

শীতকালে হাত-পা ঠান্ডা হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু মোজা পরার পরও যদি পা বরফের মতো ঠান্ডা থাকে, তাহলে বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়া ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বারবার এমন হলে তা শরীরের ভেতরের একটি গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
অনেকে হাত-পা ঠান্ডা থাকাকে সাধারণ সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যান। তবে চিকিৎসকদের সতর্কবার্তা— এই উপসর্গ দীর্ঘদিন চললে তা হতে পারে রক্ত সঞ্চালনের সমস্যার ইঙ্গিত।
ঠান্ডা আবহাওয়ায় পা ঠান্ডা হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যা হয় যখন রক্ত ঠিকভাবে পায়ে পৌঁছাতে পারে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) বেড়ে গেলে ধমনির ভেতরে চর্বি জমে যায়। এতে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।
এই অবস্থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ (PAD)। এতে পায়ের ধমনি সংকুচিত হয়ে যায় এবং পর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন পায়ে পৌঁছাতে পারে না। ফলে পা সব সময় ঠান্ডা লাগে।
PAD হলে শুধু ঠান্ডা লাগাই নয়, আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে—
- হাঁটার সময় পায়ে ব্যথা
- পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরা বা অবশ ভাব
- পা দুর্বল লাগা
- পায়ের ক্ষত সহজে না শুকানো
চিকিৎসা না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। এমনকি মারাত্মক ক্ষেত্রে গ্যাংগ্রিনের ঝুঁকিও তৈরি হয়।
চিকিৎসকদের মতে, এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি—
- ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের
- ডায়াবেটিস রোগীদের
- উচ্চ রক্তচাপ ও হাই কোলেস্টেরল থাকলে
- ধূমপান বা তামাক সেবনকারীদের
- অতিরিক্ত ওজন থাকলে
- যাদের পরিবারে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ইতিহাস আছে
দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসও ঝুঁকি বাড়ায়।
পায়ে বারবার ঠান্ডা লাগা বা অবশ ভাব হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি—
- ধূমপান সম্পূর্ণ বন্ধ করুন
- নিয়মিত হাঁটা ও হালকা ব্যায়াম করুন
- ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- কম তেল-চর্বিযুক্ত খাবার খান
- অতিরিক্ত লবণ ও চিনি এড়িয়ে চলুন
- পায়ে ক্ষত বা রঙ পরিবর্তন হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান
বিশেষজ্ঞদের মতে, সময়মতো সচেতন হলে এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে PAD নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং বড় জটিলতা এড়ানো যায়।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন