ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবদুস শহিদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন।
রোববার (২৪ আগস্ট) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এ স্মরণসভায় সাংবাদিক নেতারা বলেন, ‘আবদুস শহিদ গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনো আপস করেননি। সাংবাদিকদের রুটি-রুজির প্রশ্নেও তিনি ছিলেন সোচ্চার।’
স্মরণসভার শুরুতে আব্দুস শহিদ ও গতকাল প্রয়াত নয়াদিগন্ত সম্পাদক, বর্ষীয়ান সাংবাদিক আলমগীর মহিউদ্দিনের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
ডিইউজের সভাপতি মো. শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, দ্য নিউ নেশনের সাবেক এডিটর মোস্তফা কামাল মজুমদার, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ বাকের হোসাইন, বিএফইউজের সহসভাপতি খায়রুল বাশার, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম মহসিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি রফিক মুহাম্মদ ও রাশেদুল হক, আবু বকর, সিনিয়র সাংবাদিক শাহ মনওয়ার জাহান কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিক আবদুস শহিদ ছিলেন অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ। সারাজীবন সাহসিকতার সঙ্গে সাংবাদিকতা করেছেন। দেশ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে তিনি কখনো আপস করেননি। ওপার থেকে সংসদ সদস্যের স্থলে সাংসদ, মরহুমের স্থলে প্রয়াত, কবরের স্থলে সমাধি বর্তমান সব শব্দ আমদানি শুরু হয় তখন তিনি এর কট্টর বিরোধীরা করেন। আমাদের ওপারের এসব শব্দ লিখতে দিতেন না। এ সময়ের তরুণ সাংবাদিকদের আদর্শবান সাংবাদিক হতে নীতিনৈতিকতা ও আদর্শকে ধারণ করতে তাকে স্মরণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দলীয় রাজনীতির প্রভাবে সাংবাদিক সমাজ আজ বিভক্ত। সে কারণে আবদুস শহিদরা যে ভূমিকা রেখেছিলেন, এখন তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যাচ্ছে না। এতে যেমন সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকতার মান নিম্নগামী হয়েছে, তেমনি সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত ক্ষেত্রেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এই দ্বিধাবিভক্তির কারণে সাংবাদিকরা যথার্থ ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারছেন না।’
মোস্তফা কামাল মজুমদার বলেন, ‘আবদুস শহিদ সত্য কথা বলতে ভীত ছিলেন না। কারাবরণ করেছেন, চাকরিচ্যুত হয়েছেন, কিন্তু সত্য প্রকাশে আপস করেননি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য তার এই আপসহীন ভূমিকা তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।’
শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিক আবদুস শহিদ পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো জীবনযাপনের জন্য নিজের কাজকে সীমিত করেননি। তিনি সর্বসাধারণের কল্যাণে কাজ করেছেন। এ জন্য ব্যক্তিস্বার্থ ত্যাগ করতেও দ্বিধা করেননি তিনি। সাহসিকতার সঙ্গে তিনি সত্য প্রকাশ করেছেন, সততা ও আপসহীনতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’
খুরশীদ আলম বলেন, ‘আবদুস শহিদ ছিলেন সাচ্চা জাতীয়তাবাদী। তিনি সৎ ও সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। একজন নিষ্ঠাবান, দায়িত্বশীল ও কাজপাগল সাংবাদিক ছিলেন। তিনি চৌকস ফোরাম লিডার ছিলেন। তিনি অকপটে সত্য কথা বলতে পারতেন।’
বাকের হোসাইন বলেন, ‘আবদুস শহিদ খুব লিবারেল মানুষ ছিলেন। কোনো বিরোধ চরমপর্যায়ে নিয়ে যেতেন না। তাই তাকে বলতাম আপসকামী মানুষ। মোট কথায় তিনি অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান মানুষ ছিলেন। তিনি ডিইউজের কোনো বলয়ের নেতা ছিলেন না। তিনি সবার নেতা ছিলেন।’
মন্তব্য করুন