ইসরায়েলি অবরোধের মধ্যে গাজায় প্রবেশ করা সামান্য কিছু ত্রাণ ট্রাককে ‘সমুদ্রের এক ফোঁটা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। তাদের মতে, বর্তমানে যে সহায়তা ঢুকছে তা মোটেও যথেষ্ট নয়।
সাংবাদিক গ্যাব্রিয়েল এলিজন্ডোর মতে, বর্তমানে দিনে মাত্র ৯০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে। অথচ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগে ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৬০০টি ট্রাক ঢুকত এই উপত্যকায়।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা জীবন বাঁচাতে যেকোনো পরিমাণ সহায়তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত, কিন্তু বাস্তবতা হলো—এই পরিমাণে ত্রাণ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।
১১ সপ্তাহ ধরে গাজায় ছিল সম্পূর্ণ অবরোধ এবং এখন সেখানে সীমিত সহায়তা ঢুকছে।
বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া নতুন দফার ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯৩ জন নিহত হয়েছে বলে আলজাজিরাকে জানিয়েছে গাজার চিকিৎসা সূত্র। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৫৩ হাজার ৬৫৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১ লাখ ২১ হাজার ৯৫০ জন আহত হয়েছেন। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা হাজারো মানুষ এখনো নিখোঁজ এবং মৃত হিসেবে ধরা হলে মোট মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।
এর বিপরীতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলায় ইসরায়েলে নিহত হন ১ হাজার ১৩৯ জন এবং দুই শতাধিক ব্যক্তি বন্দি হন, যার মধ্যে এখনও অনেকে গাজায় আটকে রয়েছেন।
এ প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে ইসরায়েলের ওপর। যুক্তরাজ্য, কাতার, ইতালি, কানাডা, পর্তুগালসহ একাধিক দেশ ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড, যেমন জেনিনে বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর গুলিবর্ষণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও পূর্ণমাত্রায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ না করলে গাজায় একটি পূর্ণাঙ্গ মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।
মন্তব্য করুন