

মানবপাচার মামলার আসামি বায়রার সাবেক যুগ্মমহাসচিব ফখরুল ইসলামের পক্ষে সাফাই গাইতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্টের একাংশের কয়েকজন নেতা।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত বায়রা সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্টের কয়েকজনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। সংবাদ সম্মেলনে এম এ এইচ সেলিম ওরফে সিলভার সেলিম লিখিত বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়া সরকারের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ও আমাদের মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার অদক্ষতার কারণে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক প্রেরণে অযৌক্তিক কিছু শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয় ‘বাম হাতের খেলার মাধ্যমে’ এসব শর্ত মেনে নিয়েছে।
সিলভার সেলিম আরও বলেন, হয়রানিমূলকভাবে বায়রার নেতা ও আসন্ন বায়রার নির্বাচনে মহাসচিব পদপ্রার্থী ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এসব নোংরামি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।
উল্লেখ্য, বায়রার অধিকাংশ নেতা মনে করেন, মানবপাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় সম্প্রতি মামলা হয়। এই মামলায় তাকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে থানা থেকেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে জনশক্তি রপ্তানি সেক্টরে তোলপাড় চলছে। যে কর্মকর্তা তাকে ছেড়ে দিয়েছেন তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
বায়রা নেতারা আরও বলেন, যখনই মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার জন্য সরকার উদ্যোগ নেয় তখনই ফখরুল ইসলামের উদ্যোগে মিথ্যা আশ্রয় নিয়ে নানাবিধ প্রপাগান্ডা ছড়ানো হয়। মিথ্যা ও অযৌক্তিক বক্তব্য তুলে ধরে শ্রমবাজারটিকে বাধাগ্রস্ত করেন। অথচ তিনি আগেই আরেক বিতর্কিত ব্যবসায়ীকে সঙ্গে নিয়ে সিন্ডিকেট করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বহুল আলোচিত ১০ সিন্ডিকেটের একজন ছিলেন। গতবারেও ১০১ সিন্ডিকেটের মধ্যে ত্রিবেনী ও সেলিব্রেটি ইন্টারন্যাশনাল নামে দুটি লাইসেন্স ছিল ফখরুলের বেনামে।
বায়রার সভাপতি থাকার সময় মালয়েশিয়ায় ১০ জনের সিন্ডিকেট হয়েছে, আপনি মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের কাছ থেকে ২ হাজার রিঙ্গিত করে নিয়েছিলেন, এখন আবার সিন্ডিকেট করার অপচেষ্টা করছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেলিম বলেন, আমার সময় সিন্ডিকেট হয়নি। আমি সবার জন্য শ্রমিক প্রেরণ উন্মুক্ত রেখেছি। আমার চেষ্টায় থাইল্যান্ডে ৫ লাখ শ্রমিক পাঠানোর চেষ্টা করছি। আমরা সব সময় সিন্ডিকেটের বিপক্ষে।
ফকরুল ইসলাম মানবপাচার মামলার আসামি, তিনি অতিরিক্ত টাকা নিয়ে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠিয়েছেন, তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজও দেননি, যার প্রমাণ রয়েছে। এরপরও আপনারা ফখরুলের পক্ষ নিয়েছেন কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এমএএইচ সেলিম বলেন, বাদী যে মামলা করেছে সেখানে বাদীর অফিসের কথা উল্লেখ করা হয়নি। বিবাদির প্রতিষ্ঠান বারিধারায় আর বাদীর প্রতিষ্ঠান শান্তিনগর। দুই অফিসের একটিতেও টাকা লেনদেন না হয়ে টাকা লেনদেন হয়েছে বনানীর আহমেদ ইন্টারন্যাশনালে। যা সাবেক একজন এমপির। সিলভার সেলিমের দাবি, ফখরুল নির্দোষ।
বায়রার সাবেক সহসভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, যারা পাল্টাপাল্টি মামলা করছে তাদের উদ্দেশে বলব, নোংরামি পরিহার করে আসুন সবাই এই সেক্টরকে বাঁচাই।
তিনি বলেন, জনশক্তি রপ্তানি ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আগে পাট মন্ত্রণালয়ে ছিলেন। তিনি জনশক্তি রপ্তানির কী বোঝেন? অদক্ষতা ও অযোগ্যতার কারণে আমাদের সরকার মালয়েশিয়া সরকারের দেওয়া সব শর্ত মেনে নিয়েছে।
একপর্যায়ে জনশক্তি রপ্তানিতে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করতে থাকলে দ্রুত সাংবাদিক সম্মেলন শেষ করেন আয়োজকরা।
মন্তব্য করুন