যশোরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন জাহিদ হাসান। জালিয়াতি করার জন্য তার কানে ছিল একটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস। চাপাচাপি করতে গিয়ে সেই ডিভাইস চলে যায় কানের গভীরে। পরে সেটি চিকিৎসকের সহায়তায় সাঁড়াশি দিয়ে টেনে বের করা হয়।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) যশোর সরকারি এমএম কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। জাহিদ হাসান যশোর সদর উপজেলার নওদাগ্রামের আবু দাউদ হোসেনের ছেলে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এম এম কলেজের নতুন বিজ্ঞান ভবনের ১০৫ নম্বর কক্ষে তিনি পরীক্ষায় বসেছিলেন। দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি উত্তর পত্রে কিছুই লিখছিলেন না। ফলে উত্তরপত্র দেখে সন্দেহ হয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের। এর মধ্যেই একটি শব্দ হওয়ায় জাহিদের জালিয়াতি নজরে আসে।
প্রাথমিক স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, জাহিদের কানের মধ্যেই ডিভাইসটি ছিল। আরেকটি ছিল পকেটে। আর বাইরে থাকা একটি চক্র কথা দিয়েছিল- ওই ডিভাইসের মাধ্যমে একজন প্রশ্নের উত্তরগুলো জানিয়ে দেবে জাহিদকে। তবে উত্তর আসতে বিলম্ব হওয়ায়, জাহিদ অপেক্ষা করছিল। এর মধ্যে ডিভাইসে সমস্যা ভেবে চাপাচাপি করতে গিয়ে পুরোটা কানের ভেতরে ঢুকে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
পরে পুলিশ জাহিদকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর চিকিৎসকরা সাঁড়াশি দিয়ে কানের ভেতর থেকে ডিভাইসটি বের করে আনেন। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছিল।
যশোর সরকারি এসএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মরজিনা আক্তার বলেন, কেন্দ্রের দায়িত্বরতদের হাতে ধরা পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে ওই পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আটক পরীক্ষার্থীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে কানের ভেতর থেকে ডিভাইসটি বের করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনার সাথে অন্য কোনো চক্র জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া ওই কেন্দ্র সচিব মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান ওসি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জেল হোসেন খান বলেন, তাৎক্ষণিক ওই পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসাথে বিষয়টি তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এর নেপথ্যে অন্য কোনো ঘটনা রয়েছে কিনা সে বিষয়টিও তারা খতিয়ে দেখছেন। এছাড়া মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন