

রাজশাহীর তানোরে দুই বছরের শিশু সাজিদের জন্য পুরো গ্রাম শ্বাসরুদ্ধ। সাত ঘণ্টায়ও উদ্ধার হয়নি গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে আটকা যাওয়া সাজিদ।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলার কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামের ধানখড়ের মাঠে খেলতে খেলতেই হঠাৎ ৩০-৩৫ ফুট গভীর একটি বোরিং গর্তে পড়ে যায় সে।
মাত্র ৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের সেই অন্ধকার গর্তে পড়ে যাওয়া ছোট্ট শিশুটির জন্য মুহূর্তেই দিশাহারা হয়ে পড়েন স্থানীয় মানুষজন।
স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগে জমির মালিক কছির উদ্দিন সেচের জন্য সেমি ডিপ নলকূপ বসাতে গিয়ে এই গর্তটি খনন করেছিলেন। কিন্তু পানি না মেলায় কাজটি আর এগোয়নি— ফলস্বরূপ খোলা অবস্থাতেই রয়ে যায় বিপজ্জনক এ গর্তটি। আজ সেই অবহেলাই যেন প্রাণ সংকটে ফেলেছে দুই বছরের নিষ্পাপ সাজিদকে। শিশুটির মা খড় তুলতে মাঠে গিয়েছিলেন। সেই সময় খেলতে থাকা সাজিদ হঠাৎ গর্তে পড়ে যায়। প্রথমে স্থানীয়রা প্রাণপণ চেষ্টা করেও তাকে তুলতে পারেননি। খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসে।
তানোর, রাজশাহী সদর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ— ৩টি স্টেশনের ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। গর্তের ভেতরে পাইপ দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে, যেন সাজিদ বেঁচে থাকার শক্তিটুকু ধরে রাখতে পারে। পাশেই স্কেভেটর দিয়ে খনন চলছে, একমুহূর্ত দেরিও করছেন না উদ্ধারকর্মীরা। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার কাজ চলছিল।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক দিদারুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, স্থানীয়দের প্রাথমিক উদ্ধার চেষ্টায় কিছু মাটি গর্তে পড়ে পরিস্থিতি জটিল হয়ে গেছে। ক্যামেরা নামিয়ে শিশুটির অবস্থার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা চলছে। মানুষের ভিড় আর কোলাহলে শিশুটির সাড়া ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। শিশুটি জীবিত আছে নাকি মারা গেছে তা নিশ্চিত নয়। উদ্ধার কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না।
ঘটনাস্থলে থাকা তানোর থানার ওসি শাহীনুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, শিশুটি অনেক গভীরে পড়ে গেছে। আমরা বিকেল ৪টা থেকে ওই গর্তে অক্সিজেন সরবরাহ করছি। শিশুটি বেঁচে আছে এমন আশা নিয়েই ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। আসলে উদ্ধার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। এখন বাজে রাত ৯টা। শিশুটি উদ্ধারে আরও প্রায় কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে।
মন্তব্য করুন