কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় কোরবানির পশুর স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটগুলোতে পুরোদমে কোরবানির পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। তবে বড় আকারের গরু নিয়ে বিপাকে বিক্রেতারা। বড় আকারের পশুর পাশে দর্শনার্থীর ভিড়। আর ক্রেতারা ছুটে যাচ্ছেন ছোট ও মাঝারি আকারের পশুর কাছে।
বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানির পশুর হাট শুরুর দিকে বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ হাট কাদাযুক্ত হওয়ায় ক্রেতা সংকট ছিল। এখন ক্রেতা বেড়েছে। তবে অধিকাংশ ক্রেতা ঝুঁকছে মাঝারি ও ছোট আকারের পশুর দিকে। বড় পশুর ক্রেতা আশানুরূপ পাওয়া যাচ্ছে না। বড় পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পশু ব্যবসায়ী ও গৃহস্থরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানি উপযোগী গবাদিপশুর পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। চাহিদার চেয়ে পশুর মজুত বেশি।
উপজেলার একাধিক স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি হাট ভরে উঠেছে দেশি জাতের কোরবানি উপযোগী ছোট, মাঝারি ও বড় গরু আর ছাগলে। ক্রেতা বিক্রেতার দর হাঁকাহাঁকিতে সরগরম কোরবানির পশুর হাট। তবে পশুর হাটে ছোট ও মাঝারি আকারের পশুর ক্রেতা বেশি মিলছে। বড় আকারের পশুর পাশে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি দেখা গেছে। বড় পশুর ক্রেতা কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পশু পালনকারী খামারি ও গৃহস্থরা।
কোরবানির পশু বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, মাঝারি ও ছোট আকারের গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে। এবার বড় আকারের গরুর ক্রেতা সংকট। বড় গরুর দাম কেউ কেউ জিজ্ঞেস করছে তবে বিক্রি তেমন একটা হচ্ছে না। বড় গরু নিয়ে আমরা বেকায়দায় পড়েছি।
তবদল হোসেন নামে এক পশু ব্যবসায়ী বলেন, আমি ৯টি গরু নিয়ে হাটে এসেছি। এর মধ্যে দুটি গরু আকারে বড়। বাকিগুলো ছোট ও মাঝারি আকারের। ছোট ও মাঝারি গরুর অধিকাংশই বিক্রি হয়ে গেছে। বড় গরুগুলোর দাম জিজ্ঞেস করলেও প্রকৃত ক্রেতা এখনো পাইনি।
পশু ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া বলেন, যেভাবে পশুর দাম জিজ্ঞেস করা হচ্ছে সে অনুযায়ী ক্রেতা নেই। বিশেষ করে বড় গরুর ক্রেতা একেবারেই কম। বড় গরু বিক্রি নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় পড়েছি। বেশির ভাগ ক্রেতাই মাঝারি ও ছোট আকারের গরুর দিকে ছুটছেন।
হাটে কোরবানির পশু কিনতে আসা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমরা তিন ভাই মিলে কোরবানি দেব। বাজেট বেশি না। তাই মাঝারি আকারের গরু খুঁজছি। কয়েকটি গরু দেখা হয়েছে, এর মধ্যে একটি পছন্দ হয়েছে, তবে দরদামে মিলেনি। আরও গরু দেখছি।
মহিউদ্দিন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, প্রতি বছর একা কোরবানি দেই। এবারও একা কোরবানি দেব। কয়েকটি দরদাম করে ৬৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি ছোট গরু কিনেছি। প্রথম দু-দিন গরুর দাম কম ছিল, এখন দাম বেড়ে গেছে। তাও অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর পশুর দাম কম।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইজমাল হাসান বলেন, প্রতিটি কোরবানির পশুর হাটে এখন পুরোদমে পশু কেনাবেচা চলছে। এবার কোরবানির পশুর হাটে কোরবানি উপযোগী পর্যাপ্ত পশু উঠছে। আমাদের প্রতিনিধিরা প্রতিটি বাজারে অবস্থান করছে। প্রতিটি কোরবানি উপযোগী পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে। এ বছর চাহিদার চেয়েও কোরবানি উপযোগী পশু বেশি রয়েছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহান বলেন, এবার পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। কোরবানির পশুর হাটে জালনোট শনাক্তের মেশিন বসানো হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের লোকজন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পশুর হাটে অবস্থান করছে। উপজেলা প্রশাসন সার্বিক দিক তদারকি করছে।
মন্তব্য করুন