বাংলা ছায়াছবির সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন সুচিত্রা সেন। অন্য কারও সাথে সূচিত্রা সেনের কোনো তুলনা হয় না। বাংলাদেশের পাবনায় জন্ম নেওয়া এই অভিনেত্রীর চোখের প্রেমে পড়েছিলেন তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেতা দেব আনন্দ। ‘বোম্বাই কা বাবু’ ছবির শুটিংয়ের সময়ই দেব আনন্দ সূচিত্রার চোখের প্রেমে পড়েন।
সুচিত্রা সেন একজন বহুমুখী অভিনেত্রী হিসেবেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। তার পেশাদারিত্ব এবং বিভিন্ন চরিত্রের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা ছিল ঈর্ষণীয়। আর এ কারণেই প্রাথমিকভাবে ‘বোম্বাই কা বাবু’ ছবিতে মধুবালার স্থলাভিষিক্ত হয়ে দেব আনন্দের মতো সহঅভিনেতাদের কাছ থেকে তিনি প্রশংসা অর্জন করেছিলেন। ভাষার প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও আবেগপূর্ণ দৃশ্যে তিনি তার অভিনয় দক্ষতা দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। সে সময় তার সময়ানুবর্তিতা এবং সেটে ফোকাস প্রশংসনীয় ছিল, যা একজন শিল্পীর ব্যক্তিত্বকে উত্তরাধিকার হিসেবে আরও দৃঢ় করেছে।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। সহজাত প্রতিভা এবং শৈল্পিক অন্তর্দৃষ্টির এক অসাধারণ মিশ্রণ তার মধ্যে উপস্থিত ছিল। তার অন-স্ক্রিন উপস্থিতি ছিল একটি মন্ত্রমুগ্ধকর মিশ্রণ। তিনি হাসির মাধ্যমে দর্শকদের তাৎক্ষণিকভাবে মোহিত করতে পারতেন।
হিন্দি শব্দচয়নের সময় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। তবে, তিনি ভাষাগত সমস্যাগুলোকে খুব সহজেই আয়ত্ত করে নিয়েছিলেন। চিত্রগ্রাহক যখন তার মুখের ঘনিষ্ঠ ক্লোজ-আপ সট নিচ্ছিলেন তখনই সূচিত্রা সেনের পেশাদারিত্ব আরও হাইলাইট হয়েছিল। ক্যামেরার সামনে তিনি কোনো লাজুক ভাব প্রকাশ করেননি। তার এক হাসিই পুরো ফ্রেম আলোকিত করতে যথেষ্ট ছিল।
অভিনয়ের সময় তার শরীরের ভাষা, তার অভিব্যক্তি এক কথায় অসাধারণ ছিল। ‘দেখনে মে ভোলা হ্যায়’ গানে তার ডেডিকেশন ছিল অতুলনীয়। ‘দিওয়ানা মাস্তানা’ গানের সিকোয়েন্সের সময় তার লিপ-সিঙ্কিং ছিল অসাধারণ।
সর্বোপরি, সূচিত্রা সেনের পেশাদারিত্ব ছিল নিন্দার বাইরে। তিনি ছিলেন সময়ানুবর্তী, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং সেটে প্রত্যেকের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। দেব আনন্দ স্বীকার করেছেন যে, তারা একটি জনপ্রিয় অন-স্ক্রিন জুটি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন।
মন্তব্য করুন