আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে ব্যবহৃত ‘তলে তলে’ শব্দ যুগলের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘তলে তলে’ শব্দটা বলেছি, কারণ পাবলিক এমন শব্দ খায়। যেমন আমরা বলি খেলা হবে।’ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তলে তলে আপস মানে সম্পর্ক ভালো আছে, ভেতরে ভেতরে সম্পর্ক ভালো। জনসমাবেশে পাবলিক খায় এমন কথা বলতে হয়। খেলা হবে যে বলি এমনি তো আর বলি না। তেমন তলে তলে সমঝোতা হয়ে গেছে বলেছি, মানে সম্পর্ক ভালো আছে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বা ইন্ডিয়া কোনো দলকে জোর করে ক্ষমতায় বসাবে না। সম্পর্কের উন্নয়ন গণতন্ত্রের জন্য ভালো। সব দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো। তারা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়। তারা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে না। কখনই করেও নাই। বিষয়টা এমন যে আমেরিকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খারাপ, এই অপপ্রচার হচ্ছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্পর্ক ভালো থাকলে আমাদের লাভ বেশি। মাঝে ২১ বছর সম্পর্ক ভালো ছিল না। বাণিজ্য অনেক বেড়ে গেছে, তাই সম্পর্ক ভালো না থাকলে আমাদের-ই ক্ষতি। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকা আমাদের জন্য ভালো। তার অর্থ অন্যদের শত্রু হব তা না। রাশিয়া, জাপানের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক ভালো।’
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আমিনবাজারে অনুষ্ঠিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এক সেলফি দিল্লিতে, আরেক সেলফি নিউইয়র্কে। শেখ হাসিনা আর পুতুলের সঙ্গে জো বাইডেনের সেলফিতে দিল্লিতে বাজিমাত, এরপর নিউইয়র্ক। দিল্লি আছে, আমেরিকাও আছে। আর কোনো চিন্তা নেই। দিল্লির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আছে। আমরা দিল্লির সঙ্গে আছি। প্রধানমন্ত্রী সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের মাধ্যমে ভারসাম্য করে ফেলেছেন। আর কোনো চিন্তা নেই। নির্বাচন হবে। যথাসময়ে শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভিসানীতির পরোয়া করি না। আমরা তো সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, তাহলে কীসের ভিসানীতি! নিষেধাজ্ঞা দেবে কেন?’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম বুড়িগঙ্গায় পড়ে গেছে। আগামী মাসে খেলা শুরু হবে। বিএনপি ফাউল করছে। তারা ফাউল করলে হলুদ আর লাল কার্ড খাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি না কি খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। তারা এত দিন কোথায় ছিল? খালেদা জিয়া বছরের পর বছর জেলে ছিলেন, তখন মির্জা ফখরুল তার জন্য একটি আন্দোলনও করতে পারলেন না। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলে! এ চার-পাঁচ বছর তিনি আদালতে হাজিরা পর্যন্ত দেননি। এত দিনে তার মামলার ফয়সালা হয়ে যেত। হয়তো মুক্তিও পেয়ে যেতেন। মামলার ফয়সালা হয়নি বিএনপির জন্য। তারাই মামলা ঝুলিয়ে রেখেছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারেক রহমান মুচলেকা দিয়েছিল আর রাজনীতি করবে না। আরে কাপুরুষ! সাহস থাকলে বাংলার মাটিতে আয়। মায়ের অসুস্থতার জন্য আন্দোলন করবি তো ঢাকার মাঠে এসে আন্দোলনের ডাক দে। সাহস না থাকলে আন্দোলনের কথা কেন বলিস। কাপুরুষের আন্দোলন কোনো দিনও সফল হবে না।’
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম এখন একটু বেশি। সারা দুনিয়ায় দাম একটু বেশি থাকায় আমাদের দেশেও বেড়েছে। শেখ হাসিনা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে। দেশবাসীকে ধৈর্য ধরতে হবে।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ অনেকে।
মন্তব্য করুন