মার্কিন সংগীত ও টেলিভিশনের জনপ্রিয় তারকা ববি শারম্যান আর নেই। ৮১ বছর বয়সে গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সত্তরের দশকের এই আইকনিক শিল্পী। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
তার স্ত্রী ব্রিজিট পুয়েবলন শারম্যান ইনস্টাগ্রামে একটি আবেগঘন পোস্টে এই খবর জানান। সেখানে তিনি লেখেন, “আমার জীবনের রাজপুত্র, আমার স্বামী ববি শারম্যান আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তার হাতে হাত রেখে তিনি আমাদের ভালোবাসার ২৯ বছরের সংসারকে সম্মান জানিয়ে বিদায় নিয়েছেন। এই কঠিন সময়েও তিনি আমার পাশে ছিলেন, যেমনটা তিনি সবসময় ছিলেন। তিনি ছিলেন সাহসী, কোমল ও আলোকিত একজন মানুষ।”
তিন মাস আগেই জানা যায়, ববি শারম্যান স্টেজ-৪ ক্যানসারে আক্রান্ত। তখন থেকেই তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি শুরু হয়। কিডনি থেকে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে পুরো শরীরে। শেষ সময়গুলোতে স্ত্রী তাকে ভক্তদের লেখা চিঠি পড়ে শোনাতেন। ব্রিজিট জানান, “বিশ্বজুড়ে ভক্তদের ভালোবাসা তাকে ছুঁয়ে গিয়েছিল। সেই চেনা চোখের ঝিলিক তখনও দেখা যাচ্ছিল। মৃত্যুর কাছাকাছি এসেও তিনি তার হাস্যরস হারাননি।”
গায়ক ও অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি পেলেও ববির জীবনের আরেকটি অনন্য অধ্যায় হলো তার মানবসেবামূলক ভূমিকা। গ্ল্যামার ভুবন ছেড়ে তিনি যুক্ত হন জরুরি স্বাস্থ্যসেবা খাতে। একজন ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান (EMT) এবং লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (LAPD) প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন বহু বছর। বহু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন নিজের হাতে।
ববি শারম্যানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন তার দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সহ-অভিনেতা জন স্টামোস। ইনস্টাগ্রামে তিনি লেখেন, “এক প্রাক্তন টিন আইডল থেকে অনন্তলোকে যাত্রা- চিরশান্তিতে ঘুমাও ববি শারম্যান।”
ববি শারম্যানের তারকা খ্যাতি শুরু হয় ১৯৬৮ সালে ‘হেয়ার কাম দ্যা ব্রাইডস’ টেলিভিশন সিরিজের মাধ্যমে। এরপর সংগীতজগতে প্রবেশ করে একের পর এক হিট গান উপহার দেন তিনি। ‘লিটল উইম্যান’, ‘ইফ আই হ্যাড ইউ’, ‘ইজি কাম ইজি গো’ এবং ‘জুলি, ডু ইউ লাভ মি?’ গানগুলো তখনকার তরুণ-তরুণীদের মুখে মুখে ফিরত। তার তিনটি অ্যালবামই অর্জন করে গোল্ড ডিস্কের স্বীকৃতি।
একজন গায়ক, অভিনেতা এবং জীবনরক্ষাকারী সেবকের অনন্য মিশেলে গড়া ববি শারম্যানের জীবন ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে। তার হাসি, কণ্ঠস্বর ও মানবিকতার স্মৃতি আজও অনুরাগীদের হৃদয়ে জ্বলজ্বল করছে।
মন্তব্য করুন