দেশের ৫৪তম জাতীয় বাজেট আজ বিকেলে ঘোষণা করা হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ পেশ করবেন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের বাজেটের আকার হবে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হতে পারে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬০৮ কোটি এবং পরিচালন ব্যয় ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা।
কিন্তু প্রশ্ন হলো—এই বাজেট দেওয়ার দরকারটাই বা কী?
বাজেট কী?
সরল ভাষায়, বাজেট মানে হলো—সরকার এক বছরে কত টাকা আয় করতে চায়, আর সেই টাকা কোন কোন খাতে খরচ করবে—তার লিখিত পরিকল্পনা। এটি শুধু আয়-ব্যয়ের খসড়া নয়, বরং একটি দেশের আর্থিক দিকনির্দেশনাও।
বাজেট ছাড়া চলবে না কেন?
কারণ, কোনো দেশ ঠিকঠাকভাবে পরিচালনা করতে হলে, তার আয়-ব্যয়ের আগাম পরিকল্পনা থাকাটা জরুরি। সরকারি অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, রাস্তা-ঘাট, সেতু, বিদ্যুৎ প্রকল্প—সবকিছুতেই অর্থ খরচ হয়। আর সেই খরচের উৎস কোথা থেকে আসবে, তা বাজেটেই নির্ধারিত হয়।
বাজেট দিলে কী সুবিধা হয়?
বাজেটের ধরন ও প্রয়োগ
বাজেট প্রধানত দুই ধরনের হয়:
বাজেটের কাঠামো আবার তিনভাবে হতে পারে:
উন্নয়নশীল দেশের জন্য ঘাটতি বাজেট খুব সাধারণ ব্যাপার। কারণ, অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য অনেক সময় খরচ হয় বেশি, আয় হয় কম।
বাজেট না দিলে কী হতো?
ভাবুন তো, আপনি বাড়ির মাসিক আয়-ব্যয়ের হিসাব না করে চলেন। এক মাসের শেষে দেখলেন, টাকা শেষ! তখন আপনি হয় ধার করবেন, না হয় খরচ কমাবেন। একইভাবে রাষ্ট্র যদি পরিকল্পনাহীনভাবে আয়-ব্যয় করে, তাহলে ঋণের বোঝা বাড়বে, উন্নয়ন ব্যাহত হবে এবং অর্থনীতি হবে অস্থির।
সংবিধানে বাজেটের গুরুত্ব
বাংলাদেশের সংবিধানে বাজেটকে বলা হয়েছে ‘বার্ষিক আর্থিক বিবরণী’। এটি সংসদে উপস্থাপন ও অনুমোদনের মাধ্যমে কার্যকর হয়। অর্থাৎ, এটি কেবল একটি আর্থিক পরিকল্পনা নয়—রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব ও গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।
শেষ কথা হলো, বাজেট হলো রাষ্ট্র পরিচালনার ‘গাইডলাইন’। এটি না থাকলে সরকার জানত না—কোথা থেকে টাকা আনবে, কোথায় খরচ করবে। জনগণ জানত না—সরকার কীভাবে দেশের টাকা ব্যবহার করছে। তাই বাজেট শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক স্বচ্ছতার প্রতীকও।
মন্তব্য করুন