

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জারি করা এ নীতিমালায় আগামী শিক্ষাবর্ষেও ভর্তিতে লটারি পদ্ধতি বহাল রাখা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, সারা দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন গ্রহণ, ফি পরিশোধ, ডিজিটাল লটারি প্রক্রিয়া ও ফলাফল প্রকাশ—সবকিছুই কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
প্রতি শ্রেণিতে সর্বোচ্চ ৫৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানের জন্য ০.৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ অনুযায়ী ৬ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীর বয়স: প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর বয়স ৬+ ধরে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবে কাঙিক্ষত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত হবে। (যেমন: ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকালে কোন শিক্ষার্থীর বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর হবে অর্থাৎ সর্বনিম্ন জন্মতারিখ হবে ১ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৭ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ জন্মতারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত)।
পরবর্তী শ্রেণিগুলোয় বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে।
শিক্ষাবর্ষ হবে ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতি শ্রেণি শাখায় শিক্ষার্থী সংখ্যা হবে ৫৫ জন।
ভর্তির তারিখ ও ফি নির্ধারণ
৫.১ কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের তারিখ ও সময় এবং আবেদন ফি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে।
৫.২ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া-সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবে।
৬. ভর্তির জন্য আবেদন এবং শিক্ষার্থী নির্বাচনপদ্ধতি
৬.১ 'ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি' কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে নির্ধারিত তারিখ ও সময় অনুযায়ী নির্ধারিত সফটওয়্যারে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
৬.২ 'ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি' কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে সারা দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ভর্তি-সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করবে।
৬.৩ সারা দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ভর্তির আবেদন ও আবেদন ফি গ্রহণ এবং ডিজিটাল লটারির ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকাশ কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।
৬.৪ ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের পূর্বে নির্বাচিত কারিগরি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সফটওয়ারের যথার্থতা সরকার কর্তৃক স্বীকৃত অন্য একটি কারিগরি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক যাচাই করতে হবে এবং এ-সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র সংরক্ষণ করতে হবে। লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীর তালিকা প্রস্তুত করার পাশাপাশি শূন্য আসনের সমান সংখ্যক অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীর তালিকাও প্রস্তুত করতে হবে।
৬.৫ ভর্তি কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত তারিখে নির্বাচিত শিক্ষার্থী ভর্তি না হলে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে তালিকার ক্রমানুসারে ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রকাশিত অপেক্ষমাণ তালিকার ক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।
৬.৬ শিক্ষাবর্ষের কোনো সময়ে আসন শূন্য হলে প্রকাশিত অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ক্রমানুসারে ভর্তি করে আসন পূরণ করতে হবে। এন্ট্রি/প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত যেকোনো শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের পরীক্ষা গ্রহণ করা যাবে না।
৬.৭ ‘ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি' ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করবে। ওই তালিকা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি কমিটি কাগজপত্র যাচাই করে নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ভর্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৬.৮ ঢাকা মহানগরী ছাড়া সারা দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এন্ট্রি/প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী নির্বাচনের জন্য ডিজিটাল লটারির বিষয়ে 'ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি' কেন্দ্রীয়ভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করবে।
৬.৯ 'ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি' ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি জাতীয় পত্রিকা/ওয়েবসাইট ইত্যাদিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়া জেলা/উপজেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট ভর্তি।
কমিটি/সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রচারের ব্যবস্থা করতে পারবে।
৬.১০ যৌক্তিক কোনো কারণে সরকারি কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় অনলাইন ভর্তি কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত হতে না পারলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি গ্রহণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল লটারি প্রক্রিয়ায় ভর্তি কার্যক্রম সম্পাদন করবে। তবে সে ক্ষেত্রে ডিজিটাল লটারির দিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
৭. আবেদনে বিদ্যালয় পছন্দক্রম: সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৫টি বিদ্যালয়ে ভর্তির পছন্দক্রম দিতে পারবে। তবে ডাবল শিফট স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ করলে ২টি পছন্দক্রম (২টি বিদ্যালয় পছন্দক্রম) সম্পাদন হয়েছে বলে গণ্য হবে। বিদ্যমান অনলাইন ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যেকোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে নিশ্চিত (নিশ্চয়ন) করতে হবে। বিষয়টি সফটওয়ারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
