জুলাই আন্দোলনে হামলার ঘটনার প্রায় নয় মাস পর, সেই প্রেক্ষাপটে দায়ের করা একটি প্রশ্নবিদ্ধ মামলার জেরে বরিশাল জেলা শাখার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব মারজুক আব্দুল্লাহর সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) দিবাগত রাতে সংগঠনের বরিশাল জেলা শাখার পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে স্বাক্ষর করেন জেলা আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন সোহাগ, সদস্যসচিব এসএম ওয়াহিদুর রহমান, মুখ্য সংগঠক হাসিবুল আলম তুরান ও মুখপাত্র সুমি হক।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মারজুক আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি বরিশাল জেলা শাখার সাংগঠনিক বৈঠকে আলোচনার পর তার পদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।
ঘটনার পেছনে রয়েছে মারজুকের করা একটি মামলার সূত্র। ১৪ মে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় তিনি নিজে বাদী হয়ে ২৪৭ জন নামধারী এবং প্রায় ৩০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা, স্থানীয় সাংবাদিক, এমনকি জেলে ও কৃষকের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
সংগঠনের দাবি, মারজুক দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় কিংবা জেলা পর্যায়ের কাউকে অবহিত না করে পদ ব্যবহার করে মামলাটি করেছেন। এতে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা লঙ্ঘন হয়েছে। এ কারণে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনি সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় তার পদ স্থগিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জেলা শাখার সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মারজুক আব্দুল্লাহর সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়েছে।
মারজুকের দায়ের করা মামলার তালিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। বাদ ও যোগ করার বিনিময়ে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে, যা অনেকেই চাঁদাবাজি হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। এ প্রসঙ্গে মারজুক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোনো আসামির কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি আরও দাবি করেন, মামলার পর দলের কেন্দ্রীয় নেতারা তার পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন।
মন্তব্য করুন