কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৫ এএম
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:০২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

‘সর্বোপরি, আল্লাহ সহায়’

বাগছাস সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের। ছবি : সংগৃহীত
বাগছাস সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।

এদিকে ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে সকাল ৬টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‌‘বিবেচনা’ করার অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস) সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের।

স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, আল্লাহ জানে, ‘আমার নিয়ত সৎ ছিল, সৎ আছে এবং সৎ থাকবে। আমি পরিশ্রম করেছি, নিজের থেকে সর্বোচ্চটুকু দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছি। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার প্রতিটা ভাই-বোন জানে। তারা বিষয়টা বিবেচনায় নিবেন। সর্বোপরি, আল্লাহ সহায়...।’

নির্বাচনে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন, যা ডাকসুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে নারী ৬২ জন। অন্যদিকে, ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট ১ হাজার ৩৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ও ছাত্র অধিকার পরিষদ আলাদা প্যানেল দিয়েছে। বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলো নির্বাচন করছে দুটি প্যানেলে। এ ছাড়া স্বতন্ত্রদের পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে প্যানেল রয়েছে ১০টির মতো।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ৮৭৩ এবং ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন। আটটি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে প্রত্যেক ভোটারের ডাকসু ও হল সংসদের মোট ৪১টি পদে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ব্যালট যুদ্ধ বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা আট ঘণ্টা চলবে। ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে গণনা শুরুর পর ফল প্রকাশ করবে। একজন ভোটার গড়ে ১০ মিনিট সময় নিলেও কোনো রকম বিঘ্ন ছাড়াই সব কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ে ভোট দিতে সক্ষম হবেন বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন।

ভোট গণনা হবে অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) মেশিনে। প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে এলইডি স্ক্রিনে ফল গণনা প্রদর্শিত হবে। সবশেষে সিনেট ভবন মিলনায়তনে সব কেন্দ্রের মোট ফল ঘোষিত হবে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ৮টি প্রবেশপথে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি থাকছে মোবাইল প্যাট্রল, ডগ স্কোয়াড, বিশেষায়িত টিম, বোম এক্সপোজাল ইউনিট, সোয়াত টিম, ডিবি (সাদা পোশাকে), সিসিটিভি মনিটরিং সেল এবং স্ট্রাইকিং রিজার্ভ ফোর্স।

আলোচনায় যারা: এবারের নির্বাচনে ১০টি প্যানেল ও বহু স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও মূলত তিনটি প্যানেল নিয়ে হচ্ছে বেশি আলোচনা। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির এবং বাগছাস সমর্থিত প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন বলে বিভিন্ন জরিপ ও শিক্ষার্থীদের আলোচনায় উঠে এসেছে। এর বাইরে উমামা ফাতেমা ও বামজোট সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরাও আলোচনায় রয়েছেন। এর বাইরে স্বতন্ত্র কয়েকজন প্রার্থীও আলোচনায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে ভিপি পদে শামীম হোসেন, জিএস পদে আরাফাত চৌধুরী এবং এজিএস পদে তাহমীদ আল মুদাসসীর চৌধুরীর নাম বেশি শোনা যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ভোট দেওয়ার সঠিক নিয়ম

ভোটার তার সুবিধাজনক সময়ে নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রে যাবেন। ভোটকেন্দ্রে থাকা পোলিং কর্মকর্তাকে ভোটার তার পরিচয় নিশ্চিত করবেন।

ভোটার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী হলে তার লাইব্রেরি কার্ড অথবা পে-ইন স্লিপ দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন। অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা হল আইডি কার্ড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড অথবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি কার্ড দেখিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করবেন।

পরিচয় নিশ্চিতের পর ভোটারের আঙুলে অমোচনীয় কালির দাগ দেবেন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা। ভোটার তালিকায় নিজের নামের পাশে সই করবেন ভোটার। এরপর পোলিং কর্মকর্তাকে ভোটার নম্বর জানাতে হবে।

ব্যালট নিয়ে ভোটার প্রবেশ করবেন গোপন ভোটকক্ষে। মোবাইল ফোন বা কোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে ভোটকক্ষে প্রবেশ করা যাবে না।

ভোটকক্ষে গিয়ে ব্যালট পেপার থেকে পছন্দের প্রার্থীর নাম ও ব্যালট নম্বর খুঁজে বের করবেন ভোটার। এরপর পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশের ঘরে স্পষ্টভাবে ‘ক্রস চিহ্ন’ দেবেন ভোটার।

খেয়াল রাখতে হবে, ক্রস চিহ্ন যেন ঘরের বাইরে না যায়। ঘরের বাইরে গেলে সেই ভোট বাতিল হতে পারে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোটদান শেষে ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপার জমা দেবেন ভোটার।

কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের জন্য দুটি আলাদা ব্যালট বক্স থাকবে। ব্যালট পেপার ‘ভাঁজ’ না করে সেগুলো নির্ধারিত বাক্সে ফেলে ভোটার তার ভোটদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, যেসব শিক্ষার্থীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং ব্রেইল পড়তে পারেন, তাদের জন্য প্রথমবারের মতো ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোটদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে যারা ব্রেইল পড়তে পারেন না, তারা আরেকজনের সহযোগিতা নিয়ে অন্য সবার মতোই ভোট দিতে পারবেন।

ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এস আলমের দুই ছেলেসহ ফেঁসে গেলেন ১০ জন

কালবেলার বরিশাল ব্যুরো প্রধান তুষারের দাফন সম্পন্ন

পালাতে যাচ্ছেন অলি, ভারত সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা

নেপালের মন্ত্রীদের হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নিচ্ছে সেনাবাহিনী

এআইইউবি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের উদ্বোধন

মৃত্যুর আগে বন্ধুকে নিয়ে যে স্মৃতিচারণ করেছিলেন মান্না

ফল না দেওয়ায় রাবি আরবি বিভাগে শিক্ষার্থীদের ‘শাটডাউন’ ঘোষণা

এক ঘণ্টা আগে ভোট বর্জন করলেন ভিপি প্রার্থী

ডাকসুর ভোটগ্রহণ শেষ

স্পেনের ভিসার নামে সৌদির মরুভূমিতে ফেলে রাখার অভিযোগ

১০

নেপালে আটকে পড়া বাংলাদেশ দল নিয়ে যা জানাল বাফুফে

১১

এখনো নেপাল সরকারের চূড়ান্ত পতন হয়নি!

১২

ডাকসু নির্বাচনে ভোট কাস্ট ৮০ শতাংশ 

১৩

অনিয়মের অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : উপাচার্য

১৪

নুরাল পাগলার মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশদাতা গ্রেপ্তার

১৫

একসঙ্গে আ.লীগের দুই নেতার পদত্যাগ

১৬

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কোথায় পালাচ্ছেন?

১৭

বিনা মজুরিতে নারীর গৃহস্থালি কাজের মূল্য বছরে ৫ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা

১৮

হারানো এনআইডি নিয়ে বড় সুখবর

১৯

দ.আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে চট্টগ্রামের যুবক নিহত

২০
X