৮. শূন্য আসন নিরূপণ: প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ বিভিন্ন শ্রেণির শূন্য আসনের চূড়ান্ত সংখ্যা নির্ধারণ করবেন। 'ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি' কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির নির্ধারিত তারিখ ও সময় অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্ধারিত সফটওয়্যারে তার প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিভিত্তিক শূন্য আসনের সংখ্যাসহ অন্যান্য তথ্য আপলোড করবেন।
৮.১ ভর্তি কার্যক্রম শেষ হওয়ার সাত দিনের মধ্যে আসন পূরণ-সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য (ক্যাটেগরি অনুসারে) 'ঢাকা মহানগরী কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি' এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠাতে হবে।
৯. ভর্তির আবেদন ও ফি: অনলাইনে ভর্তি আবেদন ফি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে নির্ধারণ করতে হবে। সেশন চার্জসহ ভর্তির আবেদন ফি নির্ধারণ বিষয়ে সুপারিশ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ একটি উপ-কমিটি গঠন করবে।
১০. ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠান ও ফলাফল তৈরি
১০.১ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের কারিগরি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান আবেদন ও ডিজিটাল লটারির ফলাফল প্রকাশের যাবতীয় তথ্য 'ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি'র নিকট প্রদান করবে।
১০.২ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে 'ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি'র সদস্যদের উপস্থিতিতে লটারির কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
১০.৩ সারা দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এন্ট্রি/প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে প্রাপ্ত আবেদন ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ নীতিমালা অনুযায়ী শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত তালিকার সমসংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকা নির্বাচন করতে হবে। পরে প্রয়োজন হলে লটারির মাধ্যমে দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকা প্রস্তুত করতে হবে।
১০.৪ সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান 'ঢাকা মহানগরী ভর্তি কমিটি'র নিকট থেকে প্রাপ্ত নির্বাচিতদের তালিকা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে এবং নোটিশ বোর্ডেও টাঙিয়ে দেবে। কোনো অবস্থাতেই নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকার বাইরে কোনো শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা যাবে না।
১১. আসন সংরক্ষণ
১১.১ ঢাকা মহানগরীর সরকারি বিদ্যালয় সংলগ্ন ক্যাচমেন্ট এরিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা মহানগরীর সব সরকারি বিদ্যালয়ের আওতাধীন ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করবে।
১১.২ মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার জন্য ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা আসন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপি আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে এবং ভর্তির সময় মূল কপি প্রদর্শন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা সনদ যথাযথভাবে যাচাই করে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে সাধারণ কোটা থেকে ওই আসনে ভর্তি করতে হবে। কোনো অবস্থায় আসন শূন্য রাখা যাবে না।
১১.৩ ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির মোট আসনের ১০ শতাংশ আসন স্বতন্ত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
১১.৪ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ন্যূনতম যোগ্যতা থাকার শর্তে ভর্তির ক্ষেত্রে ২ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। তবে ভর্তির সময় এতৎসংক্রান্ত প্রমাণস্বরূপ যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন দাখিল করতে হবে। ওই আসনে কোনো শিক্ষার্থী পাওয়া না গেলে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শূন্য আসন পূরণ করতে হবে।
১১.৫ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তান ভর্তির জন্য ০.৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে এবং তফসিল-ক এ বর্ণিত অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থায় কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ০.৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। তবে মন্ত্রণালয়ের জন্য সংরক্ষিত ০.৫ শতাংশ আসনে ভর্তিযোগ্য সন্তান না পাওয়া গেলে তা তফসিল-ক এ বর্ণিত অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থায় কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তান কোটা থেকে পূর্ণ করা যাবে এবং একইভাবে, তফসিল-ক এ বর্ণিত অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থায় কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানের জন্য সংরক্ষিত ০.৫ শতাংশ আসনে যোগ্য সন্তান না পাওয়া গেলে তা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর কর্মকর্তা/কর্মচারীর যোগ্য সন্তান কোটা থেকে পূর্ণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীর সন্তান ভর্তির আবেদনের সময় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে হবে। লটারির সময় উক্ত আসনের জন্য পৃথক ড্যাশ বোর্ডের আবেদনগুলো মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সরকারি মাধ্যমিক-১ শাখার কর্মকর্তা কর্তৃক যাচাইপূর্বক লটারি করতে হবে।
১১.৬ কোনো প্রতিষ্ঠানে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর যমজ ভাই/বোন যদি পূর্ব থেকে অধ্যয়নরত থাকে অথবা যেসব যমজ ভাই/বোন নতুন আবেদন করবে, তাদের জন্য ২ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। তবে এ সুবিধা কোন দম্পতির মোট ৩ সন্তান পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানে যমজ ভাই/বোন এর আবেদন পাওয়া না গেলে ওই ২ শতাংশ আসন সহোদর/সহোদরার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
