

শীতের সময় যতই আরামদায়ক মনে হোক, কিডনির জন্য কিন্তু এই মৌসুম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনিতে পাথর বা স্টোন হওয়ার প্রবণতা শীতেই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এর মূল কারণ হলো শরীরের ডিহাইড্রেশন। ঠান্ডা আবহাওয়ায় তেষ্টা কম লাগে, ফলে পানি গ্রহণ স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায়। এর ফলেই মূত্রের মধ্যে থাকা ক্যালশিয়াম, অক্সালেট ও ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্ব বেড়ে গিয়ে ধীরে ধীরে পাথরের আকার ধারণ করে।
এনভায়রনমেন্টাল হেলথ ইনসাইট জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, শীতকালে শরীর স্বাভাবিকভাবেই পানিশূন্যতার দিকে যায়। এর ফলে মূত্র গাঢ় হয়ে ওঠে, যা কিডনিতে পাথর তৈরির আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়, ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কিডনিতে স্টোন হওয়ার হারও ওঠানামা করে।
চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত সোডিয়াম, প্রাণিজ প্রোটিন এবং ডিহাইড্রেশন— এই তিনটি বিষয় কিডনিতে পাথর তৈরির প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। একই কথা বলা হয়েছে ক্লিনিক্যাল জার্নাল অব দ্য আমেরিকান সোসাইটি অব নেফ্রোলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রেও।
তাহলে কিডনি সুরক্ষিত রাখতে কী কী নিয়ম মেনে চলবেন?
১) দিন অন্ততপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি খেতে হবে। তেষ্টা পাওয়ার অপেক্ষা করা যাবে না। জলের পাশাপাশি, ডিটক্স পানীয়, হার্বাল টি কিংবা ইনফিউসড ওয়াটার খেলেও উপকার মিলবে।
২) অতিরিক্ত সোডিয়াম রয়েছে এমন খাবার বা পানীয় খাওয়া চলবে না। কারণ, রক্তে সোডিয়ামের উপস্থিতি কিডনিতে স্টোন হওয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে। প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতা থাকলে তা-ও বাদ দিতে হবে।
৩) কিডনিতে পাথর জমার প্রবণতা রুখতে রোজ সাইট্রাস ফ্রুট বা লেবুজাতীয় ফল খেতে হবে। রক্তে থাকা অতিরিক্ত খনিজ শোষণ করে কিডনি সুরক্ষিত রাখবে ভিটামিন সি। পাশাপাশি মূত্রাশয়ের সংক্রমণও রুখে দিতে পারে।
৪) সামগ্রিকভাবে কিডনি সুস্থ রাখতে হলেও শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা প্রয়োজন। কারণ, স্থূলত্ব বা দেহের অতিরিক্ত ওজন কিডনির জন্য খারাপ। দীর্ঘক্ষণ একভাবে বসে থাকলেও কিন্তু কিডনির ওপর চাপ পড়ে।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
মন্তব্য করুন