মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলকেন্দ্রিক মানবিক করিডোর নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান।
বুধবার (২১ মে) দুপুরে রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, করিডোর নিয়ে আমাদের কারও সঙ্গে কোনো কথা হয়নি এবং এ বিষয়ে কারও সঙ্গে কোনো কথা হবে না। আগে করিডোর ব্যাপারটা বুঝতে হবে। করিডোর হচ্ছে, একটা ইমারজেন্সি সময়ে দুর্যোগপূর্ণ জায়গা থেকে মানুষজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, আমরা এখান থেকে কাউকে সরাচ্ছি না। আমরা যেটা করছি সেটা হচ্ছে, যেহেতু আরাকানে সাহায্য সহযোগিতা অন্যান্য সাপ্লাইডোর দিয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তাই জাতিসংঘ আমাদের এইটুকু বলল, আপনারা আমাদের এইটুকু সহযোগিতা করেন যাতে আমরা সাহায্যগুলো এ জায়গা দিয়ে নিয়ে যেতে পারি।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা আরও বলেন, জাতিসংঘ তো গত ছয় থেকে সাত বছর ধরে আমাদের চোখের সামনে রোহিঙ্গাদের সাহায্য দিয়ে যাচ্ছে। তারা বলেছে আপনার আমাদের এইটুকু জায়গাতে সাহায্য করবেন, যাতে করে জাতিসংঘ তার বিভিন্ন সহযোগীদের মাধ্যমে রাখাইনের ভেতরে যে চ্যানেলগুলো আছে সেখানে এসব সহযোগিতা পৌঁছে দিতে পারে।
তিনি বলেন, আপনারা চাইলে খবর নিতে পারেন জাতিসংঘে, আমরা করিডোর নিয়ে কোনো আলোচনা করি নাই। আরাকানে যে অবস্থা সেখানে করিডোরের কোনো প্রয়োজন নেই। করিডোর সৃষ্টি করে লোকজনের যাতায়াতের ব্যবস্থা করার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। সেখানে যে প্রয়োজনীয়তা আছে, সেটা হচ্ছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, আরাকানের পরিস্থিতি যতদিন অস্থিতিশীল থাকবে ততদিন আমরা প্রত্যাবাসনের কথা বলতেই পারব না। প্রত্যাবাসনের পূর্বশর্তে আমরা এখনো আসি নাই। অনেকেই বলছেন, করিডোর নিয়ে আমরা কারও সঙ্গে আলোচনা কেন করিনি? আমি বলতে চাই অস্তিত্ববিহীন বিষয় নিয়ে আমরা কীভাবে আলোচনা করব। যার অস্তিত্ব নাই সেই বিষয়ে কী করে আলোচনা হয় বলেও প্রশ্ন রাখেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
বাংলাদেশে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ত্রাণ পাঠানোর জন্য মানবিক করিডোর সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সরকার বলছে, এ করিডোর শুধু মানবিক উদ্দেশে ব্যবহারের জন্য, কোনো সামরিক বা বাণিজ্যিক কাজে নয়। তবে সমালোচকরা বলছেন, এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।
এর আগে, গত ৪ মে বিইউপি ক্যাম্পাসে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ (এএফডি) ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) আয়োজিত এক সেমিনারে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, আমরা মানবিক করিডোর নিয়ে কোনো আলোচনা করিনি, কোনো চুক্তি বা সমঝোতাও করিনি। এটা মানবিক করিডোর নয়, এটা মানবিক চ্যানেল। করিডোরের সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা আলাদা।
মন্তব্য করুন