পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের খুজদার শহরে একটি স্কুল বাসে ভয়াবহ বোমা হামলায় চার শিশুসহ অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছে। নৃশংস এই হামলায় আহত হয়েছে আরও ৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থী। বুধবার (২১ মে) সকালে ঘটা এই সন্ত্রাসী হামলায় ভারতকে অভিযুক্ত করছে ইসলামাবাদ। তবে পাকিস্তানের এই অভিযোগ কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘খুজদারে ঘটে যাওয়া ঘটনার সঙ্গে ভারতের জড়িত থাকার যে অভিযোগ পাকিস্তান করেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।’
জয়সওয়াল বলেন, ভারত সব ধরনের সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করে। কিন্তু পাকিস্তান যেভাবে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে এবং বিশ্ববাসীর দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতে ভারতকে দোষারোপ করছে, তা একটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা। পাকিস্তান বারবার একই কৌশল প্রয়োগ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করতে চায়, কিন্তু এই চেষ্টা ব্যর্থ হতে বাধ্য।
এর আগে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং দেশটির সেনাবাহিনী এই হামলার জন্য ভারতের ‘সন্ত্রাসী প্রোক্সি’-দের দায়ী করে। যদিও এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই কাপুরুষোচিত এবং ঘৃণ্য হামলাটি ভারতের সন্ত্রাসী রাষ্ট্রনীতির অংশ, যা তাদের প্রোক্সি গোষ্ঠীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল নিরীহ স্কুলগামী শিশুদের বহনকারী একটি বাস। ভারতীয় মদদপুষ্ট হামলার পরিকল্পনাকারী, সহযোগী ও বাস্তবায়নকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, হামলাটি ২০১৪ সালে পেশোয়ারে একটি সামরিক স্কুলে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) দ্বারা চালানো ভয়াবহ হামলার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়, যেখানে ১৩০-রও বেশি শিশু নিহত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বালোচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা বেড়েছে। মার্চ মাসে বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) একটি ট্রেনের রেলপথ ধ্বংস করে, যাত্রীদের জিম্মি করে এবং অন্তত ৩১ জনকে হত্যা করে।
মন্তব্য করুন