প্রজনন স্বাস্থ্যের অগ্রগতি, নারীদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি প্রসঙ্গে সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখায় রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন দৈনিক কালবেলার নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান।
'স্কুলে কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা গুরুত্ব পাচ্ছে না' শীর্ষক প্রতিবেদনের জন্য 'প্রিন্ট' ক্যাটাগরিতে তিনি এ পুরস্কার পেয়েছেন।
বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারে রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ সার্ভিস ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রাম (আরএইচস্টেপ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
মাহমুদুল হাসান ছাড়াও বিভিন্ন মিডিয়ার কর্মরত আরও ৬ সাংবাদিককে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিকরা হলেন- এটিএন বাংলার বিশেষ প্রতিবেদক মো. শরফুল আলম, দৈনিক কালবেলার মাহমুদুল হাসান, ঢাকা পোস্টের তানভীরুল ইসলাম, আমাদের সময়ের মো. আজাদুল ইসলাম (আদনান), ঢাকা মেইলের মাহফুজ উল্লাহ হিমু, দৈনিক যুগান্তরের জাহিদ হাসান, যমুনা টিভির শেখ মহিউদ্দিন মধু।
মাহমুদুল হাসানের প্রতিবেদনে সারা দেশের স্কুলে কিশোরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে উদাসীনতা, অসচেতনতা ও অবহেলার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। স্কুলে কিশোরীদের ঋতুকালীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা না থাকার কারণে স্কুলপড়ুয়া কিশোরীদের বড় একটি অংশ ইউরিন ইনফেকশনসহ নানা জটিলতায় ভুগছে। এসব বিষয়কে গুরুত্ব না দিলে কিশোরীদের বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রজনন গ্রন্থি, টিউব এবং জরায়ুতে ইনফেকশন হলে ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যত্বের আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে তার প্রতিবেদনে।
কালবেলা প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের জনগোষ্ঠীর এক-পঞ্চমাংশ ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী। জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ এর তথ্যমতে, দেশে ১ কোটি ৭১ লাখ ৬০ হাজার ১৭৫ জনই ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী। ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সীর সংখ্যা ১ কোটি ৬৮ লাখ ৪২ হাজার ৬৮২। বর্তমানে ৬৯১টি সরকারি এবং ১৯ হাজার ৬৬২টি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ১ কোটি ২৮ হাজার ৫০৯ শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে ৫৪ লাখ ৮১ হাজার ৭৬২ কিশোরী। অথচ কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যজ্ঞান আদান-প্রদান, সেবা চাওয়ার কার্যক্রম তুলনামূলক কম। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত সর্বশেষ ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভেতে বলা হয়েছে, প্রতি ১১৫ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে স্কুলে টয়লেট আছে একটি। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ বন্ধ থাকে। ৪২ শতাংশে নেই পর্যাপ্ত পানি। সাবান কিংবা হ্যান্ডওয়াশ নেই ৬৮ শতাংশ টয়লেটে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, ৩০ শতাংশ কিশোরী ঋতুস্রাবের সময় স্কুলে অনুপস্থিত থাকে। একজন কিশোরী মাসে গড়ে অনুপস্থিত থাকে ২ দশমিক ৫ দিন। বেশিরভাগ স্কুলে মেয়েদের জন্য পৃথক এবং ব্যবহারের উপযোগী টয়লেট নেই বললেই চলে। এ কারণে অনুপস্থিতির হার কমানো সম্ভব হচ্ছে না।
মন্তব্য করুন