শীত আসতে আর বাকি নেই বেশিদিন। শীতের আগাম বার্তার জানান দিচ্ছে আবহাওয়া। এরইমধ্যে নওগাঁর মান্দায় কৃষকরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। শীতের শুরুতেই বাজারে বিক্রি করে বেশি টাকা আয়ের আশায় চাষিরা এখন জমিতে শীতকালীন শাকসবজির চারা বপন ও পরিচর্যার কাজ করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ জমিতে নিড়ানি দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ফসলে পরিচর্যা করছেন। এ সমস্ত এলাকায় শিম, লাউ, আলু, মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, ঢেঁড়স, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক, সবজিতে চারদিকে ভরে গেছে।
উপজেলার চককানুর গ্রানের কৃষক সুলতান আহম্মেদ বলেন, আমরা সারা বছর হরেক রকম আগাম সবজি চাষাবাদ করে থাকি। এসব শীতকালীন আগাম সবজি চাষ করে অনেক লাভবান হই। এতে করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার যাবতীয় ব্যয় এবং সংসার চালাতে সক্ষম হই।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় চলতি রবি মৌসুমে এ উপজেলায় শীতকালীন লাল শাকের আবাদ হয়েছে ৬০ হেক্টর জমিতে, পালংশাক ৫০ হেক্টর জমিতে, শিম ৫৫ হেক্টর জমিতে, মুলা ৭৫ হেক্টর জমিতে, টমেটো ১০ হেক্টর জমিতে, বাঁধাকপি ৩৫ হেক্টর জমিতে, ফুলকপি ৯৫ হেক্টর জমিতে, বেগুন ৯৫ হেক্টর জমিতে, গাজর ২৫ হেক্টর জমিতে, শসা ২৫ হেক্টর জমিতে, মিষ্টি কুমড়া ২০ হেক্টর জমিতে, পুঁইশাক ১৫ হেক্টর জমিতে, কলমি ১০ হেক্টর জমিতে ও লাউ ৪০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।
এরই মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে হরেক রকম শীাতের আগাম সবজি উঠতে শুরু করেছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ভ্যান, ইজিবাইক ও ভটভটিতে করে এসব সবজি সরাসরি বিভিন্ন বাজারে আসছে।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে বাজারে শিম প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পালংশাক ৮০ টাকা, লাল শাক ৬০ টাকা, ছোট আকারের ফুলকপি প্রতি পিস ৩৫-৪০ টাকা, বড় আকারের ফুলকপি প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা, বাঁধাকপি আকার ভেদে প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকায়, মুলা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রসাদপুর এলাকার ক্রেতা রওশন হোসেন বলেন, আজকের বাজারে সব কিছুরই দাম বেশি মনে হচ্ছে। মুলার কেজি ৬০ টাকা, সিমের কেজি ১২০ টাকা। যেখানে মুলা ৩০ এবং সিম ৬০ টাকা কেজি হলে আমাদের সাধ্যের মধ্যে হবে। আমরা সীমিত আয়ের মানুষ। ফলে এসব বাজার করতে আমাদের পক্ষে কষ্টদায়ক।
এ ব্যাপারে প্রসাদপুর বাজারের বিক্রেতা সাইদুর রহমান বলেন, বাজারে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতের আগাম সবজির পৌঁছায়নি। এ কারণে দাম একটু বেশি। তবে সব সবজি বাজারে আসতে শুরু করলে দামটা স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. শায়লা শারমিন বলেন, এ উপজেলায় শীতের আগাম সবজি চাষ শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬৫০ হেক্টর জমিতে আগাম সবজির চাষ শুরু হয়ে গেছে। আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি।
মন্তব্য করুন