১১.৭ কোনো প্রতিষ্ঠানে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সহোদর/সহোদরা যদি পূর্ব থেকে অধ্যয়নরত থাকে অথবা যেসব সহোদর/সহোদরা নতুন আবেদন করবে তাদের জন্য ৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। তবে এ সুবিধা কোনো দম্পতির মোট ৩ সন্তান পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানে সহোদর/সহোদরার আবেদন পাওয়া না গেলে ওই ৩ শতাংশ আসন যমজ ভাই/বোনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
১১.৮ সহোদর/সহোদরার জন্য নির্ধারিত কোনো আসন শূন্য থাকলে যমজ সন্তানদের ভর্তির মাধ্যমে আসন পূরণ করতে হবে। অনুরূপভাবে যমজ ভাই/বোনের জন্য নির্ধারিত কোনো আসন শূন্য থাকলে সহোদর/সহোদরা দ্বারা পূরণ করা যাবে। কোনো অবস্থায় আসন শূন্য রাখা যাবে না। কোটাভুক্ত আসন পূরণ না হলে সাধারণ কোটা থেকে ওই আসনে ভর্তি করতে হবে।
১২. শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন রেজিস্ট্রেশনধারী শিক্ষার্থী লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধান প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা বোর্ডকে অবহিত করবেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ড নতুন ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত তথ্যাদি হালনাগাদ করবে।
১৩. সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীরা এক কর্মস্থল থেকে অন্য কর্মস্থলে বদলি হলে তাদের সন্তানদের জন্য সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত শর্ত সাপেক্ষে আবেদন করা যাবে―
(ক) ভর্তির জন্য প্রমাণকসহ ভর্তি কমিটির সভাপতি বরাবর বদলির আদেশের তারিখ থেকে ১০ মাসের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
(খ) সব মহানগরী/সিটি কর্পোরেশন/বিভাগীয় শহরের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থল ১০ কিলোমিটারের (google map অনুযায়ী) বেশি হলে তার সন্তান কর্মস্থলের নিকটতম সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে।
(গ) জেলা/উপজেলা/থানার ক্ষেত্রে বদলিকৃত কর্মস্থলের নিকটতম সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তার সন্তান ভর্তির সুযোগ পাবে।
(ঘ) বদলিজনিত কারণে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীর সন্তানদের ভর্তির জন্য প্রতি শ্রেণি শাখায় মোট আসনের ৫ শতাংশ অতিরিক্ত আসন সংরক্ষিত থাকবে।
(চ) সরকারি বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী অগ্রাধিকার পাবে।
(ছ) সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীরা তার পূর্বতন কর্মস্থলে পুনরায় বদলি হয়ে এলে তাদের সন্তানদের পূর্বতন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুনরায় ভর্তির সুযোগ পাবে।
১৪. সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটির আওতাধীন কোন শিক্ষার্থীকে একই শ্রেণিতে উভয় বিদ্যালয়ের সম্মতির ভিত্তিতে পারস্পরিক বদলিভিত্তিক ভর্তি করা যাবে। এ জন্য শিক্ষার্থী/অভিভাবক-কে সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটির সভাপতির নিকট আবেদন করতে হবে এবং এ নীতিমালার আলোকে উক্ত কমিটি ভর্তির বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১৫. সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক/কর্মচারীদের ভর্তির উপযুক্ত সন্তান সংখ্যার সমসংখ্যক অতিরিক্ত আসন স্ব স্ব বিদ্যালয়ে সংরক্ষিত থাকবে। তবে শিক্ষক/কর্মচারী মাধ্যমিক বালক বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলে এবং তার ভর্তি উপযুক্ত সন্তান বালিকা হলে নিকটতম সরকারি বালিকা/সহশিক্ষা বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে।
শিক্ষক/কর্মচারী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকলে এবং তার ভর্তি উপযুক্ত সন্তান বালক হলে নিকটতম সরকারি বালক/সহশিক্ষা বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে। একইভাবে শিক্ষক/কর্মচারী যদি সহশিক্ষা বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকে তাহলে তার ভর্তি উপযুক্ত সন্তানের ভর্তির জন্য কর্মরত বিদ্যালয়েই অতিরিক্ত আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে। তবে কর্মরত বিদ্যালয়ে ভর্তির উপযুক্ত কাঙ্ক্ষিত শ্রেণি না থাকলে নিকটতম বালক/বালিকা/সহশিক্ষা বিদ্যালয়ে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) অতিরিক্ত আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভর্তি কমিটিকে অবহিত করবেন।
১৬. কোনো সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তার সন্তান যে এলাকায় স্থায়ী হবে সে এলাকার সরকারি স্কুলে ভর্তির সুযোগ পাবে। সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটি এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১৭. কোনো সরকারি বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী যার পিতা/মাতা নেই, এমন শিক্ষার্থী কোনো কারণে বাসস্থান পরিবর্তন করলে পরিবর্তিত এলাকার সরকারি স্কুলে সে সমশ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে। সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১৮. সরকারি স্কুলে অধ্যয়নরত কোনো শিক্ষার্থীর পিতা/মাতার মৃত্যুজনিত কারণে বর্তমান আবাসস্থল স্থানান্তর করলে স্থানান্তরিত এলাকার সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমশ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে। সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১৯. ভর্তি প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহ: ভর্তি ফি বাবদ প্রাপ্ত মোট টাকা হতে কারিগরি সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠানের চুক্তিমূল্য রেখে অবশিষ্ট টাকার বিভাজন প্রস্তুতের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক উপকমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
২০. এ নীতিমালা প্রয়োগকালীন কোনো অস্পষ্টতা/অসুবিধা পরিলক্ষিত হলে তা দূরীকরণে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক নিষ্পত্তি করতে হবে।
মন্তব্য করুন