ফেনীর পরশুরামে কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে মানুষ এবারও পড়েছে বিপাকে। বলতে গেলে পানির দরেই বিক্রি হয়েছে পশুর চামড়া। গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা ও ছাগলের চামড়া ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
পরশুরামে বেশ কিছু এলাকায় বড় গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় নেওয়া হয়। ছোট গরুর চামড়া ১০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। চামড়ার বাজারে ধস নামায় বঞ্চিত হয়েছেন দুস্থরা। এতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
পরশুরাম উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য সেলিম সরকার কালবেলাকে জানান, উপজেলায় বেশির ভাগ এলাকায় গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
সত্যনগর গ্রামের আব্দুল খালেক জানান, তিনি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দামের গরু দিয়ে কোরবানি দিয়েছেন। তার গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন মাত্র ২০০ টাকায়।
বক্সমাহমুদ এলাকায় সামছুল আলম জানান, তাদের এলাকায় গত বছরের মতো এবারও কেউ চামড়া কিনতে না যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন নিকটবর্তী মাদ্রাসায় চামড়া দিয়ে দেন।
তিনি আরও জানান, তাদের এলাকায় সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা দরে চামড়া বিক্রির খবর শোনা গেছে।
চিথলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, চিথলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা দরে চামড়া বিক্রির খবর শোনা গেছে। তিনি নিজেও তার কোরবানির পশুর চামড়া ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। তারা ৮১ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনেছিলেন।
পরশুরাম এলাকার অন্যতম চামড়া ব্যবসায়ী তহিদুল ইসলাম জানান, তিনি প্রায় ৪০০ চামড়া কিনেছেন। প্রতি পিস চামড়া ১০০-৩০০ টাকা দরে কিনেছেন। তার সবগুলো চামড়াতে শ্রমিক দিয়ে লবণ যুক্ত করতে হবে। এতে পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের পারিশ্রমিকের কারণে চামড়ার ক্রয়মূল্য বেড়ে যাবে।
জানা যায় চলতি বছর কোরবানির মৌসুমে ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকা। চামড়ার আকার বড় হলে দাম আরও বেশি পাওয়া যাবে।
তবে কোরবানির পরপর সাধারণত লবণ ছাড়া কাঁচা চামড়া বিক্রি হয়। এ ধরনের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় না। ক্রেতা-বিক্রেতারা দর-কষাকষির মাধ্যমে দাম চূড়ান্ত করেন।
বাংলাদেশ পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও সত্য নগরের বাসিন্দা নুরুল আলম কালবেলাকে জানান, তার কোরবানির গরুর চামড়া দেড়শ টাকায় বিক্রি করছেন।
তিনি আরও জানান, প্রতিবছরই কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করা নিয়ে অনেকে বিড়ম্বনায় পড়েন। প্রায়ই অভিযোগ আসে, চামড়ার ভালো দাম পাওয়া যায় না। পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। অতীতে কখনো কখনো উপযুক্ত দাম না পেয়ে চামড়া নিকটতম এতিমখানা দিয়ে দিয়েছেন।
৪-বিজিবির (ফেনী) বেটালিয়ান অধিনায়ক লে. কর্নেল মোশারফ হোসেন কালবেলাকে বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া ভারতে পাচার রোধে বিজিবি কঠোর নজরদারিতে রয়েছে। সীমান্তে নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন