গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকার একটি পার্কের ভেতর কলা গাছে দেখা মিলেছে প্রায় ৭ ফুট লম্বা কলার ছড়ি। আর এই ছড়িতে ধরেছে কয়েক হাজার কলা। আশ্চর্যজনক এই কলার গাছ ও ছড়ি দেখতে অনেকে ভিড় করছেন। সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন লতিফপুর এলাকায় অবস্থিত মনপুরা পার্কে এমন কলাগাছের সন্ধান পাওয়া গেছে।
পার্ক কর্তৃপক্ষ, দর্শনার্থী ও স্থানীয়রা জানায়, গত দুই বছর আগে মনপুরা পার্কে ঘুরতে এসে এক দর্শনার্থী একটি কলার চারা উপহার হিসেবে দিয়ে যান। পরে কলার চারাটি পার্কের ভেতরেই রোপণ করে পার্ক কর্তৃপক্ষ। ধীরে ধীরে ওই চারাটি বড় হতে থাকে। এক সময় চারা গাছটি বড় হয়ে কলাও ধরে। ওই ছড়িটিও বড় হয়। পরে ওইখান থেকেই নতুন করে একটি কলার চারা জন্ম নেয়। কলা গাছটি বড় হওয়ার পর গত ৬ মাস আগে গাছটিতে কলার ছড়ি বের হয়। ছড়িটিও বড় হতে থাকে। একপর্যায়ে বড় হতে হতে কলার ছড়িটি প্রায় ৭ ফুট লম্বা হয়ে মাটিতে ছুঁয়ে যায়। ছড়িটিতে কয়েক হাজার কলা ধরেছে। ছড়ির উপরের অংশের কিছু কলা খাওয়ার উপযোগী। তবে নিচের কলাগুলো একেবারেই ছোট ও খাওয়ার অনুপযোগী। ওই গাছের কলা খেতে চম্পা কলার মতই স্বাদ। এ ধরনের কলার ছড়ি সচরাচর দেখা যায় না বলে দাবি পার্ক কর্তৃপক্ষ।
পার্কের দর্শনার্থী কামরুল হাসান ও ইউসুফ বলেন, এত বড় কলা ছড়ি আগে কখনোই দেখিনি। একটি ছড়িতে হাজার হাজার কলা ধরেছে। ছড়িটি এত বড় হয়েছে যে মাটিতে ছুঁয়ে গেছে। নিচে জায়গা থাকলে হয়ত কলার ছড়িটি আরও বড় হতো। তবে নিচের কলাগুলো খুবই ছোট।
মনপুরা পার্কের ব্যবস্থাপক জায়েদ হাসান জানান, গত দুই বছর আগে এক দর্শনার্থী পার্কে বেড়াতে এসে একটি কলার চারা উপহার হিসেবে দিয়ে যায়। কলা চারাটি পার্কের ভেতরেই রোপণ করা হয়। কিন্তু চারাটির কোনো যত্ন নেওয়া হয়নি। এমনিতেই বড় হয়। গাছটিতে কলা ও ধরে। ওই প্রথম গাছের কলার ছড়িও বড় হয়, তবে এইটার মতো এত বড় হয়নি। বর্তমানের এই কলাগাছের ছড়িটি বড় হতে থাকে। তখন গাছটির যত্ন নেয়া হয়। কলা ছড়ির ভারে যাতে গাছ ভেঙে না পড়ে তাই দুটি বাঁশের খুঁটি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এটি হাজারিকা কলাগাছ। বিশাল বড় কলার ছড়ি দেখতে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে পার্কে আসছে। কেউ ছবি তুলছে, কেউ ভিডিও করে নিয়ে যাচ্ছে। এ গাছের কলা খেতে কিছুটা টক।
গাজীপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিবুল হাসান জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ওই কলা ছড়িতে দুই হাজারের বেশি কলা রয়েছে। এরকম কলার ছড়ি আগে দেখিনি। উপরের কলাগুলো খাওয়ার উপযোগী থাকলেও নিচের কলাগুলো একেবারেই খাওয়ার অনুপোযোগী। নিচেরগুলো পরিপূর্ণ কলা না। তবে অপেক্ষা করতে হবে নিচের কলাগুলো কী হয়, কেমন হয়। আমরা কৃষি গবেষণাকে বিষয়টি জানাব। তারা গবেষণ করে সেখান থেকে নতুন জাত উদ্ভাবন করতে পারে কি না।
মন্তব্য করুন