জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ও পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষায় ও শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ’র (বিআরটিএ) আওতাধীন সব অফিস ধূমপানমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন বিআরটিএর চেয়ারম্যান মো. ইয়াসিন (গ্রেড-১)। সেই সঙ্গে অফিসগুলোতে ধূমপানবিরোধী ও সচেতনতামূলক সাইনেজ লাগাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান তিনি।
পাশাপাশি, ঢাকা আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরামের সদস্য ও বিআরটিএ যৌথভাবে বাসস্টান্ড, বিআরটিএ সার্কেল অফিস ইত্যাদি জায়গায় অ্যাওয়ার্নেস প্রোগ্রাম চালুর মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করা যেতে পারে।
বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস-২০২৫ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিআরটিএর সভা কক্ষে ঢাকা আহছানিয়া মিশন ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-এর যৌথ আয়োজনে ‘ধূমপানমুক্ত পাবলিক পরিবহন নিশ্চিতকরণে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বাসস্টান্ড ও গণপরিবহনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের লঙ্ঘন বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে এবং ড্রাইভার ও হেল্পারদের গাড়ি চালনো বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সহসভাপতি ডা. মোহাম্মদ খলিলউল্লাহ।
এ সময় মূল প্রবন্ধে ঢাকা আহছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী শরিফুল ইসলাম জানান গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ এর তথ্যমতে দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করে। এর মধ্যে ১ কোটি ৯২ লাখ মানুষ ধূমপান করে এবং প্রায় ৪ কোটি অধূমপায়ী পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। এছাড়া দেখা যায়, বিভিন্ন পাবলিক পরিবহনে মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। গ্যাটস ২০১৭ তথ্যমতে পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের এ হার ৪৪ শতাংশ।
বক্তারা জানান, চালক ও চালকের সহকারীদের ধূমপানের ফলে পাবলিক পরিবহনে পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হন যাত্রীরা, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা। ফলে ধূমপান না করেও একই রকম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন তারা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও জানান, বিআরটিএ’র আওতাধীন পাবলিক পরিবহনকে শতভাগ ধূমপানমূক্ত করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে পাবলিক প্লেসে ও পরিবহনে ধূমপানে যে জরিমানা ধার্য করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে যাতে করে যাত্রী-ড্রাইভার বা হেলপার কেউ যেনো পাবলিক পরিবহনে ধূমপান করতে না পারে।
পাশাপাশি, তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের (সংশোধিত-২০১৩) যথাযথ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবহন মালিক ও ব্যবসায়ীদের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কে সচেতন করতে হবে এবং বাসের টিকেটে ধূমপানবিরোধী সচেতনতা মূলক বার্তা লিখতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মুনতাসিরুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, ডিএনসিসি'র এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম, ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার দেলোয়ার হোসেন, বিআরটিএ'র পরিচালক (ইঞ্জি.) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস, বিআরটিএ'র পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) নাজনীন হোসেন এবং ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমানসহ বিআরটি ‘র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মন্তব্য করুন