয়ে আমার মেরুদণ্ডের একটি হাড় ভেঙে যায় এবং আরেকটি হাড়ের ভেতরে ছিদ্র হয়। তখন আমি ভেবেছিলাম হয়তো আর স্বাভাবিকভাবে চলতে-ফিরতে পারব না। কিন্তু আমার অসুস্থতার খবর পেয়ে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসে।
তিনি জানান, শনিবার সকাল ১০টা থেকে টানা পাঁচ ঘণ্টা ধরে অপারেশন করেন ডা. পলাশ। আল্লাহর রহমতে এবং ডাক্তারদের আন্তরিক চেষ্টায় আমি নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। আমি মনে করি, সাতক্ষীরার মানুষের জন্য এটি আশার আলো।
অপারেশন শেষে ডা. পলাশ বলেন, সব প্রশংসা মহান আল্লাহর, যিনি আমাকে এই কাজ করার সামর্থ্য দিয়েছেন। এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. মো. রুহুল কুদ্দুছ, হাসপাতালের পরিচালক ডা. কুদরত-ই-খুদা এবং অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধানের আন্তরিক সহযোগিতা ও উৎসাহের কারণে।
এদিকে, ঝুঁকিপূর্ণ এ অপারেশনে অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ডা. মুক্তাদির তামিম। এ ছাড়া মেডিকেলের অন্য অভিজ্ঞ চিকিৎসকরাও সহযোগিতা করেন। চিকিৎসকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অপারেশনটি সফল হয়।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. কুদরত-ই-খুদা বলেন, এ সাফল্য শুধু একজন রোগীর জীবনই বাঁচায়নি, বরং সাতক্ষীরার চিকিৎসা ব্যবস্থায় নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, খুলনা বিভাগের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোও এখন জটিল রোগীদের উন্নত চিকিৎসা দিতে সক্ষম।
মন্তব্য করুন