শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ১১:২২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ভাগ্য বদলে দিল কেঁচো

কেঁচো সার উৎপাদনে ব্যস্ত উদ্যোক্তা। ছবি : কালবেলা
কেঁচো সার উৎপাদনে ব্যস্ত উদ্যোক্তা। ছবি : কালবেলা

কেঁচো নাম শুনলেই গায়ে কাঁটা দেয় এমন কথা বলে থাকেন অনেকই। তবে সেই কেঁচোতে নির্ভর করেই এক তরুণের ভাগ্য বদলে গেছে। শুধু ভালো রোজগার করছেন এমনটাই নয়, এই তরুণ উদ্যোক্তার উৎপাদিত ভার্মিকম্পোষ্ট এতটাই পরিবেশবান্ধব যে তার কেঁচো সার ব্যবহার করে কৃষিতেও লাভবান হচ্ছেন প্রান্তিক চাষিরা।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী নাচনাপাড়া এলাকার কলেজ পড়ুয়া চিন্ময় রায় একজন তরুণ উদ্যোক্তা। কৃষি বিভাগ থেকে এসএসিপির প্রশিক্ষণ পেয়ে শুরুতে স্বল্প পরিসরে শেড তৈরি করেন তিনি।

পরে নিজ গোয়াল থেকেই গরুর কাঁচা গোবর সংগ্রহ করে পদ্ধতিগত মিশ্রণের পর সেখানে ছেড়ে দেন রেড উইগলার প্রজাতির কেঁচো। আর তা থেকেই শুরু হয় এই তরুণের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন।

প্রথমে পরিবারের সহযোগিতায় উৎপাদন শুরু হলেও এখন তার কেঁচো সার উৎপাদন খামারে কাজ করেন চারজন শ্রমিক। আর এখন অন্তত অর্ধশতাধিক শেডেই প্রতিদিন উৎপাদন হচ্ছে বিষমুক্ত ভার্মিকম্পোষ্ট সার, যা রাসায়নিক সারের চেয়ে কয়েকগুণ ক্ষমতাসম্পন্ন।

এখন চিন্ময়ের বাণিজ্যিক খামার থেকে খুদ্র চাষিসহ পরিবহনযোগে শত শত মন কেঁচো সার কিনে নেন ফসল উৎপাদনকারীরা। খামার থেকে সার নিতে আসা বিধান চন্দ্র জানান, তার ছাদ বাগানসহ বেশ কয়েকটি ছোট বড় ফলজ বাগান রয়েছে। এ ছাড়া স্বল্প পরিসরে সবজি উৎপাদনও করেন তিনি। আগে রাসায়নিক সার ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করলেও একন প্রাকৃতিক কেঁচো সার ব্যবহার করছেন। এতে বিষমুক্ত ফসল ফলাতে পারছেন। আর মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এদিকে চিন্ময়ের খামারে শ্রমের বিনিময়ে অর্থ নেওয়ার পাশাপাশি নিচ্ছেন প্রশিক্ষণ। শ্রমজীবীরা বলছেন, এই সার উৎপাদনে খরচ কম আর লোকশানের ঝুঁকি না থাকায় তারাও ঝুঁকছেন শেড তৈরির দিকে।

খামারের শ্রমিক শ্যামল ও সমীর জানান, তারা কাজের পাশাপাশি ধীরে ধীরে ছোট উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে শেড তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এতে কোনো লোকসানের ঝুঁকি না থাকায় খুব শিগগিরই সার উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করবেন দুজন।

চিন্ময় বলেন, সার উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে চাই আমি। রাসায়নিক সার ব্যবহার থেকে কৃষকদের সরিয়ে নেওয়ায় আমার লক্ষ্য। আমি চাচ্ছি কম বেশি সবাই যেন এই সার উৎপাদন করে। অন্তত নিজ ফসলের ক্ষেতের জন্য হলেও এখনই উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ। আপাতত আমার মাসে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। আমি আমার পরিবারে এখন অনেক ভূমিকা রাখতে পারছি।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন জানান, চিন্ময়কে আমরা প্রথমে এসএসিপির মাধ্যমে প্রদর্শনী দিয়ে শেড দিই। চিন্ময়ের খামার ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। বিশেষ করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রাবন্দরে কৃষিতে তার শতাধিক মণ সার বিক্রি হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তাসনিম অনন্যার অনুসন্ধানে মহাবিশ্বের চাঞ্চল্যকর রহস্য উন্মোচন

২০২৬ বিশ্বকাপে কবে মুখোমুখি হতে পারে আর্জেন্টিনা–ব্রাজিল?

বিশ্বকাপের গ্রুপ অব ডেথে ফ্রান্স

নুরুদ্দিন অপুর হাত ধরে আ.লীগ নেতার বিএনপিতে যোগদান

২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত: দেখে নিন কোন গ্রুপে কোন দল

২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ যারা

রাতে আবার হাসপাতালে গেলেন জুবাইদা রহমান

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ছে, তালিকায় ৩০টির বেশি দেশ

খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে রক্তক্ষরণ

‘বাঁধের মাটি বড় বড় খণ্ড হয়ে ঝুপঝাপ শব্দে ভেঙে পড়ে’

১০

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

১১

দেড় হাজার দৌড়বিদের অংশগ্রহণে হাফ ম্যারাথন

১২

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফ্রি যাত্রীসেবা

১৩

বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

১৪

যুবদল নেতা সুমনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

১৫

দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, একজন গুলিবিদ্ধসহ আহত ১০

১৬

গণতন্ত্র মঞ্চের নতুন সমন্বয়ক সাইফুল হক

১৭

পুরোনো রাজনীতি পরিহার করে নতুন রাজনীতি করতে চাই : মঞ্জু

১৮

খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা দেখার জন্য শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন : স্বপন

১৯

ভুয়া ফটোকার্ড ও অপপ্রচারের অভিযোগে জিডি করলেন ছাত্রদলের আবিদ-মায়েদ

২০
X