বরিশাল-৪ আসনের স্বতস্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ নাথের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেহেন্দিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে। ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মনির চাপরাশি এ তথ্য জানান। এ ঘটনায় দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা হারানো শাম্মী আহমেদের অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন পঙ্কজের অনুসারীরা।
বরিশাল-৪ আসনে এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন দলটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ। পরে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। অন্যদিকে মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন পঙ্কজ নাথ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুরের বিষয়ে মনির চাপরাশি বলেন, ১০-১২ জন অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। এ ছাড়া পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার পাশাপাশি বেড়াও ভেঙে ফেলেছে তারা। হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় চারজনকে চিনতে পেরেছি। তারা শাম্মী আহমেদের অনুসারী। ঘটনাটি পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি মো. ইয়াসিনুল হক বলেন, মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি, তবে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। উভয় পক্ষয়ই বিষয়টি নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করছে। ঘটনাটি মাঝরাতে হওয়ার কারণে এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা যায়নি।
শাম্মীর অনুসারী মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুলু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিজেরা নির্বাচনী কার্যালয় ভেঙে শাম্মী আপার অনুসারীদের দোষারোপ করছে।
এ বিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি শুনোছি। লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে অনুসন্ধান চলছে।
নির্বাচনের শুরু থেকেই শাম্মী-পঙ্কজের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ চলছিল। পঙ্কজের অভিযোগ ছিল, শাম্মী আহমেদ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হলেও তা গোপন করেছেন। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা যাচাই-বাছাইয়ে দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে শাম্মীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে। বিষয়টি নিয়ে শাম্মী আহমেদ নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। পাশাপাশি তথ্য গোপনের অভিযোগে পঙ্কজ নাথের প্রার্থিতা বাতিলেরও আবেদন করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে পঙ্কজের প্রার্থিতা টিকে গেলেও দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে শাম্মীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। এরপর শাম্মী হাইকোর্টে যান। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গিয়েও প্রার্থিতা ফিরে পাননি শাম্মী। বরিশাল-৪ আসনে ১৯৯৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। ১৮ বছর পর আওয়ামী লীগ পঙ্কজ নাথকে প্রার্থী করে আসনটি পুনরুদ্ধার করে। এর আগে ১৯৯১ সালে এ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি চারদলীয় জোটের জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীকে হারিয়ে জয় পেয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান। মহিউদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা শাম্মী আহম্মেদের বাবা।
মন্তব্য করুন