লালমনিরহাটে পুলিশের ধাওয়ায় নৌকা থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে এক মাদক ব্যবসায়ী নিখোঁজের অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাত ৮টা থেকে তাকে উদ্ধারে অভিযানে নদীতে নামে ডুবুরি দল। সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এর আগে রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের মেঘারাম গ্রামের ছয়মাতার ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ যুবক শান্ত রায় (২২) পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডল গ্রামের বিনদ চন্দ্র বর্মনের ছেলে। পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন থেকে শান্ত মাদক ব্যবসায় করে আসছে। সে মাদক মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার গোড়কমন্ডল থেকে মোটরসাইকেলের সিটে গাঁজা ফিটিং করে একটি চক্র মাদক পাচার করে লালমনিরহাটের দিকে আসছে - এমন গোপন খবরে অভিযান চালায় লালমনিরহাট জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল। সকাল থেকে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের মেঘারাম গ্রামে ধরলা নদীসংলগ্ন ছয়মাতার ঘাটে অবস্থান নেয় ডিবি পুলিশ।
পরে দুপুরে নৌকা ঘাটে পৌঁছামাত্র পুলিশ মোটরসাইকেলসহ অমল চন্দ্র নামে এক মাদক বিক্রেতাকে আটক করে চার কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা শান্ত নৌকা থেকে ধরলা নদীতে লাফ দিয়ে কিছু দূর সামনে উঁচু স্থানে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে ধাওয়া দেওয়ার চেষ্টা করলে আবার নদীতে লাফ দেয় শান্ত। এরপর থেকে কোনো খোঁজ মেলেনি তার।
শান্তর ভাই স্বপন অভিযোগ করে বলেন, শান্ত মামার বাড়ি লালমনিরহাট ভাটিবাড়ি যেতে নৌকায় ওঠে। সেই নৌকায় পুলিশের হাতে গাঁজাসহ আটক হয় আমাদের প্রতিবেশী অমল। এটা দেখে ভয়ে সে নদীতে লাফ দিয়ে পাশে উঁচু স্থানে দাঁড়ায় এবং একজন নারীর সহায়তা নিতে চেষ্টা করে। পরে পুলিশ সেখানেও তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধাওয়া দিলে সে পুনরায় লাফ দেয়। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ মেলেনি।
লালমনিরহাট গোয়েন্দা (ডিবি) থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাদ আহমেদ বলেন, ডিবির হাতে আটকের আগেই শান্ত নামে এক যুবক পালিয়ে গেছে। সে নৌকা থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে কি না তা আমরা দেখিনি। আমরা তাকে ধাওয়া দেইনি। নৌকায় অনেক যাত্রী ছিল, কেন সে নৌকা থেকে পালাল। মাদকসহ আটক ব্যক্তির তথ্যমতে পলাতক শান্তও তার সঙ্গী ছিল এবং তার কাছেও মাদক ছিল। সেও মাদক ব্যবসায়ীর চার্জশিটভুক্ত আসামি।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনা তদন্তে তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
মন্তব্য করুন