গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সেখানে ঠিকমতো খাবার ও সহায়তা পৌঁচ্ছাচ্ছে না। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলছে, গাজার জনগণ এখন ‘দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে’।
জাতিসংঘের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজায় যে অল্প পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশ করছে, তা এই যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার ‘প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য’। জাতিসংঘের মতে, খাদ্য, ওষুধ, পানি, জ্বালানি ও পরিচ্ছন্নতা সামগ্রীর ধারাবাহিক ও পর্যাপ্ত প্রবাহ ছাড়া মানবিক কার্যক্রম কার্যকরভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
একইসঙ্গে, আন্তর্জাতিক রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) জানায়, গাজার প্রায় ৬০ শতাংশ পরিবার ন্যূনতম খাবার, যেমন রুটি ও তাজা খাদ্য পাচ্ছে না। পরিষ্কার পানির অভাবও রয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষের।
বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া নতুন দফার ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯৩ জন নিহত হয়েছে বলে আলজাজিরাকে জানিয়েছে গাজার চিকিৎসা সূত্র। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫৩ হাজার ৬৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১ লাখ ২১ হাজার ৯৫০ জন আহত হয়েছেন। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজারো মানুষ এখনো নিখোঁজ এবং মৃত হিসেবে ধরা হলে মোট মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।
এর বিপরীতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলায় ইসরায়েলে নিহত হন ১ হাজার ১৩৯ জন এবং দুই শতাধিক ব্যক্তি বন্দি হন, যার মধ্যে এখনও অনেকে গাজায় আটকে রয়েছেন।
এ প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে ইসরায়েলের ওপর। যুক্তরাজ্য, কাতার, ইতালি, কানাডা, পর্তুগালসহ একাধিক দেশ ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড, যেমন জেনিনে বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর গুলিবর্ষণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও পূর্ণমাত্রায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ না করলে গাজায় একটি পূর্ণাঙ্গ মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।
মন্তব্য করুন